দাঁতের যত্নে সচেতন হোন: টুথব্রাশ কতদিন ব্যবহার করা উচিত?
দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় নিয়মিত দাঁত মাজা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, অনেকেই যে বিষয়টি অবহেলা করেন তা হলো—টুথব্রাশের সঠিক ব্যবহার ও সময়মতো পরিবর্তন। চিকিৎসকদের মতে, পুরোনো টুথব্রাশ ব্যবহার দাঁতের ক্ষতির পাশাপাশি শরীরের নানা রোগের কারণও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি দুই থেকে তিন মাস পরপর টুথব্রাশ বদলানো উচিত। তবে কারও ব্যবহার বেশি খসখসে হলে এই সময় আরও কম হতে পারে। তিন মাসের বেশি একটি টুথব্রাশ ব্যবহার করা একেবারেই ঠিক নয়।
এছাড়া ভাইরাল জ্বর, সর্দি বা কাশি থেকে সেরে ওঠার পর অবশ্যই টুথব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে। কারণ, অনেক সময় রোগ সেরে গেলেও জীবাণু ব্রাশে রয়ে যায়, যা পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
টুথব্রাশের সঠিক যত্নে যা করবেন:
১. বাড়ির সব সদস্যের ব্রাশ আলাদা করে রাখুন। যদি একই পাত্রে রাখতে হয়, তাহলে প্রতিটি ব্রাশে ঢাকনা দিন। এতে এক ব্রাশ থেকে অন্যটিতে জীবাণু ছড়ানো কমবে।
২. ব্রাশ কখনোই বেসিনের পাশে বা বাথরুমে খোলা অবস্থায় রাখবেন না। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে ব্যাকটেরিয়া সহজেই জন্ম নিতে পারে।
৩. ব্রাশ নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করুন। সপ্তাহে একবার গরম পানিতে ধুয়ে নিতে পারেন বা কিছুক্ষণ মাউথওয়াশে ভিজিয়ে রাখলে ভালো ফল মিলবে।
দাঁতের সঠিক যত্ন শুধু দাঁতই নয়, পুরো শরীরকেই সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই দাঁতের পাশাপাশি টুথব্রাশের প্রতিও যত্নবান হোন। নিয়মিত টুথব্রাশ পরিবর্তন করে দাঁতের সমস্যা ও সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
জীবনের নানা দুশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তা ও ভবিষ্যতের ভাবনা আমাদের অনেককেই ‘ওভার থিংকিং’ বা অতিরিক্ত চিন্তার মধ্যে ফেলে দেয়। প্রথমদিকে বিষয়টি গুরুত্ব না পেলেও, দীর্ঘসময় ধরে এই মানসিক চাপ দুশ্চিন্তা, হতাশা এমনকি মানসিক অবসাদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়মতো কিছু সহজ উপায় অনুসরণ করলেই অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু কার্যকর কৌশল—১. কখন অতিরিক্ত চিন্তা করছেন, তা বুঝে নিননিজেকে মানসিক চক্রে আবদ্ধ মনে হলে একটু থামুন। যদি লক্ষ্য করেন—একই বিষয় নিয়ে বারবার ভাবছেন বা বিষয়টি আগের চেয়ে আরও বেশি উদ্বেগ সৃষ্টি করছে, তাহলে বুঝতে হবে আপনি অতিরিক্ত চিন্তার ফাঁদে পড়েছেন। এই ‘সচেতনতা’ই মুক্তির প্রথম ধাপ।২. মনকে ফিরিয়ে আনুন বর্তমানেঅতিরিক্ত চিন্তা অনেক সময়ই অতীতের স্মৃতি বা ভবিষ্যতের শঙ্কা ঘিরে আবর্তিত হয়। এর থেকে মুক্তি পেতে নিজেকে ‘বর্তমানে’ ফিরিয়ে আনুন। সহজ কিছু পদ্ধতি যেমন—গভীর নিঃশ্বাস, চারপাশের দৃশ্য পর্যবেক্ষণ, বা আশপাশের জিনিসের স্পর্শ অনুভব আপনাকে এখানে-এখনে স্থির করতে সাহায্য করবে।৩. চিন্তার জন্য নির্ধারিত সময় রাখুনসারাদিন অকারণে ভাবনার ঘূর্ণিতে না পড়ে প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট সময় রাখুন কেবল চিন্তা করার জন্য। এই সময়েই আপনি সমস্যা বিশ্লেষণ ও সমাধানের চেষ্টায় মনোযোগ দিন। অন্য সময় কিছু মনে পড়লে নিজেকে বলুন—“এটা চিন্তার সময় ভাববো।”৪. শরীরকে ব্যস্ত রাখুনওভার থিংকিং থেকে মুক্তির কার্যকর উপায় শারীরিক পরিশ্রম। হাঁটা, হালকা ব্যায়াম, ঘর পরিষ্কার বা এমন কিছু করুন যাতে শরীর ব্যস্ত থাকে। এতে মন নিজেই চিন্তার জাল থেকে সরে এসে নতুন কাজে নিবিষ্ট হয়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ছোট এই অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে মানসিক চাপ কমাতে এবং মানসিক সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই চিন্তার ভারে জর্জরিত না হয়ে, নিজের প্রতি সচেতন হোন—শান্ত থাকুন।ভোরের আকাশ//হ.র
