ইসিতে ধাক্কাধাক্কি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫ ০৩:১৫ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) শুনানিকালে ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতি-কিল-ঘুষির পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে দুই পক্ষ।
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানার অনুসারীরা সরাইলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে রোববার দুপুর ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ শুনানি শুরু হয়। জেলার বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)-এর সঙ্গে যুক্ত করার খসড়া করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ইউনিয়নগুলো হলো বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর। শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন রুমিন ফারহানা। এর বিপক্ষে যুক্তি দেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ। তিনি ওই তিন ইউনিয়নকে বিজয়নগর উপজেলাতেই দেখতে চান বলে মত দেন।
জানা গেছে, একপর্যায়ে দুই পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে, জড়িয়ে পড়ে হাতাহাতিতে। মো. আতাউল্লাহর অভিযোগ, তিনিসহ তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। অপর দিকে রুমিন ফারহানার দাবি, আতাউল্লাহ পরিচিত মুখ নন। প্রথমে তাঁকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। তারপর তো আর তাঁর লোকজন বসে থাকবেন না।
এ ঘটনার পর সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সরাইলের শাহবাজপুর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রুমিন ফারহানার অনুসারীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য ও সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও শাহবাজপুর ইউনিয়ন শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমান মুন্সি।
অবরোধকারীরা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে মহাসড়কের দুই দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দেখা দেয় ভোগান্তি। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে ছুটে যান সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারফ হোসাইন, সরাইল থানার ওসি মোরশেদুল আলম চৌধুরী ও সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম। তাঁদের অনুরোধে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
এদিকে ইসিতে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহসহ অন্য নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। বিকেল ছয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ হয়।
প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদর উপজেলার যুগ্ম সমন্বয়ক সাহিল আহমেদ, কসবা উপজেলা যুগ্ম সমন্বয়ক মামুন বাতেন, আশুগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়ক মো. ডালিম ও যুগ্ম সমন্বয়ক জয়ন্তী বিশ্বাস,নবীনগর উপজেলা সমন্বয়ক আলমগীর হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী গাজী নিয়াজুল করিম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর–বিজয়নগর) আসন থেকে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা, বুধন্তী ও হরষপুর ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে আসন পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করলে বিজয়নগর উপজেলাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া হয়। এর প্রতিবাদে বিজয়নগরবাসী মহাসড়ক অবরোধ করে অখণ্ড বিজয়নগরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে রাখার দাবি জানিয়ে আসছে।
ভোরের আকাশ/মো.আ.