সংগৃহীত ছবি
দেশে ৮ আগস্ট পর্যন্ত আগামী ১০ দিন অনলাইন ও অফলাইনে সংঘবদ্ধ প্রচারণার মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ। দলটির কিছু নেতাকর্মী এ সময় সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, বিশৃঙ্খলা কিংবা ভাঙচুর চালাতে পারে বলেও ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমন আশঙ্কা করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে একটি বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। চিঠিটি পাঠানো হয়েছে ডিএমপি কমিশনার, সিটি এসবি, বিভাগীয় উপ-পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম ও খুলনার স্পেশাল পুলিশ সুপারসহ দেশের সব জেলা পুলিশ সুপারের কাছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘এই সময়ে ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো দেশব্যাপী অনলাইন ও অফলাইনে উসকানিমূলক প্রচারণা চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে বা উসকানি সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টাও হতে পারে।’
এমন পরিস্থিতিতে দেশের সকল ইউনিটকে নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা কার্যক্রম তীব্র করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।
নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা। এছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, জুলাই-আগস্ট পুরোটা সময়ই সতর্কতার; তবে এই কয়েকদিনের আইনশৃঙ্খলা সতর্কতা সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশনার বিষয়ে কিছু জানা নেই।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত বন্ধ থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আলাদা বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমদ ভূঞার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সরকার প্রতিবছর ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ (সাধারণ ছুটিসহ) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগ ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আগামী ৫ আগস্ট সাধারণ ছুটির আওতাভুক্ত থাকবে।আরেক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে সরকার প্রতিবছর ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ (সাধারণ ছুটিসহ) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।এমতাবস্থায়, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দেশের সব অধস্তন আদালত ট্রাইব্যুনাল আগামী ৫ আগস্ট সাধারণ ছুটির আওতাভুক্ত থাকবে।ভোরের আকাশ/জাআ
দেশজুড়ে পুলিশ প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদল হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার ১১ কর্মকর্তাকে বদলি করে নতুন দায়িত্বে নিয়োগ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের মধ্যে আছমা আরা খান জাহানকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (পিবিআই), বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজওয়ান আহমেদকে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে এবং রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আহসান খানকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) পদায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ বি এম মুজাহিদুল ইসলামকে বদলি করে পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।সহকারী পুলিশ সুপারদের মধ্যে বদলি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন:সাইফুল ইসলাম খান (পুলিশ সদর দপ্তর) – ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা সার্কেলআরিফ হোসেন (সিএমপি) – যশোর জেলার নাভারন সার্কেলসাজিদ হোসেন (এটিইউ) – নৌ পুলিশেসৈয়দ ফয়েজ আহমেদ (পুলিশ সদর দপ্তর) – টিডিএস শাখায়আজম খান (কেএমপি) – ফরিদপুর জেলার মধুখালী সার্কেলমো. আসাদুজ্জামান (ডিএমপি) – আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন)মো. ফারমান আলী (এপিবিএন) – নোয়াখালী পিটিসিতেপুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও দক্ষ করে তুলতেই এই বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।ভোরের আকাশ//হ.র
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৃতীয় দফা বাণিজ্য আলোচনা মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে। আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান তিন দিনের এ আলোচনায় অংশ নিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম মঙ্গলবার রাত ১০টায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিষয়ে আগের আলোচনাগুলোর ভিত্তিতে এবার তৃতীয় দফার বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ।উল্লেখ্য, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে উভয় দেশ নিয়মিত এই আলোচনায় অংশ নিচ্ছে।ভোরের আকাশ//হ.র
জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মারণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছেন তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক মামলায় চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি এ তথ্য দেন। পাঁচ পৃষ্ঠার ওই জবানবন্দির অনুলিপি সম্প্রতি ঢাকা পোস্টের হাতে এসেছে।জবানবন্দিতে চৌধুরী মামুন উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম, গুম, খুন এবং জুলাই আন্দোলন দমনের নানা দিক নিয়ে আলোচনার জন্য প্রতিনিয়ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হতো। এসব বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবির তৎকালীন প্রধান হারুন অর রশীদ, র্যাব মহাপরিচালক, আনসারের ডিজি, এনটিএমসির জিয়াউল আহসানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নিতেন।চৌধুরী মামুন তার জবানবন্দিতে জানান, আন্দোলনকারীদের দমন করতে প্রথমে ছয়জন সমন্বয়ককে আটক করা হয় এবং ডিবি কার্যালয়ে এনে মানসিক চাপে রাখার পাশাপাশি আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য গণমাধ্যমে বিবৃতি দিতে বলা হয়। তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হারুনকে “জিন” নামে ডাকতেন—কারণ, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে হারুন ছিলেন সবচেয়ে কার্যকর ব্যক্তি।আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর বিষয়ে মামুন বলেন, “আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতিতে রাখার জন্য নজরদারি এবং গুলি চালানোর গোপন পরিকল্পনা হয়। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয় র্যাবের তৎকালীন ডিজি হারুন অর রশিদের পরামর্শে।”তিনি আরও বলেন, আন্দোলন প্রবণ এলাকায় ব্লক রেইড ও মারণাস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ছিল রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই তাকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা বলে লেথাল উইপন (মারণাস্ত্র) ব্যবহারের কথা জানান। সেই সময় ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব এবং ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারে অতিউৎসাহী ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।জবানবন্দিতে আরও দাবি করা হয়, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অনেকে মারণাস্ত্র ব্যবহারে উৎসাহ ও নির্দেশনা দিয়েছিলেন।সরকার পতনের দিন নিজের অবস্থান নিয়ে মামুন বলেন, “৫ আগস্ট বিকেলে একটি হেলিকপ্টার পুলিশ সদর দপ্তরে আসে। আমি ওই হেলিকপ্টারে করে তেজগাঁও বিমানবন্দর হয়ে সেনানিবাসে আশ্রয় নিই।”জবানবন্দির শেষাংশে তিনি আন্দোলনে গুলি চালিয়ে হতাহত হওয়ার ঘটনায় অনুতপ্ত বলে মন্তব্য করেন এবং সেই সময়ের পুলিশপ্রধান হিসেবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে জবানবন্দির পুরো অংশে নিজের সরাসরি ভূমিকার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন তিনি।আদালতে সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশের অঙ্গীকারে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যেই গ্রহণ করেছে।ভোরের আকাশ//হ.র