দগ্ধদের চিকিৎসায় ঢাকায় ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে ভারত থেকে একটি চার সদস্যের মেডিকেল টিম ঢাকায় এসেছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় প্রতিনিধি দলে রয়েছেন দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল এবং সাফদারজং হাসপাতালের দুইজন জ্যেষ্ঠ বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন এবং দুইজন অভিজ্ঞ নার্স। উল্লেখ্য, এই দুটি হাসপাতাল ভারতে সরকারি পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।
চিকিৎসক দলটি বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন।
এর আগে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দগ্ধদের চিকিৎসা সহায়তায় প্রয়োজনীয় রসদ ও প্রস্তুতি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং নার্সদের একটি দল বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। তারা রোগীদের প্রাথমিক অবস্থা মূল্যায়ন করে প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে স্থানান্তরের পরামর্শও দিতে পারেন। একই সঙ্গে, যদি পরিস্থিতি জটিল হয়, তবে অতিরিক্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল পাঠানোর বিষয়েও চিন্তা করা হচ্ছে।
ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার সকালেই জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে যাবেন এবং দগ্ধদের অবস্থা যাচাই করবেন।
এর আগে, সোমবার (২১ জুলাই) দুর্ঘটনার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে শোক প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, “ঢাকায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় তরুণ শিক্ষার্থীসহ প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে ভারত প্রস্তুত।”
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কান্ট্রি অফিস বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে না, বরং দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েই কাজ করবে।বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, “এই অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত কোনো হঠাৎ করে নেওয়া হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশ নিজস্ব স্বার্থ বিবেচনায় অফিস স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে।”পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, প্রয়োজনীয় চুক্তিসমূহ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হওয়ায় অফিসটি খুব শিগগিরই চালু হবে।চীনের নদীতে বাঁধ নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অধিকাংশ নদীর উৎস দেশের বাইরে। এসব নদীর উজানে অবকাঠামো নির্মাণ ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে, যেন এসব প্রকল্প বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি না করে বা ক্ষতি সীমিত রাখা যায়।”তিনি জানান, চীনের রাষ্ট্রদূত ব্রহ্মপুত্র নদে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত আলোচনায় আশ্বস্ত করেছেন যে পানি প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই।মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে তিনি বলেন, “সিঙ্গাপুর, ভারত ও চীন ছাড়া অন্য কোনো দেশ থেকে সহায়তার প্রস্তাব আসেনি। বর্তমানে অতিরিক্ত সহায়তার প্রয়োজনও নেই।”ভারতের চিকিৎসক দলের সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় ভারতের সঙ্গে সম্মানজনক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। চিকিৎসা সহায়তাকে ইতিবাচকভাবেই দেখা হচ্ছে।”বাংলাদেশিদের ভিসা জটিলতা নিয়ে তিনি বলেন, “জাল নথি এখন সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব। আগে এমন ছিল না। ফলে এখন প্রতারণা করা কঠিন হয়ে গেছে। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, বাংলাদেশ থেকে কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম যেন না ঘটে।”যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অপ্রকাশযোগ্য চুক্তির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে যারা দরকষাকষি করছেন, প্রশ্নটি তাদের করাই যুক্তিযুক্ত। আলোচনা এখনো চলমান, তাই মাঝপথে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”সাবেক রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমানকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বাগত না জানানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “এমন কোনো মন্তব্য আমি করিনি। তিনি এখনও যোগ দেননি। কী দায়িত্ব পাবেন, সেটিও এখনও নির্ধারিত হয়নি।”ভোরের আকাশ//হ.র
