ইরানে জন্ম নেওয়া মুসলিম মনীষীরা: জ্ঞান-বিজ্ঞানে যুগান্তকারী অবদান
প্রাচীন সভ্যতার সূতিকাগার পশ্চিম এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশ ইরান। ভৌগলিক, রাজনৈতিক, শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে যুগে যুগে দেশটি ইসলামী বিশ্বে রেখেছে গৌরবময় ভূমিকা। এই ভূখণ্ডেই জন্ম নিয়েছেন ইতিহাসের অসংখ্য মুসলিম মনীষী, যারা জ্ঞান-বিজ্ঞান, ধর্ম, দর্শন, সাহিত্য ও চিকিৎসাবিদ্যায় রেখেছেন যুগান্তকারী অবদান।
ইরানে জন্ম নেওয়া খ্যাতিমান মুসলিম মনীষীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— ইমাম গাজালী, মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজ, আল-বেরুনী, ওমর খৈয়াম, শেখ সাদী এবং ইবনে সিনা। তাদের সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তাভাবনা আজও বিশ্বজুড়ে চর্চিত ও প্রাসঙ্গিক।
ইমাম মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজ
খুরাসানের নিশাপুরে জন্মগ্রহণকারী এই মনীষী ছিলেন হাদিস শাস্ত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশারদ। সহীহ মুসলিম নামে সুপ্রসিদ্ধ হাদিসগ্রন্থের সংকলক তিনি। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করে তিনি হাদিস সংগ্রহ করেন এবং প্রায় ১৮টি গ্রন্থ রচনা করেন, যদিও বর্তমানে শুধু সহীহ মুসলিমই পাওয়া যায়।
ইমাম গাজালী
১০৫৮ সালে খোরাসানের তুস নগরীতে জন্ম নেওয়া ইমাম গাজালী ছিলেন প্রখ্যাত দার্শনিক, ফকিহ, সুফি ও যুক্তিবিদ। তিনি প্রায় ৪০০ গ্রন্থ রচনা করেন, যার মধ্যে "এহইয়া উলুমুদ্দীন" ও "তাহাফাতুল ফালাসিফা" অন্যতম। পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনের কঠোর সমালোচক তিনি ইসলামি দর্শনকে শুদ্ধ পথে ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এজন্য তাঁকে ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
আল-বেরুনী
৯৭৩ সালে খাওয়ারিজমে জন্ম নেওয়া আল-বেরুনী ছিলেন বহু প্রতিভার অধিকারী—তিনি ছিলেন গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, ঐতিহাসিক, ভূগোলবিদ, ঔষধতত্ত্ববিদ, দার্শনিক এবং ধর্মতত্ত্বের নিরপেক্ষ বিশ্লেষক। তিনি প্রায় ১৪৬টি গ্রন্থ রচনা করেন, যার মধ্যে ৯৫টি ছিল জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত নিয়ে। "কিতাব আল-সায়দালা ফি আল-তিব্ব" তার চিকিৎসাশাস্ত্রভিত্তিক বিখ্যাত বই।
ওমর খৈয়াম
১০৪৮ সালে ইরানের নিশাপুরে জন্মগ্রহণকারী ওমর খৈয়াম ছিলেন একাধারে কবি, গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ। তিনি ত্রিঘাত সমীকরণের বাস্তব সমাধান এবং দ্বি-পদী রাশিমালার বিস্তার করেন। ইউক্লিডের সমান্তরাল স্বীকার্যের সমালোচনার মাধ্যমে অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতির সূচনা করেন। তার কবিতাও বিশ্বসাহিত্যে সমাদৃত।
ইবনে সিনা (আভিসেনা)
৯৮০ সালে জন্ম নেওয়া ইবনে সিনা ছিলেন প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিদ ও দার্শনিক। তার রচিত "কানুন ফিততিব" শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয়েছে। এছাড়া "কিতাবুশ শিফা" তার দার্শনিক বিশ্বকোষ। চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, দর্শন, মনোবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা—সব ক্ষেত্রেই তার অবদান আজও স্মরণীয়।
