নাটোরের চলনবিল অধ্যুষিত গুরুদাসপুর ,সিংড়া ও তাড়াশ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সময়ের আগে হওয়া বন্যার পানিতে ডুবে যাচ্ছে সদ্য পাকা বোরো ধান। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। শ্রমিক সংকট ও ধান সংরক্ষণের সমস্যাও যেন কৃষকের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।জানা যায়, চলনবিল এলাকায় পানির উচ্চতা ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে যারা সরিষা তোলার পর নামলা জাতের বোরো ধান রোপণ করেছিলেন, তারা পড়েছেন বিপাকে। অনেক জমির ধান ইতোমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কেউ কেউ কষ্ট করে ধান কাটলেও শ্রমিক সংকট ও পরিবহন সমস্যার কারণে তা ঘরে তুলতে পারছেন না।স্থানীয় কৃষক ফিরোজ সরদার জানান, সরিষা তোলার পর চলতি বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছিলাম। আবাদ ভালো হয়েছিল, ফলনও ভালো হতো- যদি এই আগাম বন্যার পানি না আসতো। এখন ধান পেকে গেছে, কিন্তু সময়মতো ঘরে তুলতে না পারলে সব পানির নিচে চলে যাবে। শ্রমিক পাচ্ছি না, আর যারা আছে তারা অতিরিক্ত মজুরি চাচ্ছে। অর্ধেক ধান দিয়েও ফসল ঘরে তুলতে পারছি না।এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, চলনবিল এলাকায় প্রায় ৩০ ভাগ জমিতে সরিষা তোলার পর নামলা জাতের বোরো ধান রোপণ করা হয়। এটি একটি লাভজনক পদ্ধতি হলেও ঝুঁকিও রয়েছে। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ধান ঘরে তুলতে না পারলে কৃষকরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দ্রুত শ্রমিক সরবরাহ এবং কৃষকদের জন্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। দেরি হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।স্থানীয় হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, সাধারণত ধান কাটার মৌসুমে যারা দিনমজুর হিসেবে মাঠে কাজ করতেন, তারা অনেকেই এখন অন্য পেশায় যুক্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। যারা এখনো ধান কাটার কাজে যুক্ত, তারা দাবি করছেন অতিরিক্ত মজুরি; যা কৃষকদের পক্ষে বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।গুরুদাসপুরের বিলচলন শহীদ শামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের শিক্ষক ও কৃষিবিদ জহুরুল হক সরকার বলেন, সরিষার পর নামলা জাতের বোরো ধান চাষ একটি উৎকৃষ্ট কৃষি কৌশল হলেও সামান্য দুর্যোগে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সুনির্দিষ্ট আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী চাষ না করলে কৃষকদের এই ধরনের ঝুঁকি নিতে হয়।এছাড়াও স্থানীয়ভাবে ধান পরিবহণ ও সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা না থাকায় অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে নৌকায় করে ধান ঘরে তুলছেন- যা অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ ও শ্রমসাধ্য। অনেক ক্ষেত্রে ধান পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।এই সংকট থেকে উত্তরণে স্থানীয় কৃষক ও সচেতন মহল সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তারা বলছেন, শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় অস্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, যন্ত্রচালিত ধান কাটার সরঞ্জাম বিতরণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা জরুরি ভিত্তিতে নিশ্চিত করতে হবে। না হলে চলনবিল এলাকার কৃষকদের এ মৌসুমের ঘামঝরা পরিশ্রম একেবারে ভেসে যাবে পানির স্রোতে।ভোরের আকাশ/আজাসা
১৩ জুন ২০২৫ ০৭:২৪ পিএম
নাটোরে ঈদ-উল-আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত
নাটোরে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদ-উল-আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ আদায় করতে ভোর থেকেই বিভিন্ন মহল্লা থেকে দলে দলে মুসল্লিরা ঈদগাহ মাঠে আসেন।শনিবার (৭ জুন) সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে পবিত্র ঈদ-উল-আযহার প্রথম জামাত কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।প্রথম জামাতে ইমামতি করেন আলাইপুর মারকাজ মসজিদের ইমাম মওলানা মফিজুর রহমান মফিজ। একই মাঠে সকাল ৭ টা ৪৫ মিনিটে ঈদের দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করেন কান্দিভিটা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা গোলাম মোস্তফা। পরে ঈদের জামায়াত শেষে খুতবা পাঠ করা হয়। এরপর দেশ ও জাতীর মঙ্গল কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।