শসা চাষে ভাগ্য বদলাচ্ছে হাড়িডাঙ্গা বিলের হাজারো পরিবার
হাড়িডাঙ্গা বিলে ঢুকতেই চোখে পড়ে বড় বড় মাছের ঘের। ঘেরগুলোতে বাঁশ ও সুদা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাচা। আর তাতেই ঝুলছেই সারি সারি শসা। ছোট বড় হাজারো ঘেরে এভাবেই শশার আবাদ করা হচ্ছে। স্বল্প ব্যয়ে অধিক লাভের আশায় শসা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে জেলার হাজারো কৃষি পরিবার। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময় মত বীজ ও সার প্রয়োগে উৎপাদন আশানুরূপ হয়েছে। আর উৎপাদিত শশার মান ভাল হাওয়ায় বাজারে চাহিদা ও আছে ভাল। তবে অভিযোগ আছে সিন্ডিকেট কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক।শসা চাষি দিপংকর বিশ্বাস বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে ঘের খনন করে মাছ চাষ করেছি। আর ঘেরের পাড়ের দুই পাশে শসার আবাদ করেছি। ৭০ হাজার টাকার শসা বিক্রি করা হয়ে গেছে। আশা করছি, ২ লাখ টাকার শসা এ মৌসুমে বিক্রি করতে পারব। শসার পাইকারি দাম যদি কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয় তাহলে আমরা লাভবান বেশি হতাম। তবে আমাদের উৎপাদিত শসা ব্যাপারীরা জেলার বাইরে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে।হাড়িভাঙ্গা বিলের ঘেরের পাড়ে অন্তত হাজারো পরিবার শসা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে।আগদিয়ারচর, বিছালী খলশেখালী, মির্জাপুর, নলদিরচর সহ পাশপাশের গ্রামের দুই হাজারের ও বেশি পরিবার ঘেরের পাড়ে শশার আবাদ করেছেন।স্থানীয় ইউপি সদস্য উৎপল বিশ্বাস বলেন, নড়াইলের হাড়িডাঙ্গা বিলের কয়েক হাজার পরিবার ঘেরের পাড়ে শসা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। অনেকে বাড়ি, গাড়ি, জমি কিনেছেন। শুধু আগদিয়া গ্রাম না নলদিরচর, বিছালী, মির্জাপুর, আড়পাড়া গ্রামের দুই হাজারের ও বেশি পরিবার ঘেরের পাড়ে শসা চাষ করছেন।আরেক শসা চাষি মনোজ বিশ্বাস বলেন, আমরা শসাগুলো পাইকারি বিক্রি করতেছি ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে। প্রতিদিন সকালে শসা তুলে এনে ভ্যানে বর্নি বাজারে বিক্রি করি। বাজারে ৬০থেকে ৭০ টাকা শসার দাম। আমরা ৫০ টাকা কেজি দাম পেলে ও এই এলাকায় শসার আবাদ আরো বৃদ্ধি পেত।বিছালী ইউনিয়নের বর্নি বাজারে সকাল থেকে শুরু হয় শশার পাইকারি বাজার। কেউ ভ্যানে, কেউ নসিমন আবার কেউ অটোরিকশা করে শসা নিয়ে চাষিরা আসেন এ হাটে। জেলা শহরের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, ফরিদপুর, মাগুরা সহ বিভিন্ন জেলায় চলে যায় এ অঞ্চলের শসা।নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ মৌসুমে ২০২ হেক্টর জমিতে শশার আবাদ। তার ভিতর সদরে ১০৫ কালিয়া ৭৫ লোহাগড়া ২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬৩৫ মে.টন।সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, শসার চাষ দিন দিন বেড়ে চলেছে। নড়াইল সদর উপজেলার সিঙ্গাশোলপুর, বিছালী, কলোড়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ যে মাঠ রয়েছে এই মাঠের ঘেরে শসার আবাদে কৃষকদের দৃষ্টি রয়েছে। বিশেষত প্রায় এক থেকে দেড় হাজার পরিবার মৌসুমে ঘেরের পাড়ে শসা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেখান থেকে যে শসা উৎপাদন হয় তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলাগুলোতে পরিবহণ হচ্ছে। শসা আবাদে কৃষি বিভাগ সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করছি। কৃষকেরা যদি তাদের শসার ন্যায্য মূল্য পায় তাহলে শসা আবাদ জেলায় আরো বেড়ে যাবে। কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্য মূল্য পেতে তাদের একটা বাধা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের সাথে নিয়মিত কথা বলেছি। যেন কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পায়।ভোরের আকাশ/জাআ
২৪ আগস্ট ২০২৫ ০৬:৩৫ পিএম
নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টায় শহরের বিএনপি দলীয় কার্যালয় থেকে একটি র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।র্যালি পূর্বে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক খন্দকার মঞ্জুরুল সাঈদ বাবু। সদস্য সচিব আরিফুজ্জামান মিলনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম। এ সময় আরো বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল, যুগ্ম সম্পাদক আলী হাসান, জেলা কৃষক দলের সাবেক আহ্বায়ক নবীর হোসেন,সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান পলাশ, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফশিয়ার রহমান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সায়দাত কবি রুবেল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক খন্দকার মশিয়ার রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফরিদ হোসেন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহমুদুল হাসান সনি প্রমুখ।এ সময় দলীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/মো.আ.
