বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক নাঈম ও সাংবাদিকসহ ১০ জনকে পিটুনি, আটক ৩
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক রেদোয়ান সালেহীন নাঈমের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। রোববার (৮ জুন) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে।আহতরা হলেন- রামগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেক ও সংবাদকর্মী রায়হানুর রহমানসহ ১০ জন। খবর পেয়ে রাতেই তাদেরকে হাসপাতাল দেখতে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম। স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের শৈরশই গ্রামের গনক বাড়ির উঠানে ফুটবল খেলার সময় একই বাড়ির উদ্দীপন এনজিও কর্মী সোহাগ আলমের এক বছর বয়সী শিশু আনাছুর রহমানের মাথায় ফুটবল পড়ে গুরুতর আহত হয়।এ ঘটনায় শিশু আনাছের মা আমেনা আক্তার বিথী ফুটবল খেলোয়াড় রাহুল (১০) ও সাফোয়ান (১২)কে জিজ্ঞাসা করলে রাহুল ও সাফোয়ানের স্বজনদের সাথে বাগবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। সন্ধা সাড়ে ৬টায় শিশু আনাছের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে আনাছের বাবা সোহাগ আলম সন্তানকে নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পথে খেলোয়াড় রাহুলের বাবা রাজন ও সাফোয়ানের বাবা লিপনসহ কামাল ও জাহাঙ্গীর শিশুর বাবা সোহাগকে আইনের আশ্রয়ে গেলে গ্রামে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়।পরে আনাছের আত্মীয়স্বজনদের সহযোগীতায় শিশু আনাছকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে হাসপাতাল সংলগ্ন আঙ্গারপাড়া এলাকার রাহুল ও সাফোয়ানের নিকটাত্মীয় মাসুদ, তুষার, কামালসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে শিশু আনাছের ফুফু জান্নাতুল ফেরদাউসকে হসপিটালের ভিতরে ঢুকে চুল টেনে হসপিটাল থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে।এ ঘটনায় শিশুর বাবা সোহাগ আলম তার নিকটাত্মীয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেককে খবর দিলে তারা বিষয়টি জানতে হসপিটালে যায়।হাসপাতালে গিয়ে শিশু আনাছের বাবার কাছে পুরো ঘটনা জানতে চাওয়ার এক পর্যায়ে মাসুদ, তুষার, কামাল ও লিটনসহ ২০/২৫জনের একটি গ্রুপ বাঁশ, লাঠি ও কাঠ নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেককে বেদম মারধর করে।রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে ঢুকে মারধর করার ঘটনায় আমরা নিজেরা উদ্বীগ্ন। আমাদের চিকিৎসক ও নার্স তারাও অনিরাপদ।ঘটনার খবর পেয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক মাহবুব আলম রাত ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান।এ সময় তিনি বলেন, "এই ন্যাক্কারজনক হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে হবে। আমরা পুলিশের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে। আমরা অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।"রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী মাসুদ, তুষার ও কামালকে গ্রেফতার করা হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