ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫ ০৫:৫০ পিএম
সংগৃহীত ছবি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ঘোষণা করা হবে ‘জুলাই সনদ’। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দলগুলোর মতপার্থক্য দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। চলছে তীব্র বাকযুদ্ধ। একের অপরের প্রতি আপত্তিজনক মন্তব্য করতেও দ্বিধা করছেন না তারা। তবে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারে মৌলিক সংস্কারের ‘বেশিরভাগ বিষয়ে’ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে আরও কিছু বিষয় ‘নিষ্পত্তি হবে’ বলে আশা করছেন তিনি।
রোববার (২০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৫তম দিনে সূচনা বক্তব্যে কথা বলছিলেন আলী রীয়াজ। এদিনের আলোচ্য সূচিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান রাখা হয়েছে।
আলী রীয়াজ বলেন, চলতি মাসের মধ্যে কমিশন জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চায়। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এটা আপনারাও নিঃসন্দেহে চান। তাই আমাদের পক্ষে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি সনদের জায়গায় যাওয়া। যেটা আপনাদের ইচ্ছা, আমাদের ইচ্ছা, সকলের প্রচেষ্টা। দেশের সকলে সেটা প্রত্যাশা করছেন।’
উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত দেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘কমিশন বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। আশা করেছিলাম শুক্র ও শনিবার একটা আলোচনার মধ্য দিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তটা জানাতে পারব। কমিশন আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বিষয়ে আরেকটু সময় নিয়ে বিবেচনা করা দরকার। আপনাদের বিভিন্ন অবস্থান পর্যালোচনা করছি।”
উচ্চকক্ষের বিষয়ে সংলাপের আলোচনার নিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনাদের আলোচনা পর্যালোচনার পাশাপাশি উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কি কি ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে, অন্যান্য বিষয় সংশ্লিষ্ট সেগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আশা করছি দুই-তিনদিন পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারব।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে আলোচনার বিষয়ে সহ-সভাপতি বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে আলোচনার প্রেক্ষিতে কমিশনের পক্ষ থেকে একাধিক প্রস্তাব বিবেচনার জন্য দেওয়া হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বিএনপি, এনসিপি এবং জামায়াতের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছিল। সেটা নিয়ে বিভিন্নভাবে পর্যালোচনার পর সমন্বিত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। যা দলগুলো ও গত কয়েকদিনের আলোচনার সারাংশের ভিত্তিতে। আশা করছি আজকে আলোচনার মাধ্যমে পরিণতির দিকে যেতে পারব।
গত ১৪ বছরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা সকলে যুক্ত ছিলাম। সে জায়গায় আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়েছি। এখন প্রধান উপদেষ্টার কাঠামো নিয়ে একমতের জায়গায় আসতে পারব। কমিশন শুধু আশা করে না, বিশ্বাস করে।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, আইয়ুব মিয়া।
ভোরের আকাশ/এসএইচ