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসাসেবা দিতে চীনের পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ মেডিক্যাল টিম বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে।ঢাকার চীনা দূতাবাস এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় জানিয়েছে, রাত ১১টার দিকে চীনের ওই চিকিৎসক ও নার্সদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল টিম হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তাদের স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক।এর আগে দগ্ধদের চিকিৎসায় সহায়তা করতে আরও দুটি আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল টিম ঢাকায় এসেছে। বুধবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় তিন সদস্যের একটি ভারতীয় মেডিক্যাল টিম এবং একই দিনে সিঙ্গাপুর থেকে আরও তিন সদস্যের একটি টিম ঢাকায় পৌঁছে।এরও আগে, গত ২২ জুলাই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. চোং সি জ্যাক ঢাকায় আসেন বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ ও আহতদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে।মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনার পর দগ্ধদের উন্নত চিকিৎসার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।ভোরের আকাশ//হ.র
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪২ জন। এর মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন।বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ৮টার পর আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।অধ্যাপক নাসির উদ্দিন জানান, গত দুই দিনে ‘ইন্টারমিডিয়েট’ ক্যাটাগরিতে থাকা ২৩ জন রোগীর মধ্যে ১৩ জনের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এদের মধ্যে অনেককেই শিগগির হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে ‘সিভিয়ার’ ক্যাটাগরিতে থাকা ১৩ রোগীর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলেও এখনো আশঙ্কা কাটেনি। বর্তমানে ৮ জন রোগী আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।চিকিৎসা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, "আগুনে পোড়া রোগীদের অবস্থা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে। আমরা মাল্টিডিসিপ্লিনারি বোর্ড গঠন করে চিকিৎসাসংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এরই মধ্যে সিঙ্গাপুর ও ভারতীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আগামীকাল (শুক্রবার) চীনা চিকিৎসকদের সঙ্গেও বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।"রোগীদের জন্য রক্ত কিংবা স্কিন ডোনেশনের কোনো প্রয়োজন নেই জানিয়ে অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, "চিকিৎসার যাবতীয় খরচ সরকার বহন করছে। সাধারণ মানুষ সহানুভূতির বশে অনেকেই আর্থিক সহায়তা দিতে চাচ্ছেন, তবে বর্তমানে তারও প্রয়োজন নেই।"উল্লেখ্য, গত সোমবার (২২ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি দোতলা ভবনে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।নিহতদের সংখ্যা নিয়ে এখনও বিভ্রান্তি রয়েছে। আইএসপিআর-এর দেওয়া তথ্যমতে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে এ সংখ্যা ৩১, আর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, মোট ২৪ জন নিহত হয়েছেন।ভোরের আকাশ//হ.র
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রধান বাণিজ্য আলোচনাকারী সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) বাংলাদেশকে আগামী ২৯ জুলাই তৃতীয় ও চূড়ান্ত শুল্ক আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানান।তিনি বলেন, এর আগে বাংলাদেশ ২২ জুলাই ইউএসটিআর-এর কাছে নিজেদের অবস্থানপত্র পাঠায় এবং ২৬ জুলাই চূড়ান্ত দফার আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেয়। তবে ইউএসটিআর ২৯ জুলাই দিন ধার্য করেছে এবং ওই দিন ওয়াশিংটন ডিসিতে তাদের অফিসে আলোচনা শুরু হবে। বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।সাক্ষাতে আলোচনা হলে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ২৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। তবে আলোচনা ভার্চুয়াল হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।তিনি আরও বলেন, এই দফায় বেসরকারি খাতের কয়েকজন রপ্তানিকারক বাংলাদেশ দলের সঙ্গে থাকতে পারেন, তবে তারা সরকারি পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নেবেন না।মাহবুবুর রহমান আশা প্রকাশ করেন, আলোচনার ফলস্বরূপ ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের জন্য বিদ্যমান ৩৫ শতাংশ শুল্ক হার হ্রাস করবে। কারণ, ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের জন্য ১৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার জন্য ১৯ শতাংশ, ভিয়েতনামের জন্য ২০ শতাংশ এবং ফিলিপাইনের জন্য ১৯ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছে।তিনি বলেন, ইউএসটিআর-এর সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা এখন পর্যন্ত ভালোভাবে এগিয়েছে, তাই বাংলাদেশও উল্লেখযোগ্য শুল্ক ছাড় পেতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মার্কিন পণ্য যেমন তুলা, গম, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), বিমান ও অন্যান্য কৃষিপণ্য শুল্কমুক্ত আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে বাংলাদেশ ২০ জুলাই মার্কিন গম সরবরাহকারীদের সঙ্গে ৭ লাখ টন গম আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।ভোরের আকাশ/জাআ