ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫ ১১:২৭ এএম
ছবি : ভোরের আকাশ
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পাইপ কারখানায় ডাকাতির সময় স্থানীয় জনতার হাতে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ছয় ডাকাত আটক হয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) রাত পৌনে ১১টার দিকে বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামের মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের পিপিএস নামক পাইপ এন্ড প্লাস্টিক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
১০ থেকে ১২ জনের ডাকাত দল একটি ট্রাক নিয়ে ওই কারখানায় ডাকাতি করতে যায়। ৫/৭ জন ডাকাত ট্রাক নিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করে। বাকী ৬ ডাকাত কারখানার গেইট টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় ডাকাতরা নিরাপত্তা প্রহরী মকুবল হোসেনকে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে ফেলে রাখে। কারখানার দায়িত্ব প্রাপ্ত ইসলামী ব্যাংক লি: এর কর্মকর্তা মো. আ. ছালাম তিন তলা থেকে ডাকাতির ঘটনা দেখতে পান। তিনি কতৃপক্ষ,পুলিশ ও স্থানীয় লোকদের ডাকাতির কথা জানান।
ডাকাতিকালে স্থানীয়রা এসে পড়লে ডাকাতরা পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহায়তায় ধাওয়া করে ছয় ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা হলো- ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার ভাঘটিয়া গ্রামের ইদ্রীস আলীর ছেলে মো. সোহেল মিয়া(৩২), একই জেলার তারাকান্দা থানার ইসমাইলের ছেলে এমদাদুল হক (৪৫), বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম থানার কামুলা গ্রামের সোহরাবের ছেলে ফারুক (৩২), নওগা জেলার রাণীনগর থানার রাজাপুর গ্রামের মো. আলমের ছেলে আরিফ (৩০), নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার বালুর মাঠ এলাকার সাহা আলমের ছেলে শিমান্ত((২১) ও চাঁদপুর জেলার মতলবপুর গ্রামের গোদা মোল্লার ছেলে ইব্রাহীম (২৩)।
স্থানীয়রা জানান, কারখানাটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। রাত পৌনে ১১টার দিকে কয়েকজন অপরিচিত লোক গেইট টপকে ওই কারখানার ভেতরে ঢুকে। বিষয়টি জেনে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে কারখানার ভেতেরে প্রবেশ করে। তারা দেখতে পান ডাকাতরা নিরাপত্তা প্রহরীকে বেঁধে ডাকাতি শুরু করেছে। স্থানীয়দেরকে দেখে ডাকাতরা কারখানার পেছন দিক দিয়ে দেয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ও স্থানীয়রা ধাওয়া করে ছয় ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাক নিয়ে অপেক্ষমান ডাকাতরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা ডাকাতদের গনধুলাই দেয়। আহত ছয় ডাকাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী মকবুল হোসেন জানান, অপরিচিত কিছুলোক গেইটের উপরদিয়ে ভেতরে ডুকে আমার হাত-পা বেঁধে মারপিট করে। আমাকে ফেলে রেখে তারা ডাকাতি করতে শুরু করে। লোকজন চলে এলে ডাকাতরা সীমানা দেয়াল টপকে বাহিরে চলে যায়।
ইসলামী ব্যাংক লি: এর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আ.ছালাম জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে তিন তলা থেকে দেখতে পান নিরাপত্তা প্রহরীকে কারা যেনো মারছে। পরে বুঝতে পারেন কারখানায় ডাকাত ঢুকেছে। তাৎক্ষনিক স্থনীয়দের,পুলিশসহ কতৃপক্ষকে জানান। দ্রুত সময়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি পুলিশ এসে ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে চিকিৎসাক ডা. আজগর হোসেন সোহাগ জানান, রাত ১২টার দিকে পুলিশ আহত ৬ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুত্বর আহত সোহেল ও এমদাদুলকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, ওই কারখানাটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ডাকাতরা কারখানার যন্ত্রপাতি লুট করতে এসেছিলো। খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের একাধিক টহল দল ঘটনা স্থলে যাই। ডাকাতরা পালিয়ে যাবার সময় পুলিশ ও স্থানীয় জনতার সহায়তায় ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