বর্ষার শুরুতে বাজারে পাওয়া যায় সাদা-গোলাপি রঙের রসে ভরা ফল জামরুল। যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ওয়াটার অ্যাপল। খুবই কম দামে সহজলভ্য হওয়ায় এই ফলটিকে অনেকেই তেমন গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।পুষ্টিবিদরা বলেন, অবহেলিত এই জামরুলই স্বাস্থ্যগুণের খনি। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস রোগী, তাদের জন্য খুবই উপকারী। আর ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের মহৌষধ হচ্ছে জামরুল।কী কী পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় জামরুলে, চলুন জেনে নেওয়া যাক—জামরুল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ এবং অন্যান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এ উপাদানগুলো শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে এবং নানা সংক্রমণ ও অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি জোগায়।আর শরীর সতেজ রাখে জামরুল। গরমের সময় ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। জামরুলের প্রায় ৯০ শতাংশই পানি। তাই জামরুল খেলে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।সেই সঙ্গে হজমশক্তি বাড়িয়ে তোলে। এতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার থাকে। সে কারণে ফাইবার হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।এ ছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে জামরুল। এতে ‘জ্যাম্বোসিন’ নামক একটি অ্যালকালয়েড যৌগ থাকে। এটি খাদ্যশর্করাকে চিনিতে রূপান্তরিত হতে বাধা দেয়। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও নিচের দিকে থাকায় ডায়াবেটিস রোগীরা নিশ্চিন্তে এই ফল খেতে পারেন।শুধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেই নয়; ওজনও কমিয়ে দেয়। জামরুলে ক্যালরির পরিমাণ অত্যন্ত কম এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে বারবার খাবার খাওয়ার প্রবণতাও কমে। যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য এই ফল হতে পারে আদর্শ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নিজেকে বদলাতে চান? আরও ফোকাসড, ইতিবাচক এবং সুস্থ হতে চান? তাহলে রাতারাতি বড় পরিবর্তনের চেয়ে ছোট, টেকসই অভ্যাসই হতে পারে আপনার সেরা সহযাত্রী।একসাথে অনেক কিছু বদলানোর চেষ্টা করলে ক্লান্তি চলে আসে। কিন্তু হার্ভার্ডসহ বিভিন্ন গবেষণা বলছে—মাত্র ৫০ দিনের জন্য সাতটি ছোট অভ্যাস নিয়মিত মেনে চললে বদলে যাবে আপনার চিন্তা, শক্তি, মনোযোগ এবং জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি।চলুন জেনে নিই, সেই ‘লাইফ-চেঞ্জিং ৭ অভ্যাস’ কী—১. ঘুম নয়, এটি আপনার বডি-রিচার্জ মেশিনপ্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম দিন। তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস, নির্দিষ্ট ঘুমের সময় এবং স্ক্রিন টাইম কমানো—এই তিনটি অভ্যাসই স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ ও শরীরচর্চায় দারুণ উন্নতি আনবে।২. সকালের এক ঘণ্টা ফোন ছাড়া কাটানদিন শুরু হোক শান্তভাবে। সকাল সকাল ইনস্টাগ্রাম নয়, নিজেকে সময় দিন। হালকা স্ট্রেচিং, জার্নাল লেখা, কিংবা নিঃশব্দে কিছুক্ষণ বসে থাকাও হতে পারে আপনার শক্তির ‘পাওয়ার ব্যাংক’।৩. প্রতিদিন অন্তত ৩০–৬০ মিনিট মুভমেন্ট করুনজিমে না গেলেও চলবে। হাঁটা, যোগব্যায়াম, সাঁতার কিংবা নাচ—যা করতে ভালো লাগে, সেটিই করুন। নিয়মিত শরীরচর্চা শুধু শারীরিক ফিটনেস নয়, মানসিক প্রশান্তিও বাড়ায়।