শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫ ০১:৫৬ পিএম
শিবচরে ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত কামার পল্লী
মাদারীপুরের শিবচরে কামার পল্লীতে শেষ সময়ে এসে কোরবানির মাংস বানানোর যন্ত্রপাতি তৈরিতে ব্যস্ত কামার পল্লীর কারিগররা। স্থায়ী ও অস্থায়ী বিভিন্ন হাট-বাজারে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কামারেরা কয়লা পুড়িয়ে লোহার নানা ধরনের যন্তপাতি মেরামত কর্মে ব্যস্ত সময় পার করছে। কয়লা পুড়ে লোহাকে আগুনে জ্বালিয়ে লাল টুকটুকে করে হামারী দিয়ে টুংটাং শব্দে মুখরিত করে তুলছে হাট-বাজরের চার পাশ।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে কর্মকারদের প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদুল আযাহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশু জবাইসহ মাংস বানানোর অস্ত্রপাতি যেমন, দা, কাঁচি, বঁটি, ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন লোহাজাত যন্তাংশ মেরামত ও বিক্রি করতে কামারেরা ব্যস্ত সময় পার করছে। নতুন নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি করে সাজিয়ে রেখেছে চকচকে ঝকঝকে করে। শুধু তাই নয় গৃহস্থের পুরাতন লোহাজাত যন্তাংশ সান বা ধার, নুন পুরাসহ মেরামতে কামাদের কর্মব্যস্ত দেখেছি।
পুরাতন বঁটি ও চাপাটি সান বা দার দিতে আসা রশিদ হাওলাদার বলেন, বাজারে আইছি পুরান যন্ত্রপাতি শান দিতে এসে দেখছি লম্বা সিরিয়াল চাপাতি শান দিতে আড়াই শত টাকা চাচ্ছে। আগে ছিল ২ শত টাকা। এবার দাম বেশি।
সোহরাব ফকির নামে একজন কাঁচি কিনতে এসে তিনি বলেন, এখন ১ শত টাকার কাঁচি চায় দেড়শত টাকা করে।
উপজেলার ছোট কুতুবপুর হাটের কর্মকার শান্তি মন্ডল বলেন, আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর ধরে এই হাটে প্রতি বৃহস্পতিবার ও রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গরমের তাপদাহ মেনে নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ছেলেকে সাথে নিয়ে কাজ করছি। কাঁচি ১ শত থেকে ২ শত ২০ টাকা, ছুরি ১ শত ৫০ থেকে ২ শত টাকা, চাপাটি ৩ শত থেকে ৫ শত টাকা এবং বড়ি ৪ শত থেকে ১হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। কাজের চাহিদা বেশি থাকায় ঈদের জন্য গত রবিবার (১ জুন) থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। আশা করি ঈদের আগের দিন রাত পর্যন্ত কাজ করবো।
উপজেলার বাহাদুরপুরের অপর কামার মিঠু বলেন, ঈদের মৌসুম এলেই আমরা সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করি। কোরবানির উপলক্ষে সবাই কম বেশি মাংস বানাতে লোহাজাতের অস্ত্র ব্যবহার করে। তাই নতুন নতুন যন্ত্রপাতি মেরামত করে ঈদ আসার পূর্বেই মজুত করে রাখি। এছাড়া ও গৃহস্থরা মাংস বানানোর জন্য তাদের পুরাতন লোহার যন্ত্রপাতি সান বা ধার দিতে আসে, নুন পুরা দিতে আসে। অন্য দিনের চেয়ে কোরবানির মৌসুমে বেচাকেনা ও পরিশ্রম বেশি হয়।তাই কাজের মুজরিটাও একটু বেশি নেই।
এছাড়াও একাধিক কর্মকার দাম বৃদ্ধির সম্পর্কে বলেন, বর্তমানে কয়লা ও কাচা লোহার সরঞ্জাম পাতির দাম কিছুটা বাড়তি। সেই তুলনায় আমরা দিনরাত খেটে পুরাতন লোহার যন্ত্রপাতি মেরামত করতে যে মুজরী নেই তাতে আমাদের আয় রোজগার তেমন হচ্ছে না। কোরবানির ঈদে খাটাখাটুনি বেশিই হয়। তাই দাম কিছুটা বেশি দরা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