১৯ আগস্ট ২০২৫ ০১:৫৮ পিএম
নড়াইলে পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার
নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভা এলাকায় একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় সোয়েবুর খান (৪৩) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে পৌরসভার মাইটকুমড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।নিহত সোয়েবুর খান মাইটকুমড়া গ্রামের ইউনুস খানের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন।লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পৌরসভা গেট এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে মাসুমের দোকানে মধ্যরাত পর্যন্ত কেরাম খেলেন সোয়েবুর। রাত গভীর হলেও তিনি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও তার সন্ধান পান না পরিবারের সদস্যরা। পরদিন শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে মাইটকুমড়া গ্রামের একটি পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
০৮ আগস্ট ২০২৫ ০৪:২৬ পিএম
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
নড়াইল সদর উপজেলার ইচড়বাহার নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক,একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০১৯ সালে এমপিওভুক্ত হয়। শুরু থেকে নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়ম না মেনে দায়িত্ব নেন নড়াইল আব্দুল হাই সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সসীম সরকার।তিনি সিটি কলেজে নিজের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি একাই এমপিওভুক্ত এই কলেজের প্রশাসন ও সোনালি ব্যাংকের রূপগঞ্জ শাখায় থাকা কলেজের হিসাব পরিচালনা করে আসছেন। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধিবিধানের পরিপন্থি।এরপর কলেজ পরিচালনা কমিটির একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রমেশ বিশ্বাসকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করেন। অথচ শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী তিনি এই পদের যোগ্য নন এবং তার কোনো নিয়োগপত্রও নেই।অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়,এমপিওভুক্ত হওয়ার পূর্বে কলেজটি পরিচালিত হতো নামমাত্র একটি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। যার ফলে ফাউন্ডেশনের সভাপতি ভগীরথ বিশ্বাস ও সিটি কলেজের শিক্ষক সসীম সরকার কলেজটি নিজেদের ইচ্ছামতো ও অবৈধ নিয়োগ এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। অধ্যক্ষ নিয়োগসহ অন্যান্য নিয়োগ নিয়ে নানা ধরনের স্বেচ্ছাচারিতার রয়েছে। এসব ইচ্ছামতো কলেজে কখনোই ছাত্র-ছাত্রী বাড়েনি, এমনকি নানাভাবে বাইরে থেকে ছাত্র দেখিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রাম বা পরিদর্শন করানো হয়। প্রকৃত ছাত্র-ছাত্রী অনেক কম,সর্বশেষ শিক্ষার্থী ছিল ৪সেমিষ্টার মিলিয়ে ৮৭ জন। এছাড়া কলেজের জরুরি নথিপত্র-রেজুলেশনসহ সবকিছু সসীম সরকারের বাড়িতে থাকে। সেখান থেকেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সম্পূর্ণ অনিয়মের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের নামে চলছে কলেজটি।ফাউন্ডেশনের নামে কলেজ পরিচালনা হওয়ায় সরকারিভাবে কোন ভবন নির্মাণ করা হয়নি। এই ফাউন্ডেশন বাতিল করে কলেজটির উন্নয়নের সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,আমাকে কমিটি রেজুলেশন করে নিয়োগ দিয়েছেন। আমার কোন নিয়োগপত্র নেই। কলেজ পরিচালনার জন্য আমি কাজ করছি। সোনালি ব্যাংক হিসাব আগে সসীম বাবুর নিকট ছিল এখন আমার নামে করা হয়েছে।এবিষয়ে জানতে আব্দুল হাই সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সসীম সরকার বলেন,আমি ২০০৫ সালে স্থানীয়দের নিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি। এটাই আমার আত্মতৃপ্তি। বর্তমানে আমি কলেজের কোন কর্মকাণ্ডের মধ্যে নেই। আমার নামে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সেটি যেহেতু তদন্তাধীন বিষয় সেহেতু এ বিষয়ে কোন কথা বলব না।কৃষি ও কারিগরি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ভগীরত চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,অধ্যক্ষ না থাকার কারণে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রমেশ বাবুকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি। কলেজের ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সসীম বাবুর বাড়ি রাখা হয়। সসীম বাবু কলেজের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন,নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের নানা অনিয়মের একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলমান থাকায় আজ তাদের অফিস ডাকা হয়েছে। ভোরের আকাশ/মো.আ.