ইরানের এই মনীষীদের অবদান শুধু ইসলামি সভ্যতা নয়, বরং গোটা মানবসভ্যতার জন্য অনন্য সম্পদ। আধুনিক যুগে তাদের সৃষ্ট জ্ঞান এখনো নতুন গবেষণার অনুপ্রেরণা হয়ে রয়ে গেছে।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
প্রাচীন সভ্যতার সূতিকাগার পশ্চিম এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশ ইরান। ভৌগলিক, রাজনৈতিক, শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে যুগে যুগে দেশটি ইসলামী বিশ্বে রেখেছে গৌরবময় ভূমিকা। এই ভূখণ্ডেই জন্ম নিয়েছেন ইতিহাসের অসংখ্য মুসলিম মনীষী, যারা জ্ঞান-বিজ্ঞান, ধর্ম, দর্শন, সাহিত্য ও চিকিৎসাবিদ্যায় রেখেছেন যুগান্তকারী অবদান।ইরানে জন্ম নেওয়া খ্যাতিমান মুসলিম মনীষীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— ইমাম গাজালী, মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজ, আল-বেরুনী, ওমর খৈয়াম, শেখ সাদী এবং ইবনে সিনা। তাদের সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তাভাবনা আজও বিশ্বজুড়ে চর্চিত ও প্রাসঙ্গিক।ইমাম মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজখুরাসানের নিশাপুরে জন্মগ্রহণকারী এই মনীষী ছিলেন হাদিস শাস্ত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশারদ। সহীহ মুসলিম নামে সুপ্রসিদ্ধ হাদিসগ্রন্থের সংকলক তিনি। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করে তিনি হাদিস সংগ্রহ করেন এবং প্রায় ১৮টি গ্রন্থ রচনা করেন, যদিও বর্তমানে শুধু সহীহ মুসলিমই পাওয়া যায়।ইমাম গাজালী১০৫৮ সালে খোরাসানের তুস নগরীতে জন্ম নেওয়া ইমাম গাজালী ছিলেন প্রখ্যাত দার্শনিক, ফকিহ, সুফি ও যুক্তিবিদ। তিনি প্রায় ৪০০ গ্রন্থ রচনা করেন, যার মধ্যে "এহইয়া উলুমুদ্দীন" ও "তাহাফাতুল ফালাসিফা" অন্যতম। পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনের কঠোর সমালোচক তিনি ইসলামি দর্শনকে শুদ্ধ পথে ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এজন্য তাঁকে ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।আল-বেরুনী৯৭৩ সালে খাওয়ারিজমে জন্ম নেওয়া আল-বেরুনী ছিলেন বহু প্রতিভার অধিকারী—তিনি ছিলেন গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, ঐতিহাসিক, ভূগোলবিদ, ঔষধতত্ত্ববিদ, দার্শনিক এবং ধর্মতত্ত্বের নিরপেক্ষ বিশ্লেষক। তিনি প্রায় ১৪৬টি গ্রন্থ রচনা করেন, যার মধ্যে ৯৫টি ছিল জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত নিয়ে। "কিতাব আল-সায়দালা ফি আল-তিব্ব" তার চিকিৎসাশাস্ত্রভিত্তিক বিখ্যাত বই।ওমর খৈয়াম১০৪৮ সালে ইরানের নিশাপুরে জন্মগ্রহণকারী ওমর খৈয়াম ছিলেন একাধারে কবি, গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ। তিনি ত্রিঘাত সমীকরণের বাস্তব সমাধান এবং দ্বি-পদী রাশিমালার বিস্তার করেন। ইউক্লিডের সমান্তরাল স্বীকার্যের সমালোচনার মাধ্যমে অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতির সূচনা করেন। তার কবিতাও বিশ্বসাহিত্যে সমাদৃত।ইবনে সিনা (আভিসেনা)৯৮০ সালে জন্ম নেওয়া ইবনে সিনা ছিলেন প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিদ ও দার্শনিক। তার রচিত "কানুন ফিততিব" শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয়েছে। এছাড়া "কিতাবুশ শিফা" তার দার্শনিক বিশ্বকোষ। চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, দর্শন, মনোবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা—সব ক্ষেত্রেই তার অবদান আজও স্মরণীয়।ইরানের এই মনীষীদের অবদান শুধু ইসলামি সভ্যতা নয়, বরং গোটা মানবসভ্যতার জন্য অনন্য সম্পদ। আধুনিক যুগে তাদের সৃষ্ট জ্ঞান এখনো নতুন গবেষণার অনুপ্রেরণা হয়ে রয়ে গেছে।ভোরের আকাশ//হ.র
