আন্দোলনে অটল এনবিআর কর্মকর্তারা
এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও নিপীড়নমূলক বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে আজ এবং আগামীকালও অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি চলবে বলে জানিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। মঙ্গলবার (২৪ জুন) আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ৪৪ আমলার (ছয়জনকে ইতোমধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে) তালিকায় ও নম্বরে থাকা এবং দেশ ও রাজস্ব ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তার বিরুদ্ধে অসহযোগ কর্মসূচি যথারীতি চলবে।
যার অংশ হিসাবে ২৫ ও ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ছাড়া কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে ঢাকার ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি এবং ঢাকার বাইরে স্ব স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি চলবে। পাশাপাশি চেয়ারম্যান ও তার দোসরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ চলবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে আগামী ২৭ জুন তারিখের মধ্যে অপসারণ না করা হলে আগামী ২৮ জুন থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে। তবে, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কমপ্লিট শাটডাইনের আওতা বহির্ভূত থাকবে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে গতকাল সোমবার সকাল থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একই ধরনের কর্মসূচি পালন করেন।
যার ধারাবাহিতায় মঙ্গলবারও এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। যেখানে দেখা গেছে গোলামী আইন বাতিল কর করতে হবে, বদলির নামে প্রহসন মানি না, মানবো না ইত্যাদি।
গত ২১ জুন সংবাদ সম্মেলনে দ্বিতীয় দফায় প্রথম কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। সরকার গত ১২ মে এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করে। এর বিরোধিতা করে গত ২৬ মে পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতির আন্দোলন করেন এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা।
আর ২৫ মে রাতে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। এর ফলে ২৬ মে কলম বিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
গত ২০ জুন এনবিআর কাঠামোগত সংস্কার কার্যক্রমে সমন্বয় করার জন্য ছয় সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে সরকার। এনবিআর সদস্য (কর, লিগ্যাল ও এনফোর্সমেন্ট) ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকীকে এই কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্য পরিষদ।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার অন্যতম বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।তার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরোয়ার জাহান।তিনি জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদকে। চিকিৎসকরা তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক শনাক্ত করেন। পাশাপাশি তিনি ফুসফুসের সংক্রমণেও ভুগছিলেন। বুধবার বিকেলে রিং পরানোর জন্য অস্ত্রোপচারে নেওয়া হলে হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থা অবনতি ঘটে। পরে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।পারিবারিক সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।ড. তোফায়েল আহমেদ স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি দীর্ঘ কর্মজীবনে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা বিকাশ, নীতি প্রণয়ন ও সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার মৃত্যুতে স্থানীয় সরকার গবেষণা ও প্রশাসন অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।ভোরের আকাশ//হ.র
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রক্রিয়া জটিল হয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সরকার ‘সচেতন ও উদ্বিগ্ন’ বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।সোমবার (৮ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমরা অনেক সময় নকল বা ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করি। পাশাপাশি ইরেগুলার মাইগ্রেশনের সংখ্যাও বেশি। এ কারণে আমাদের রেপুটেশন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং ভিসা পাওয়া জটিল হয়ে গেছে। আমাদের আগে ঘর গোছাতে হবে, তারপরই সমস্যার সমাধান হবে।”তিনি আরও জানান, ভিসা নিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোর শিক্ষার্থী ভিসার বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি জার্মানিকে উল্লেখ করেন, যেখানে প্রতি বছর প্রায় ৮০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আবেদন করে, অথচ দেশটির দূতাবাস মাত্র ২ হাজার ভিসা দিতে সক্ষম। “আমি জার্মান রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেছি সংখ্যা কমপক্ষে ৯ হাজারে উন্নীত করার জন্য, যাতে পাকিস্তানের সমান সুযোগ দেওয়া হয়,” বলেন তৌহিদ হোসেন।পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সমস্যার এক অংশকে ভারতভিত্তিক দূতাবাসের সঙ্গে যুক্ত করে বলেন, “কিছু দূতাবাস, যা দিল্লি থেকে পরিচালিত হয়, সেখানে আবেদন প্রক্রিয়া তুলনামূলক কঠিন। এছাড়া পর্যাপ্ত ভিসাও দেওয়া হয় না।”সমাধানের পদক্ষেপ হিসেবে তিনি জানান, বাংলাদেশি নাগরিকদের সুবিধার্থে ভিসা আবেদনের স্থানে বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে, যাতে তারা দিল্লির বাইরে থেকেও আবেদন করতে পারেন।ভোরের আকাশ//হ.র
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই জাতির যথেষ্ট ক্ষমতা আছে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য। তারুণ্য ও সৃজনশীলতা আমাদের শক্তি। এই শক্তি আর সুযোগ আমাদের আছে। এটাকে কাজে লাগাতে হবে। আত্মনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলে জাতিকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে হবে। আমরা আর দাসত্বের মধ্যে থাকতে চাই না।বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের উত্তরণকে মসৃণ ও টেকসই করার লক্ষে প্রণীত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভা শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের কাছে এটা পরিষ্কার হতে হবে যে আমরা আর পরনির্ভর হতে চাই না। আমাদেরকে স্বনির্ভর হতে হবে। এখন যেহেতু পরনির্ভর হয়ে আছি। এর থেকে যত দ্রুত সম্ভব বের হওয়ার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এর বাইরে আর কোনো কথা নাই।তিনি বলেন, এজন্য আমাদের অভ্যাস পাল্টাতে হবে। আত্মনির্ভর হতে গেলে বুদ্ধি খাটাতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে, লড়াই করতে হবে। এটা কঠিন হলেও এ কাজে আনন্দ আছে। আমরা যে নতুন বাংলাদেশের কথা বলি, নতুন বাংলাদেশ মানেই হলো স্বনির্ভর বাংলাদেশ।সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এনবিআর চেয়ারম্যান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত, তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী , এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।এছাড়া বিজিএমইএ’র সভাপতি, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতিও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহের নিজস্ব আচরণবিধি (কোড অভ্ কনডাক্ট) প্রণয়ন করে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।বুধবার (৮ই অক্টোবর) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।বেসরকারি টিভি চ্যানেলের আচরণবিধি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আরও বলেন, বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহ তাদের আচরণবিধি জনসম্মুখে প্রকাশ করলে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবেন— তারা সেটি মেনে চলছে কি না। এতে চ্যানেলসমূহের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা বাড়বে।মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, কেব্ল টিভি ডিজিটালাইজ করার জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনরায় সভা করা হবে। সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে কেব্ল টিভি ডিজিটালাইজেশনের বিষয়ে সরকার একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে।মাহফুজ আলম বলেন, টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) বিষয়েও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে দ্রুত একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছা সম্ভব হবে বলেও উপদেষ্টা আশাপ্রকাশ করেন।মতবিনিময় সভায় অ্যাটকোর প্রতিনিধিরা কেব্ল টিভি ডিজিটালাইজেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা কেব্ল টিভিকে ডিজিটালে রূপান্তরের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জন্য কোনো আইন বা নীতিমালা প্রণয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নেওয়া জন্য অ্যাটকোর পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সভায় অ্যাটকোর নেতৃবৃন্দ জানান, বর্তমানে বেসরকারি চ্যানেলের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ বা চাপ নেই।মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, অ্যাটকোর কোষাধ্যক্ষ জহির উদ্দীন মাহমুদ মামুন, পরিচালক মোস্তফা কামাল, পরিচালক আব্দুস সালাম, পরিচালক নাভিদুল হক ও পরিচালক টিপু আলম মিলন উপস্থিত ছিলেন।মতবিনিময় সভার আগে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।ভোরের আকাশ/জাআ