০৬ আগস্ট ২০২৫ ১০:২৬ এএম
নাতনির কাছে জায়গা জমি হারিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে নানি
স্বামী মারা গেছেন ২৫ বছর আগে। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালিয়েছেন ছিয়ারন নেসা (৮৫)। বুকের দুধ খাইয়ে মানুষ করেছেন আড়াই মাস বয়সী নাতনি কমলাকে। নিজের ৭ শতাংশ জমি বিক্রি করে ৮ বছর আগে সেই নাতনির স্বামীকে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে সেই নাতনিই এখন বৃদ্ধ নানিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। অন্য দিকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ঠাঁই হচ্ছে না ছেলে বাবু মোল্যার বাড়িতে। ঘরবাড়ি, জায়গা জমি হারিয়ে অসহায় বৃদ্ধ নানি নিরুপায় হয়ে এক মুঠো ভাতের জন্য গ্রামের মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।ঘটনাটি ঘটেছে নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের চরশালিখা গ্রামে। এখন ছিয়ারন নেসা ভিটেমাটি হারিয়ে এক মুঠো ভাতের আশায় গ্রামের এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছেন।ছিয়ারন নেছা বলেন,‘নাতনি কমলাকে ছোট থেকে আমি বড় করেছি। সে আমার জমি নিয়ে গেছে ফাঁকি দিয়ে।আমি তারে পাঁচ কানি জমি দিতে চেয়েছিলাম।সে আমার সব নিয়ে গেছে। আমি কিছু ঠিক পায়নি।পরে শুনি আমার সব জমি নিয়ে গেছে। আমার জমি নিয়েছে আবার আমারে খেদায় (বের করে) দিয়েছে। আমার জমি ছয়াল কে দি- নাই, মায়েকে ও দি- নাই।এহন আমারে ছেলেরা ও দেহে না, মেয়েরা ও দেহে না।আমি ঠেলা খেয়ে বেড়ায়।গ্রামের মানুষ আমারে দেহে খাতি দেয়।’চর শালিখা গ্রামের মো. মুরাদ শেখ বলেন,‘আমরা গ্রামবাসী ছিয়ারন নেসাকে তার নাতনি কমলার বাড়িতে দিয়েছি। তবে কমলা তার নানিকে রাখবে না। আমরা যারা তাকে বাড়িতে উঠায় দিয়েছি, সেই কয়জনের নামে থানায় অভিযোগ করেছে। এখন দারোগা এসে আমাদের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।’প্রতিবেশীরা জানান,কমলার যখন দুই মাস বয়স তখন থেকে তার নানি তাকে মানুষ করেছে। বড় হলে তাকে বিয়ে দিয়েছে। তার নানির কাছে সে পাঁচ কানি জমি চেয়েছে। নানি সেটি দিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে কমলা ও তার স্বামী তার নানির কাছ থেকে অন্য জমিও লিখে নিয়েছে।প্রতিবেশী ইয়াদুল শেখ বলেন, কমলার জন্য তার নানি কি না করেছে। তার স্বামীকে জমি বিক্রি করে বিদেশ পাঠিয়েছে। তিন মাস বয়স থেকে লালন পালন করেছে। তার চার সন্তান বৃদ্ধ মহিলা মানুষ করছে। এখন বৃদ্ধ মহিলা দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। পরের বাড়ি ভিক্ষা করে খায়। এই মহিলা এখন খুব অসহায়।বৃদ্ধা ছিয়ারন নেছের ছেলে বাবু মোল্যা বলেন, তার এত সম্পত্তি অন্য লোকের নামে লিখে দিয়েছে। তাই মনের রাগে খোঁজ নেই আমরা।বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সাখা কাজী বলেন,কমলা হচ্ছে ছিয়ারুনের মেয়ের মেয়ে।কমলার যখন বয়স ৩ মাস তখন তার মা মারা যায়। সেই থেকে কমলাকে তার নানি বড় করে। তার পর গ্রামের সাইফুল শেখের সাথে তাকে বিয়ে দেয়। এর পর কমলার নানি কিছু সম্পত্তি বিক্রি করে সাইফুলকে বিদেশ পাঠায়।পরে নানির যে বাকি সম্পত্তি ছিল ওই কমলা কবলা দলিলে লেখে নেয়। তার ছেলে বাবু মোল্যাকে একটু জমিও দেয়নি। এখন কমলা তার নানীকে ভাত কাপড় দেয় না। গ্রামের মানুষের বাড়ি খেয়ে বেড়ায়।তার নানির এহেন অবস্থা দেখে গ্রামের মানুষ কমলাকে বলেন,তোর নানীকে ভাত দিতে হবে। অথবা তার জমি ফেরত দিতে হবে। এই অবস্থায় কমলা গ্রাম ছেড়ে চলে যায়।এখন জানতে পারি আমিসহ গ্রামের কয়েকজনের নামে চাঁদা দাবির অভিযোগ দিয়েছে।অভিযুক্ত কমলা রানি বলেন, জমি লিখে দিয়েছে অনেক আগে। ২০ বছর ধরে নানি আমার সাথে খায়। গ্রামের দলাদলির কারণে কতিপয় মানুষের পরামর্শে নানি এহেন অভিযোগ করছেন। কিছু মানুষ নানীকে ভাত কাপড় দিতে হবে দাবি করে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করেছেন।আমি তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, নানির সম্পত্তি লিখে নিয়ে খেতে দেয় না৷ এ ঘটনাটি আমরা অনুসন্ধান করছি।অনুসন্ধান করে সঠিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ ঘটনায় কমলাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের ও একটি অভিযোগ পেয়েছি।ভোরের আকাশ/মো. আ.