কোরআন তিলাওয়াত হলো এক মহৎ আমল, যা আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে প্রশংসা করেছেন। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতকারীদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে অসংখ্য বরকত ও সওয়াব।সূরা ফাতিরের আয়াতে আল্লাহ বলেন, যারা তাঁর কিতাব তিলাওয়াত করে, নামাজ পালনে নিষ্ঠাবান এবং তাদের রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে খরচ করে, তাদের জন্য এমন একটি ব্যবসা রয়েছে যা কখনো লোকসান হয় না। আল্লাহ তাদের পূর্ণ প্রতিদান দিবেন এবং তাঁর দয়ায় আরও বরকত দেবেন।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রতিটি কোরআনের হরফ পড়ার জন্য দশ গুণ সওয়াব দেওয়া হয়। যেমন ‘আলিফ’, ‘লাম’ এবং ‘মীম’ প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা হরফ হিসেবে গন্য হবে।স্বপ্নে নিজেকে কোরআন তিলাওয়াত করতে দেখা অনেকেই দেখে এবং এর পেছনে রয়েছে বিশেষ মানসিক ও আধ্যাত্মিক অর্থ।বিশেষ ব্যাখ্যা অনুযায়ী, স্বপ্নে কোরআন তিলাওয়াত দেখা মানে হলো আল্লাহ তায়ালা ব্যক্তি বা স্বপ্নদ্রষ্টার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তার জীবনে খুশি নেমে আসবে।যদি কেউ স্বপ্নে কোরআন মুখস্থ করতে দেখে, তবে তার অর্থ তিনি আদালতে সঠিক ও ন্যায়পরায়ণ প্রমাণিত হবেন এবং একজন আমানতদার মুমিন হিসেবে সম্মানিত হবেন। সেই ব্যক্তি সৎ কাজ প্রচার করবেন এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবেন।স্বপ্নে কোরআন খতম করা দেখলে বোঝা যায়, তার কোনো বড় আশা পূরণ হবে এবং আল্লাহ তার জন্য প্রচুর সওয়াব দান করবেন।অপরদিকে, যারা কোরআনের হাফেজ না হলেও স্বপ্নে দেখেন যে তিনি কোরআন মুখস্থ করেছেন, তা নির্দেশ করে যে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও শক্তি বৃদ্ধি পাবে।যদি স্বপ্নে দেখা যায় কেউ কোরআন পাঠ করছেন, কিন্তু কোন অংশ বা আয়াত মনে না থাকে, তবে বোঝা যাবে তিনি অসুস্থ হলে সুস্থ হবেন অথবা ব্যবসায়ী হলে ভালো মুনাফা লাভ করবেন।স্বপ্নে কোরআন শ্রবণ করাও সুখবর বয়ে আনে—এটি শক্তির বৃদ্ধি ও ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পাওয়ার ইঙ্গিত।আর যদি কেউ স্বপ্নে দেখেন যে তিনি কোরআন তিলাওয়াত করছেন এবং অন্যরা তা শ্রবণ করছে, তাহলে তার সমাজে সম্মান ও প্রভাব বাড়বে এবং লোকেরা তার কথায় মেনে চলবে।স্বপ্নের এই ব্যাখ্যাগুলো মানুষকে আত্মবিশ্বাস ও আধ্যাত্মিক শক্তি দেয়। তাই পবিত্র কোরআনের সঙ্গে সম্পর্কিত এই ধরনের স্বপ্নকে আশীর্বাদের দৃষ্টিতে দেখা হয়।ভোরের আকাশ//হ.র
