এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাই
রাজীব দাস
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৫ ০৯:৩৪ এএম
ছবি: বাফুফে
এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। পিটার বাটলারের দল শুক্রবার ভিয়েনতিয়েনের নিও লাওস স্টেডিয়ামে পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন ফরোয়ার্ড তৃষ্ণা।
দুই অর্ধে চারটি করে গোল করে লাল-সবুজরা প্রতিপক্ষকে এক মুহূর্তের জন্যও ম্যাচে ফেরার সুযোগ দেয়নি।
ম্যাচের শুরুর কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ছিল বাংলাদেশের জন্য। খেলার ৮ মিনিটে পূর্ব তিমুর গোলের সুযোগ পেয়ে যায়। তাদের একজনের নেওয়া শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক নবীরন। সেই বিপদ কাটিয়েই ম্যাচের গতি নিজেদের দিকে নিয়ে আসে বাংলাদেশ। ২০ মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় তারা। কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে দ্বিতীয় পোস্টের সামনে থেকে শিখা সিনহা নিখুঁত হেডে জালে পাঠিয়ে দলকে এগিয়ে নেন।
প্রথম গোলের পরই আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় বাটলারের শিষ্যরা। ৩৩ মিনিটে কর্নার থেকে আসে দ্বিতীয় গোল। বাঁ পায়ের কর্নারটি শান্তি মার্ডি সরাসরি বাঁক খাইয়ে দূরের পোস্টে পাঠান, যা জড়িয়ে যায় জালে। ৩৬ মিনিটে আবারও কর্নার থেকে গোল পায় বাংলাদেশ। শান্তির কর্নার থেকে নবীরনের জোরালো হেড জাল কাঁপায়, ব্যবধান হয় ৩-০। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আসে চতুর্থ গোল। সাগরিকার পাস ধরে তৃষ্ণা বক্সে ঢুকে নিখুঁত প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান।
প্রথমার্ধে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরে বাংলাদেশ। বিরতির পরও একই ছন্দে খেলে যায় লাল-সবুজরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলমুখের জটলার ভেতর থেকে বল পেয়ে জালে পাঠান তৃষ্ণা, স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-০। ৭২ মিনিটে ষষ্ঠ গোলটি করেন সাগরিকা, যিনি প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেদ করে নিখুঁত শটে গোল করেন।
৮২ মিনিটে পূর্ণ হয় তৃষ্ণার হ্যাটট্রিক। মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে দ্রুতগতিতে বক্সে ঢুকে কাটব্যাক করেন সাগরিকা, ফিরতি পাস থেকে অনায়াসে বল জালে পাঠান তৃষ্ণা। স্কোর হয় ৭-০। ম্যাচের যোগ করা সময়ে শেষ গোলটি আসে মুনকি আক্তারের পা থেকে। জটলা থেকে পাওয়া বল ডান পায়ের শটে জালে জড়ান তিনি।
৮-০ গোলের এই জয় শুধু বাংলাদেশের গোল পার্থক্যই বাড়ায়নি, বরং দলকে দিয়েছে আত্মবিশ্বাসের বড় জ্বালানি। তৃষ্ণার হ্যাটট্রিক, সাগরিকার গোল এবং শান্তি মার্ডির দুর্দান্ত কর্নার কিকগুলো পুরো ম্যাচে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে রাখে। রক্ষণভাগেও নবীরন ও সতীর্থরা ছিলেন সতর্ক, ফলে প্রতিপক্ষ খুব বেশি আক্রমণের সুযোগ পায়নি।
এখন সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। আগামীকাল গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া। এই ম্যাচই নির্ধারণ করবে গ্রুপের শীর্ষস্থান কারা পাবে।
পূর্ব তিমুর বিপক্ষে পাওয়া এই দাপুটে জয়ের পর বাংলাদেশ দল উচ্চ মনোবল নিয়ে নামবে পরবর্তী ম্যাচে, যেখানে জিততে পারলে এশিয়ান কাপের মূলপর্বের স্বপ্ন আরও এক ধাপ কাছে চলে আসবে।
ভোরের আকাশ/মো.আ.