০৪ আগস্ট ২০২৫ ০৩:২০ পিএম
প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল, এমনকি বাম হাতের একটি আঙুলের নখও উপড়ে ফেলা হয়। পরিবারের দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যা।শুক্রবার (১ আগস্ট) বেলা ১১টার পর গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের সীমান্তবর্তী কাশিয়ানী এলাকার মধুমতি সেতুর কাছে অচেতন অবস্থায় মাসুমকে উদ্ধার করেন অটোরিকশাচালক সুজন। পরে তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। মাসুম লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে।স্বজনরা জানান, লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে ঢাকায় থাকা মাসুম লোহাগড়ায় ফিরে আসেন। পরিবারের সঙ্গে শেষবার সকালে কথা হয়েছিল। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি।মাসুমের চাচা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খবর পাই, মানিকগঞ্জ বাজারের এক পার্লারে প্রেমিকার সঙ্গে মাসুমের কথা হয়েছিল। এরপর প্রেমিকার বাবার কাছ থেকে হুমকির খবরও শুনি। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মৃত্যুর খবর জানি।’তিনি আরও বলেন, ‘শরীরে আঘাতের চিহ্ন আর নখ উপড়ে ফেলা দেখে মনে হচ্ছে, ওকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’অটোরিকশাচালক সুজন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন দেখিনি। মনে হয়েছে, গাড়ি থেকে ফেলে গেছে।’এ ঘটনায় প্রেমিকার পরিবারের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মাসুম বিল্লাহর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।’ভোরের আকাশ/এসএইচ
০২ আগস্ট ২০২৫ ০৯:৫৩ এএম
নড়াইলে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলা, বাবার পর মারা গেল ছেলেও
নড়াইলের লোহাগড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীর শেখ (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার ছেলে নাহিদ শেখ (৩০) আহত হন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান।বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে নাহিদ শেখের মৃত্যু হয়।এর আগে সকাল সাড় ১১ টার দিকে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বাহিরপাড়া গ্রামের আইয়ুব মোল্যার ইট ভাটার পাশে এ হামলার ঘটনা ঘটে। লোহাগড়া থানার ওসি মোঃ শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাহিরপাড়া গ্রামের কাওছার শেখ ও জাহাঙ্গীর শেখের মধ্যে একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে একাধিকবার দুই পক্ষ শালিস মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিহত জাহাঙ্গীর শেখ ও তার ছেলে নাহিদ শেখ জমির আইল (জমির সীমানা নির্ধারণের জন্য বাঁধ) কাটছিলেন।এ সময় কাউসার শেখ পক্ষের কয়েকজন জাহাঙ্গীর ও নাহিদ শেখকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। এতে জাহাঙ্গীর বিশ্বাস ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত নাহিদ শেখকে প্রথমে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে নড়াইল জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।লোহাগড়া থানার ওসি মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