জীবনে কখনো আনন্দ, কখনো ক্লান্তি—এই দুইয়ের সমন্বয়ে সময় চলে। তবে কঠিন সময়ই মানুষের ধৈর্য, চরিত্র এবং আল্লাহর প্রতি আস্থার পরীক্ষা। এই পরীক্ষাগুলো পার হওয়া মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে। আর এই ক্ষেত্রেই মুসলমানদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ হলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।তিনি ছিলেন সেই মানুষ, যিনি নিজের জীবনে একের পর এক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন, সহ্য করেছেন মানসিক, সামাজিক ও শারীরিক কষ্ট। অথচ কখনো হাল ছাড়েননি। বরং সব পরিস্থিতিতে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে এবং অবিচল ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে গেছেন।বিষাদের বছর: প্রিয়জন হারানোর বেদনামক্কায় দাওয়াতি জীবনের শুরুতেই কাফেরদের তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েন নবীজি (সা.)। তখন পাশে ছিলেন সহধর্মিণী খাদিজা (রা.) ও চাচা আবু তালেব। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে এই দুই আশ্রয়প্রদায়ক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। এ সময়কে বলা হয় ‘আমুল হুজন’ বা বিষাদের বছর। একা হয়ে গেলেও রাসুল (সা.) পিছিয়ে যাননি, আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যান।মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকারমক্কার নেতারা শুধু অপমান নয়, প্রকাশ্যে নবীজিকে শারীরিকভাবে আঘাত করতেও দ্বিধা করেনি। একবার নামাজরত অবস্থায় তার পিঠে উটের নাড়িভুঁড়ি ফেলে দেয় কাফেররা। নবীজি কিছু না বললেও কন্যা ফাতিমা (রা.) এসে তা সরিয়ে কাঁদতে থাকেন। রাসুল (সা.) তখন আল্লাহর কাছে তাদের বিরুদ্ধে দোয়া করেন।অপবাদ, বয়কট ও ব্যর্থতাযাকে এক সময় ‘আল-আমিন’ বলে সম্বোধন করা হতো, তাকে দাওয়াত দেওয়ার পর বলা হলো জাদুকর, মিথ্যাবাদী, গণক! এমনকি তায়েফে গিয়ে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে শিশুদের দিয়ে পাথর ছোঁড়ানো হয় তার দিকে। শরীর থেকে রক্ত ঝরলেও তিনি অভিযোগ করেননি, বরং দোয়া করেন তাদের জন্য।হত্যার ষড়যন্ত্র ও হিজরতকাফেরদের ষড়যন্ত্র চূড়ান্ত রূপ নেয় যখন তারা রাসুল (সা.)-কে হত্যা করতে চায়। আল্লাহর নির্দেশে তিনি হিজরত করেন মদিনায়। সেখানেও শান্তি ছিল না—ইহুদি গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র, যুদ্ধের হুমকি ও অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ তার পদে পদে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাপ্রিয় চাচা হামজা (রা.)-র শাহাদাতওহুদ যুদ্ধে ক্ষতিখন্দকের যুদ্ধ: পুরো মদিনা ছিল ধ্বংসের মুখেইহুদিদের একের পর এক বিশ্বাসঘাতকতাতার প্রতিক্রিয়া ছিল কী?ধৈর্য: কোনো পরিস্থিতিতে হতাশ হননিতাওয়াক্কুল: আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রেখেছেনসত্যে অবিচলতা: কোনো প্রলোভন কিংবা ভয় তাকে পথ থেকে টলাতে পারেনিক্ষমাশীলতা: শত্রুর প্রতিও দয়া ও ক্ষমার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেনকোরআনের ভাষ্যআল্লাহ তায়ালা বলেন—“মানুষ কি মনে করেছে, তারা শুধু বলবে ‘আমরা ঈমান এনেছি’, আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না?”(সূরা আনকাবূত: ২)আরও বলেন—“তোমরা কি জান্নাতে প্রবেশ করবে, অথচ তোমাদের আগের লোকেরা যেমন দুঃখ-ক্লেশে পতিত হয়েছিল, তেমন কিছু এখনো তোমাদের ওপর আসেনি?”(সূরা বাকারা: ২১৪)আমাদের শিক্ষা কী?মহানবী (সা.) এর জীবন আমাদের শিখিয়ে দেয়—কঠিন সময় মানেই আল্লাহর অনুগ্রহের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়ধৈর্য, বিশ্বাস ও অবিচলতা থাকলে পথ তৈরি হয়সাফল্য আসে ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেতাই বিপদে, হতাশায় কিংবা যন্ত্রণায় পড়ে যখন পথ খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন চোখ রাখুন সেই মানুষটির জীবনে যিনি ছিলেন রহমাতুল্লিল আলামিন। তার ধৈর্যই আমাদের পথ দেখাবে।সূত্র: অ্যাবাউট ইসলাম, কোরআন ও হাদিসভোরের আকাশ//হ.র
