ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫ ০২:২৬ পিএম
কারখানার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মৃত্যু, বিচার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার আটতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
এসময় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা বিক্ষুব্ধ শ্রমিকের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। হামলা পাল্টা হামলায় শতাধিক শ্রমিক ও ১১ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা শিল্প পুলিশের একটি এপিসি গাড়ি ভাংচুর করে। পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জের বিষয়টি নিশ্চিত করলে ও গুলির বিষয়টি অস্বীকার করেন।পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের নতুন বাজার এলাকার জিন্নাত নীটওয়্যার লিমিটেড নামক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. জাকির হোসেন (২৫) নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মোক্তার উদ্দিনের ছেলে। তিনি শ্রীপুর জিন্নাত নীটওয়্যার লিমিটেড নামক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন।
কারখানার কয়েকজন শ্রমিক বলেন, গতকাল সন্ধ্যার দিকে আমাদের কারখানার শ্রমিক জাকির হোসেন অসুস্থতার জন্য একদিনের ছুটি নেয়। এরপর ছুটি শেষে কারখানার উর্ধতন কতৃপক্ষ তাকে সকল শ্রমিকের সামনে কান ধরে উঠবস করান। এই অপমানে সে কারখানার আটতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে আত্নহত্যা করে।
এর প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করলে পুলিশ প্রথমে আমাদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এরপর আমাদের লক্ষ্য করে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে গুলি চালায় এতে আমাদের শতাধিক শ্রমিক আহত হয়। সীমানা প্রাচীর টপকে পালিয়ে যাওয়ার সময় অনেক শ্রমিক আহত হয়।
তারা আরো জানান, পুলিশের টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপের পর অনেক শ্রমিক আহত হয়। আহত শ্রমিকদের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। অনেক শ্রমিক আশপাশের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিলে ওখানেও হামলা চালায়। আমাদের অর্ধশতাধিক শ্রমিক পিটিয়ে আহত করে আটক করে। ওদের নির্যাতনের মাত্রা জংলী জানোয়ারের চেয়ে ভয়াবহ।
কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা জুবায়ের এম বাশার বলেন, একজন শ্রমিক আত্নহত্যা করছে এটাই জানি। এর জেরে তারা কারখানা ব্যাপক ভাংচুর শুরু করে। খুবই উত্তেজনা চলছে পরে কথা বলবো।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, সকাল থেকেই পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ সময় পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। ১১ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তবে কোন গুলির ঘটনা ঘটেনি। এই মুহুর্তে কতজন শ্রমিক আটক করা হয়েছে তা বলা সম্ভব না। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা শিল্প পুলিশের একটি এপিসি গাড়ি ভাংচুর করেছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