ছবি: সংগৃহীত
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই পর্বে সপ্তম দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে রোববার। আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
আজকের সভায় আলোচনার বিষয়গুলো হচ্ছে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি; দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ; উচ্চকক্ষের নির্বাচন পক্রিয়া এবং উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা। আলোচনায় সংস্কার প্রস্তাবের অমীমাংসিত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে জানা গেছে। আগের আলোচনায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহে নিয়োগ প্রসঙ্গে থেকে ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি)’ গঠনের প্রস্তাব থাকলেও, তা থেকে সরে এসেছে ঐকমত্য কমিশন।
এর পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ গঠনের নতুন প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। তবে এতে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে উল্লেখ করে বিএনপি এ প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী পদে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, এমন প্রস্তাবনায় কিছু শর্তসাপেক্ষে বিএনপি সম্মতি জানিয়েছে। বিগত বৈঠকে, সংবিধানের মূলনীতি সংক্রান্ত প্রস্তাবে বাম ও কিছু রাজনৈতিক দল ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।
এছাড়া সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাবও বেশিরভাগ দল ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। ১০০ আলাদা নারী আসনের বিষয়েও অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়েও আলাপে অনেকটাই এগিয়েছে রাজনৈতিকদলগুলোর মধ্যে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভেঙে পড়ে পুলিশ বাহিনী। অনেক পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগদান করে কয়েকদিন পর উধাও হয়ে যান। অনেকে ছুটি নিয়েও অনুপস্থিত অনেকে আবার ছুটি না নিয়েও উধাও হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে যোগ না দেওয়া এমন ঊর্ধ্বতন ১৩ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার।রোববার (২৯ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে ১৩টি পৃথক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। গত ২৬ জুন প্রজ্ঞাপনগুলোতে সই করেন উপসচিব নাসিমুল গনি।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(গ) অনুসারে পলায়নের অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় বিধি ১২ উপবিধি (১) অনুযায়ী তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৩ জন বরখাস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন পুলিশ সুপার, আটজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও দুজন সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তারা হলেন, পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার শাহজাহান, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হাছান, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর হাছান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ আলম আখতারুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম শামীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়রুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিশু বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্যা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুবাইয়াত জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান, রাজারবাগ পুলিশ টেলিকম ভবনের এএসপি মাহমুদুল হাসান, উখিয়া এপিবিনের এএসপি ইমরুল।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১৬ জুলাইকে ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একইসঙ্গে ৫ আগস্ট ‘গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার (২৯ জুন) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস এবং ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৮ আগস্ট কোনো বিশেষ দিবস উদযাপন হবে না। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা তৈরি হয়। এরই প্রেক্ষাপটে ৮ আগস্ট দিবস পালনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হলো।এর আগে গত বুধবার (২৫ জুন) অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন ৮ আগস্টকে নতুন বাংলাদেশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিল সরকার। এ ছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের নিহতের দিনটি ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ দিবস ঘোষণা করে পৃথক পরিপত্র জারি করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। এছাড়া ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ এবং ১৬ জুলাইকে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২৯ জুন) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, উপদেষ্টা পরিষদ ১৬ জুলাই শহীদ দিবস এবং ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৮ আগস্টের জন্য কোনো বিশেষ উদযাপন হবে না।এর আগে গত বুধবার (২৫ জুন) ৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ দিবস ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ দিবস ঘোষণা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আলাদা পরিপত্র জারি করা হয়েছিল।পরিপত্রে দিবসটিকে প্রতি বছর যথাযথ মর্যাদায় প্রতিপালন করতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে অনুরোধ করা হয়েছিল। দিবসটি পালনের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরিপত্রের ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছিল।তবে আজ সেটি বাতিল হয়ে গেল।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, আমরা আশা করেছিলাম আবু সাঈদের শাহাদাত বার্ষিকীতেই সবাই মিলে সনদে স্বাক্ষর করতে পারব। সেটা কতটা সম্ভব হবে, তা আপনাদের ওপর নির্ভর করে। আমরা খানিকটা শঙ্কিত, সে জায়গায় যাবো না। তবে এটা বলতে পারি, জুলাই মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া একটা পরিণতির দিকে যেতে হবে।রোববার (২৯ জুন) সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার সপ্তম দিনের বৈঠকের শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, ‘পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে ঐকমত্য কমিশন আগের জায়গা থেকে সরে এসেছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়েছে। এখন দলগুলোকেও কিছুটা ছাড় দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিপক্ষ নয়, বরং আমরা সবাই মিলে একটি দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। রাজনৈতিক দলগুলোই আগামীতে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন করবে। জনআকাঙ্ক্ষার বাইরে গিয়ে যাতে কেউ সংবিধান সংস্কার করতে না পারে, তা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করা দরকার। সেই সাথে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।’জুলাই অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকেরই দল রয়েছে এবং থাকবে। কিন্তু অভ্যুত্থানের সময় কোনও দলের পতাকা উত্তোলিত হয়নি। সেদিন শুধু বাংলাদেশের পতাকাই উড়ানো হয়েছিল।’আলী রীয়াজ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সময় দেশের স্বার্থে সবাই এক হয়েছিলাম। কে নেতৃত্ব দিচ্ছে বা কে পাশে আছে, সে চিন্তা আমরা করিনি। ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হওয়া ও ফ্যাসিবাদী শাসন তৈরির কাঠামো পরিবর্তন করাই ছিল আমাদের লক্ষ্য।’তিনি আরও বলেন, ‘গত ৭ দিন ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি হলেও আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে খানিকটা পিছিয়ে রয়েছি। ‘জুলাই অভ্যুত্থানের অঙ্গীকারের জায়গায়’ আমরা কতটুকু থাকতে পেরেছি? শুধু ব্যক্তি বা দলের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হবে, নাকি রাষ্ট্র ও দেশের স্বার্থকে আমরা আরেকটু বিবেচনায় নেব এটা আমাদের ভাবতে হবে।’ভোরের আকাশ/এসএইচ