ইসলামে আংটি পরার বিষয়ে রয়েছে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা। নবী করিম মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে আংটি পরিধান করেছেন এবং তা কোন আঙুলে পরা উচিত, কোন ধাতুর আংটি ব্যবহার করা যাবে—সেসব বিষয়েও সাহাবায়ে কেরামের মাধ্যমে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।কোন আঙুলে আংটি পরবেন?সহিহ হাদিস অনুযায়ী, নবীজি (সা.) বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙুলে রুপার আংটি পরতেন। আনাস (রা.) বলেন, “নবিজি এ আঙুলে আংটি পরতেন,”—এই কথা বলে তিনি বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙুলের দিকে ইশারা করেন (সহিহ মুসলিম, সুনানে নাসাঈ)।তবে তিনি তর্জনি (সূচি আঙুল) ও মধ্যমা আঙুলে আংটি পরিধান করতে নিষেধ করেছেন। আলী (রা.) বলেন, “আল্লাহর রাসুল আমাকে তর্জনি ও মধ্যমা আঙুলে আংটি পরিধান করতে নিষেধ করেছেন” (সুনানে তিরমিজি)।পুরুষদের জন্য কোন ধাতুর আংটি বৈধ?পুরুষদের জন্য শুধুমাত্র রুপার আংটি বৈধ বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। রাসুল (সা.) নিজেও রুপার আংটি পরতেন এবং অন্যান্য ধাতু ব্যবহার নিরুৎসাহিত করেছেন।এক ব্যক্তি পিতলের আংটি পরে এলে রাসুল (সা.) বলেন, “আমি আপনার কাছ থেকে মূর্তির গন্ধ পাচ্ছি”। এরপর তিনি লোহার আংটি দেখে বলেন, “আমি আপনার কাছে জাহান্নামের অধিবাসীদের অলংকার দেখছি।” (সুনানে আবু দাউদ)নবীজি তাকে নির্দেশ দেন রুপার আংটি ব্যবহারের, তবে তা যেন এক মিসকালের (প্রায় ৪ গ্রাম) বেশি না হয়।আংটি দিয়ে ভাগ্য পরিবর্তনের বিশ্বাস হারামইসলামে কোনো ধাতু বা পাথরের অলৌকিক শক্তি আছে—এমন বিশ্বাস শিরক হিসেবে গণ্য হয়। কেউ যদি কোনো পাথর বা আংটির প্রভাবে ভাগ্য পরিবর্তন বা দুর্ভাগ্য কাটবে বলে মনে করে, তা হলে সে গুরুতর গোনাহর মধ্যে লিপ্ত হচ্ছে।কোরআন শরিফে বলা হয়েছে:“নিশ্চয়ই আল্লাহ তার সঙ্গে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না, তবে অন্যান্য গোনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন।” (সুরা নিসা: ৪৮)এমনকি শিরকের কারণে জান্নাত হারাম হয়ে যাবে বলেও কোরআনে উল্লেখ রয়েছে:“যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন, আর তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।” (সুরা মায়েদা: ৭২)করণীয় কী?আংটি পরার ক্ষেত্রে হাদিসভিত্তিক নির্দেশনা মেনে চলা জরুরিরুপা ছাড়া অন্য কোনো ধাতুর আংটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিতভাগ্য পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে পাথর বা ধাতুর আংটি ব্যবহার করা ইসলামসম্মত নয়আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রেখে দোয়া, সদকা ও নেক আমলের মাধ্যমে জীবনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করাই ইমানদারের পরিচয়ভোরের আকাশ//হ.র