স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৫ ০৭:০৩ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
ফুলবাড়ী চুক্তির ৬ দফা পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবিতে মাঠে নেমেছে শিশু-কিশোররা। শিশু-কিশোরদের জাতীয় সংগঠন ‘মৃত্তিকা খেলাঘর’ গতকাল মঙ্গলবার দিনাজপুরের ফুলবাড়ী শহরে আলোচনা, সমাবেশ ও র্যালির আয়োজন করে। এতে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাথায় জাতীয় পতাকা, বুকে কালো ব্যাচ ধারণ করে র্যালিতে অংশ নেয়। ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবসের আলোচনা শেষে বর্ণাঢ্য র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে অন্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় খেলাঘর জাতীয় পরিষদের সদস্য ও ফুলবাড়ী মৃত্তিকা খেলা ঘরের উপদেষ্টা কমরেড এসএম নুরুজ্জামানের পশ্চিম গৌরীপাড়া বাসভবনে আলোচনা সভা হয়। এসএম নুরুজ্জামানের পৃষ্ঠপোষকতায় ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসিম বাবুর নেতৃত্বে র্যালিটি বের হয়।
আলোচনা সভায় উন্মুক্ত কয়লা খনিবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা এসএম নুরুজ্জামান বলেন, কয়লা খনিবিরোধী আন্দোলন থেকে সরে আসার জন্য অনেক অর্থ-বিত্তের প্রলোভন এসেছিল কিন্তু জাতীয় ও জনস্বার্থ রক্ষার এ আন্দোলন থেকে এক পাও সরে আসিনি। এজন্য পরবর্তীতে সব থেকে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছি আমি। বহুজাতিক বিদেশি কোম্পানি এশিয়া এনার্জি কর্তৃক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার আসামীও হতে হয়েছে।
তিনি বলেন, সেদিন আমরা ৩ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বসত-ভিটা, ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রাণ-প্রকৃতি ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় ফুলবাড়ী চুক্তি করেছি বলেই ১৯ বছর পর আজ তোমরা এর সুফল ভোগ করছো। তা না হলে এ অঞ্চল বিশাল এক বিরাণ ভূমিতে পরিণত হতো। হয়তো তোমরা তোমাদের পিতা-মাতারা অন্য কোথাও উদ্বাস্তু হতো।
অন্যদিকে দিবসটি উপলক্ষে ৬ দফা বাস্তবায়নে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিপ্লবী জনতা শহীদ বেদীতে সমাবেত হয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সেখানেও তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ রক্ষার জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সভাপতিত্বে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ও দেশ বরেণ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ প্রধান অতিথির ভাষণে বলেন, মানুষ, প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো উন্নয়ন হতে পারে না।
ফুলবাড়ীর গণঅভ্যুত্থান বিশ্ববাসীকে উন্নয়নের নতুন দিশা দিয়েছে। তিনি বলেন, ফুলবাড়ী চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ সরকারকে রাষ্ট্র সংস্কারের মহাপরিকল্পনায় এগিয়ে যেতে হবে। ৬ দফা চুক্তির মধ্যে ছিল এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী তথা দেশ থেকে বহিষ্কার করা, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি ফুলবাড়ীসহ দেশের কোথাও না করা, বিডিআরের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, গুলিবর্ষণসহ হতাহতদের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত কমিশন গঠন করা, শহীদদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ এশিয়া এনার্জির দালালদের গ্রেপ্তার করে প্রতিহত করা, আন্দোলনকাবীদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা এবং নতুন কোনো মামলা না করা।
ভোরের আকাশ/জাআ