নাটোর শহরে মল্লিকহাটি ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায়, বড়হরিশপুর টার্মিনাল ঈদগাহ, গাড়িখানা জামে মসজিদ ঈদগাহ, এনএস কলেজ ঈদগাহ, বুড়া দরগার ঈদগাহ, কুমদবাটী ঈদগাহ মাঠ, নাটোর সুগার মিলস্ ঈদগাহ, ফুলবাগান হেলিপ্যাড ঈদগাহ ও নাটোর রেল স্টেশন প্লাটফর্মে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।এছাড়াও নাটোর জেলার ৭টি উপজেলা ও ৮টি পৌরসভার ৮৩৬টি ঈদগাহ মাঠে যথাযথভাবে নামাজ ঈদ-উল-আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত আদায় করেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট. এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবুল হায়াত, জেলা বিএনপি নেতা মো. শহিদুল ইসলাম বাচ্চু নাটোর পৌরসভার সাবেক মেয়র এমদাদুল হক আল মামুন, বিএনপির নেতা কাজী শাহ আলম, মো. সাইফুল ইসলাম আফতাব, জিল্লুর রহমান বাবুল চৌধুরী, ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন, নাসিম উদ্দিন নাসিমসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।ভোরের আকাশ/জাআ
০৭ জুন ২০২৫ ১০:৫৪ এএম
সরকারি গাড়িতে কোরবানির গরু নিলেন ইউএনও
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা। রাজশাহী গিয়ে একটি সভা শেষ করে সোজা হাটে গিয়ে তিনি কোরবানির গরু কিনেছেন। তারপর সেই সরকারি গাড়িতেই তুলে নিয়ে গেছেন গরু। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা দেখা দিয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে আমের কেনাবেচার সময় আড়তদারদের বাড়তি ওজন নেওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভা ছিল।এ সভায় এসেছিলেন বাগাতিপাড়ার ইউএনও হা-মীম তাবাসসুম প্রভা। তিনি এখন বাগাতিপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনারেরও (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তাই উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ডাবল কেবিন পিকআপ নিয়েই তিনি সভায় আসেন। সভা শেষ হয় দুপুরে।এরপর রাজশাহীর সিটিহাটে গিয়ে তিনি কোরবানির জন্য একটি গরু কেনেন। সেই গরু তিনি গাড়ির পেছনের কেবিনে তুলে নেন। আর সামনের কেবিনে বসেন ইউএনও। এভাবে তিনি সরকারি গাড়িতে রাজশাহী থেকে গরু নাটোর নিয়ে যান।জানতে চাইলে গাড়ির চালক সুমন আলী বলেন, ‘মিটিং শেষ করে স্যার হাটে যান গরু কিনতে। তারপর গাড়িতে করেই গরু বাগাতিপাড়ায় নিয়ে এসেছি। স্যার সঙ্গেই ছিলেন। তাঁর অনুমতি পেয়েই আমি গাড়িতে গরু তুলেছি। এ বিষয়ে কোনো কথা থাকলে স্যার বলবেন।’এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগাতিপাড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা বলেন, ‘আমার বাগাতিপাড়া উপজেলায় কোনো পশুহাট নেই। আমাকে বাগাতিপাড়াতেই ঈদ করতে হচ্ছে। একটা কোরবানি তো দিতে হবে। আশপাশে খোঁজ নিয়েও আমি গরু পাইনি। তাই মিটিং শেষ করে আসার সময় দুই থেকে আড়াই মণ ওজনের মাঝারি আকারের একটা গরু রাজশাহী থেকেই কিনে এনেছি।’সরকারি গাড়িতে গরু ওঠানো ঠিক হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো গাড়িতে অবৈধ কিছু তুলিনি। একটা গরু, গাড়ির পেছনের কেবিনে জায়গা ছিল। তাই তুলে নিয়েছি।এ বিষয়ে কথা বলতে নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীনের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।তবে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ডিসিসহ বিষয়টি সবাই জানেন, আমাদের নজরেও এসেছে। এটা ঠিক হয়নি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নাটোর শহরতলীর দত্তপাড়া এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় বিকল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের হেলপার রবিউল ইসলাম (৩৫) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ট্রাকচালক আশরাফুল আলম।বুধবার (৪ মে) দুপুরে দত্তপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রবিউলের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোরজুন এলাকায় এবং আহত চালক আশরাফুলের বাড়ি একই জেলার গোমস্তাপুর উপজেলায়।ঝলমলিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুর রহমান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রাক দত্তপাড়া এলাকায় এসে চাকা পাংচার হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে। এরপর চালক ও হেলপার চাকা পরিবর্তনের কাজ করছিলেন। এ সময় কুষ্টিয়াগামী একটি যাত্রীবাহী বাস পেছন দিক থেকে এসে ট্রাকটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়।ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান হেলপার রবিউল ইসলাম। গুরুতর আহত চালক আশরাফুলকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।দুর্ঘটনার পর বাসটি আটক করা হয়েছে, তবে চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।ভোরের আকাশ//হ.র