গাছ রোপণের মাধ্যমে পটুয়াখালীর নতুন ডিসি শহীদ হোসেনের যোগদান
বহুমুখী উপকারী ছাতিম গাছ রোপণের মধ্য দিয়ে দায়িত্বযাত্রা শুরু করলেন পটুয়াখালীর নবাগত জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী।রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে গাছটি রোপণ করেন তিনি। পরে ট্রেজারি শাখা পরিদর্শনের পূর্বে পুলিশের একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জুয়েল রানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মহসিন উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তারেক হাওলাদার, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মো. কামরুল হাসান সোহেলসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনে এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন জেলা প্রশাসক জেলার টেকসই উন্নয়ন, সবুজায়ন ও জনকল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।তিনি বলেন, ‘ছাতিম গাছকে শান্তি, স্থায়িত্ব ও দীর্ঘায়ুর প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এর ঘন সবুজ পত্ররাজি পরিবেশকে শীতল রাখে, বায়ুদূষণ কমায় এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তোলে। পাশাপাশি ভেষজ গুণাগুণের কারণে ছাতিম গাছ চিকিৎসাক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।’ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি জাপান থেকে পিএইচডি ও পোস্ট-ডক্টরেট সম্পন্ন করেছেন।এর আগে তিনি বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবের দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৯ পিএম
কুয়াকাটায় জেলের জালে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির ‘অ্যাঞ্জেলফিশ’
পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা পড়েছে সম্রাট অ্যাঞ্জেলফিশ নামের একটি বিরল প্রজাতির মাছ। কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলে আনোয়ার মাঝির জালে মাছটি ধরা পড়ে।রোববার (১০ আগস্ট) সকালে মাছটি মহিপুরে মৎস্যবন্দরে নিয়ে এলে মাছটিকে দেখতে ভিড় করেনে অনেকে। মাছটি অনেকের কাছে অ্যাকুরিয়াম ফিশ নামেও পরিচিত।রঙিন ও দৃষ্টিনন্দন সামুদ্রিক মাছ, যা মূলত উষ্ণমণ্ডলীয় প্রবালপ্রাচীরের পরিবেশে বাস করে। বৈজ্ঞানিক নাম পোমাক্যান্থাস ইম্পেরেটর। মাছটির আকার ১৬ ইঞ্চির মতো। গায়ের গাঢ় নীল পটভূমিতে হলুদ অনুভূমিক দাগ, মুখে নীল-কালো ‘মাস্ক’ প্যাটার্ন।জেলে আনোয়ার বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে ‘এফবি জারিফ তারিফ’ নামের একটি ফিলিং ট্রলারে অন্যান্য মাছের সঙ্গে মাছটি ধরা পড়ে। মহিপুর মৎস্য বন্দরের মাছটি নিয়ে এলে মাছটিকে একনজর দেখার জন্য উৎসুক জনতা ভিড় করেন।স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী সোবহান শিকদার বলেন, এমন মাছ আমার জীবনে আমি দেখিনি। মাছটি দেখতে অবিকল একুরিয়ামে থাকা মাছের মতো। বাসার সবাইকে দেখানোর জন্য মাছটির কয়েকটি ছবি তুলে নিয়েছি আমি।স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী সগির আকন বলেন, সমুদ্রে ধরা পড়েছে এমন মাছ প্রথম দেখে মাছটিকে আমি আমার বাসায় নিয়ে এসেছি। তবে এ জাতীয় মাছ আমি এই প্রথম দেখলাম। মাছটি খাওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি মাছটিকে বিক্রি না করে বাসায় এনে রেখেছি।ওয়ার্ল্ডফিশ-বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার রহমান বলেন, মাছটির বাংলা নাম অ্যাঞ্জেলফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম (পোমাক্যান্থাস ইম্পেরেটর) এটি অত্যন্ত রঙিন একটি সামুদ্রিক মাছ। এর প্রাকৃতিক আবাসস্থল ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের প্রবাল প্রধান অঞ্চল। মাছটি সর্বোচ্চ ৪০ সেন্টিমিটার (১৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত বড় হতে পারে।তিনি আরও বলেন, মাছটি সাধারণত প্রবাল প্রধান, লবণাক্ত, উষ্ণ সমুদ্র অঞ্চলে থাকে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে এমন মাছ সচরাচর ধরা পড়ে না। কারণ আমাদের উপকূলীয় অংশ মূলত কাদামাটি, বালুময়, প্রবালপ্রাচীর তেমন নেই। তবে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে আন্দামান সাগর সংলগ্ন, মায়ানমার উপকূলের কাছাকাছি কিছু প্রবালপ্রধান এলাকা আছে।