৪. দিনে মাত্র ১০ পৃষ্ঠা পড়া, কিন্তু প্রভাব বিশালবই পড়ার অভ্যাস মনকে সচল, সৃষ্টিশীল ও দৃঢ় করে তোলে। যেকোনো আগ্রহের বই হতে পারে সঙ্গী। প্রতিদিন ১০ পৃষ্ঠা পড়ুন—সতর্ক থাকবেন আপনি নিজের ভাবনাতেই পরিবর্তন দেখতে শুরু করবেন।৫. নতুন কিছু শেখার জন্য প্রতিদিন এক ঘণ্টা দিন নিজেকেচাকরি বা সংসারের বাইরেও শেখা চালিয়ে যান। ডিজিটাল স্কিল, নতুন ভাষা, লেখালেখি বা নিজের কোনো শখ—যেকোনো কিছুতে প্রতিদিন এক ঘণ্টা সময় দিলে তৈরি হবে নতুন সম্ভাবনার দরজা।৬. খাবার রাখুন সহজ, স্বাস্থ্যকর এবং সুষমপ্যাকেটজাত খাবার নয়, বেছে নিন ঘরে তৈরি খাবার। বেশি শাকসবজি, ফল, এবং প্রচুর পানি খান। কম চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। আপনার শক্তি ও মানসিক ফোকাসে পার্থক্য বুঝবেন নিজেই।৭. দিনের শেষে ১০ মিনিট শুধু নিজের সঙ্গে থাকুনঘুমানোর আগে মাত্র ১০ মিনিট চোখ বন্ধ করে গভীর নিঃশ্বাস নিন, ধ্যান করুন অথবা কেবল চুপচাপ থাকুন। এটি ঘুমের মান বাড়াবে এবং দিনশেষে মানসিক প্রশান্তি এনে দেবে।শেষ কথা:নিজেকে বদলাতে বড় পরিকল্পনার প্রয়োজন নেই। বরং এই ছোট, সহজ অভ্যাসগুলোই ৫০ দিনের মধ্যে এনে দিতে পারে এক নতুন আপনি। আজই শুরু করুন—কারণ পরিবর্তনের জন্য আগামীকাল নয়, আজই সেরা দিন।ভোরের আকাশ//হ.র
অনেকেরই অভ্যাস—পেছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখা। কিন্তু সামান্য এই অভ্যাসই ডেকে আনতে পারে একাধিক জটিল শারীরিক সমস্যা। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে পেছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখার ফলে কোমর, পিঠ, এমনকি পেলভিস এবং সায়াটিকা নার্ভ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।গবেষকদের মতে, মানিব্যাগে থাকা কঠিন বস্তু যেমন—কার্ড, কয়েন বা কাগজপত্রের কারণে বসার ভঙ্গিতে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে পড়ে, এবং চাপ পড়ে মেরুদণ্ড ও আশপাশের স্নায়ুতে।পেলভিসের ওপর চাপ বাড়ায় ঝুঁকিমানুষ যখন বসে থাকে, তখন পেলভিস অংশ মাটির সঙ্গে অনুভূমিক না থেকে একটু কাত হয়ে থাকে, বিশেষত পকেটে মোটা মানিব্যাগ থাকলে। এই অবস্থায় মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ব্যথা বা ক্ষতির সৃষ্টি হয়।সায়াটিকা নার্ভে প্রভাবপেলভিসের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া সায়াটিকা নার্ভ দীর্ঘক্ষণ চাপের মুখে থাকলে দেখা দেয় সায়াটিকা ব্যথা—যা পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এটি অনেক সময় অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে।পিঠ ও কোমরের ব্যথাসঠিক ভঙ্গিতে না বসার কারণে মেরুদণ্ডে যে চাপ সৃষ্টি হয়, তা সরাসরি প্রভাব ফেলে পিঠ ও কোমরে। এতে করে দীর্ঘমেয়াদে পিঠ ও কোমরের ব্যথা নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠে।ওয়ালেট সিনড্রোমচিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ওয়ালেট সিনড্রোম বা পিরিফরমিস সিনড্রোম। মানিব্যাগের কারণে নিতম্বের পেশিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং তা সংকুচিত হয়ে গিয়ে এই সিনড্রোমের জন্ম দেয়।অবশ হয়ে যেতে পারে নিম্নাঙ্গদীর্ঘক্ষণ একই অবস্থায় বসে থাকলে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়। পেছনের পকেটে মানিব্যাগ থাকলে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এতে নিম্নাঙ্গে অবশভাব অনুভূত হতে পারে।বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—যতটা সম্ভব মানিব্যাগ সামনের পকেটে রাখা বা হালকা ওয়ালেট ব্যবহার করা উচিত, যাতে শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকে এবং এই স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলো এড়ানো যায়।সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমসভোরের আকাশ//হ.র