স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৫ ০১:০২ এএম
ঢাকায় আসন্ন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল সভা ঘিরে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব
এশিয়া কাপ ২০২৫ টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর আগেই ক্রিকেটীয় কূটনীতির জটিলতায় পড়েছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ২৪ ও ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে তীব্র বিবাদ চলছে।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) শুরু থেকেই ঢাকায় সভা আয়োজনের বিরোধিতা করছে এবং সভায় অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও একাত্মতা প্রকাশ করেছে। এ অবস্থায় এসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভার বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, কারণ কোরাম পূরণের জন্য অন্তত তিনটি টেস্ট খেলুড়ের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সভাপতি মহসিন নকভি বিকল্প কোনো ভেন্যুতে সভা করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। সাম্প্রতিক আইসিসি সম্মেলনে তার অনুপস্থিতি এবং কাবুল সফরকে ঢাকায় সভার পক্ষে সমর্থন সৃষ্টির প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিসিবি) ভারতীয় ব্লককে আশ্বস্ত করেছে যে তারা ঢাকায় সভায় অংশ নেবে না। এ ছাড়া নেপাল, কুয়েত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, বাহরাইন ও ইন্দোনেশিয়ার মতো সহযোগী সদস্যদেরও অংশগ্রহণ অনিশ্চিত।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এই বিতর্কিত পরিস্থিতিতে নিজেকে নিরপেক্ষ রাখার চেষ্টা করছে। তবে বিসিবির অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি আমিনুল ইসলাম ঢাকায় সভা আয়োজনের অনুমোদন দিয়ে বিতর্ককে আরও জটিল করেছেন বলে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত। বিসিবির ভেতরে একাংশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় সভা বাতিলের পরামর্শ দিয়েও কিছুতেই পিছু হটেননি প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, এই কূটনৈতিক টানাপোড়েন এশিয়া কাপ ২০২৫ টুর্নামেন্টেও প্রভাব ফেলছে। টুর্নামেন্টের আয়োজক ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ঢাকায় এসিসির এজিএম সফলভাবে অনুষ্ঠিত না হলে তারা এশিয়া কাপে অংশ নিতে নাও পারে। পাকিস্তানও নিজেদের অবস্থান কঠোর রেখেছে।
এসিসির জন্য এ সংকট আর্থিক ও কূটনৈতিক ভাবেও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে বার্মিংহামে ভারত-পাকিস্তান প্রাক্তন খেলোয়াড়দের প্রদর্শনী ম্যাচে শহীদ আফ্রিদির উপস্থিতির কারণে ভারতীয় দলের বয়কট বিষয়টি চরম আকার নেয়।
ঢাকায় সভা সফলভাবে সম্পন্ন হতে না পারলে এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হবে এবং ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্রিকেটের সঙ্গেও জটিলতার সৃষ্টি করবে। এই সপ্তাহের শেষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সভার ফলাফলই নির্ধারণ করবে আগামী এশিয়া কাপে কে খেলবে, কে থাকবে মাঠের বাইরে।
ভোরের আকাশ//হ.র