বখতিয়ার রহমান বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন ও স্রোতের ধরণ বদলের কারণে কিছু সামুদ্রিক প্রজাতি তাদের আবাসক্ষেত্র প্রসারিত করছে। এর কারণে হয়তো এ প্রজাতিটি বাংলাদেশের জেলেদের জালে ধরা পরছে।মাছটি প্রসঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, মাছটি বাংলা নাম অ্যাঞ্জেলফিশ। এটি একটি বিরল প্রজাতির মাছ। মাছটি উপকূলে সচরাচর দেখা যায় না। মাছটি গভীর সমুদ্রের। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সাথে এটি জেলের জালে উঠে এসেছে। এটা জেলেদের জন্য একটি সুখবর। এসব মাছ যত বেশি ধরা পড়বে জেলেরা অর্থনৈতিকভাবে তত বেশি লাভবান হবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
১০ আগস্ট ২০২৫ ১২:৩৩ পিএম
দেশে খাদ্য পরিস্থিতি সন্তোষজনক: খাদ্য উপদেষ্টা
দেশে বর্তমানে খাদ্য পরিস্থিতি অত্যন্ত সন্তোষজনক, দাবি করে খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, বোরো মৌসুমে আশা অনুরূপ ফলন হয়েছে। যদি আমন মৌসুমেও ভালো ফলন হয়, তাহলে বিদেশ থেকে আর চাল আমদানির প্রয়োজন হবে না। গতকাল শুক্রবার পটুয়াখালী সার্কিট হাউজে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় খাদ্য অধিদপ্তরের পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।সভায় জানানো হয়, চলতি বোরো মৌসুমে পটুয়াখালী জেলায় ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে ১ হাজার ৯২৫ মেট্রিক টন ও ৫ হাজার ৬৯৫ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ইতোমধ্যে ১ হাজার ৯২৫ মেট্রিক টন ধান এবং ৪ হাজার ৯৯৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। বরগুনা জেলার লক্ষ্যমাত্রা ৫০০ মেট্রিক টন ধান ও ১ হাজার ৫১৩ মেট্রিক টন চাল। এর বিপরীতে ৫০০ মেট্রিক টন ধান এবং ১ হাজার ৩৪৯ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। বরগুনার ছয়টি এলএসডির (স্থানীয় সংগ্রহ কেন্দ্র) সম্মিলিত ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার মেট্রিক টন।খাদ্য উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা যে ভালো অবস্থানে আছি, তা বলছি ঠিকই; তবে এ অবস্থান রক্ষা করা কঠিন। কারণ, খাদ্য ক্রমাগত খরচ হচ্ছে, আবার ক্রমাগত সংযোজনও হচ্ছে। এজন্য নিয়মিত তদারকি জরুরি। তিনি জেলা প্রশাসকদের স্থানীয় পর্যায়ে খাদ্য সংগ্রহ ও বিতরণ কার্যক্রম ‘ক্লোজ মনিটরিং’ করার নির্দেশ দেন।উপদেষ্টা বলেন, এই বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে মোট ১৭ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৩ লাখ টন ধান এবং ১৪ লাখ টন চাল কেনা হবে। কৃষকদের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ধানের দাম প্রতি কেজি ৩৬ টাকা ও চালের দাম ৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় কেজি প্রতি ৪ টাকা বেশি। বোরো সংগ্রহ কার্যক্রম চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।সভায় জানানো হয়েছে, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে খাদ্য ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ বাড়িয়ে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করা হচ্ছে, যা চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ছিল ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। অন্তর্বর্তী সরকার দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ওএমএস ও টিসিবি কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে।আগামী অর্থবছরে ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে। প্রতিটি পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি চাল ১৫ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করা হবে। বর্তমানে এ কার্যক্রম বছরে পাঁচ মাস চালু থাকলেও আগামী অর্থবছর থেকে তা ছয় মাস কার্যকর থাকবে।মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।ভোরের আকাশ/এসএইচ