পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৫ ০৯:৫২ এএম
পাথরঘাটা পৌরসভায় বর্জ্য ও পানি অব্যবস্থাপনার চরম ভোগান্তি
পাথরঘাটা পৌর শহরে ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পৌরবাসীরা। বাসাবাড়ির প্রতিদিনকার বর্জ্য ফেলার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় পৌরবাসীরা বাধ্য হয়ে শহরের রাস্তার ধারে কিংবা খোলা স্থানে ময়লা ফেলে দিচ্ছেন। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ দূষণ, দুর্গন্ধ ও রোগজীবাণুর সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইমান আলী সড়ক এখন ময়লার ভাগারে পরিণত হয়েছে। রাস্তার দুই পাশে স্তূপ হয়ে থাকা বর্জ্য শহরের সৌন্দর্য যেমন নষ্ট করছে, তেমনি জনস্বাস্থ্যকেও হুমকির মুখে ফেলছে।
সচেতন মহলের মতে, এভাবে খোলা জায়গায় ময়লা ফেলা চলতে থাকলে ডেঙ্গু, টাইফয়েড, চর্মরোগসহ নানা রোগবালাই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা বলেন, পৌরসভার উচিত এখনই ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করা এবং বাসাবাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহের কার্যক্রম চালু করা।
উল্লেখযোগ্য যে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক রোকনুজ্জামান খান পৌরবাসীদের ঘর থেকে ময়লা সংগ্রহের জন্য প্রতিদিন গাড়ির ব্যবস্থা করেছিলেন। তার উদ্যোগে শহরের পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থায় স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু তার পাথরঘাটা থেকে বদলির পর থেকে সেই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, যার পরিণতিতে আজকের এই ভোগান্তি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বাসিন্দা বাবুল সিকদার বলেন, কিছুদিন আগেও বাসা বাড়ির ময়লা নিতে গাড়ি আসতো, এখন কয়েক সপ্তাহ ধরে আর কেহ আসে না। না আসায় ময়লা বাধ্য হয়ে রাস্তার ধারে ফেলে দিচ্ছি। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, রোগবালায়ের ভয়ও আছে।
এছাড়া পৌর শহরের আরেকটি বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে সুপেয় পানির সংকট। অনেক বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, টানা এক সপ্তাহ ধরে বাসায় কোনো সাপ্লাই পানি নেই। এতে রান্নাবান্না, অজু-গোসল, টয়লেটসহ দৈনন্দিন কাজে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
আরেক পৌরবাসী জানান, পানির জন্য হাঁসফাঁস অবস্থা। কিনে পানি আনছি,প্রতিদিন তা সম্ভব নয়।এক সপ্তাহ ধরে পানি পাচ্ছি না। বাসা বাড়ির ধোয়া ফালার কাজ থেকে শুরু করে কোন কাজই করতে পারছি না।
এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ জানান, বর্জ্য ও পানি সংকটের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। দ্রুত ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ এবং পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে। জনগণের দুর্ভোগ লাগাবে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি ।
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। কাগজে-কলমে এটি এখন প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও বাস্তবে সেই মর্যাদার সেবা বা ব্যবস্থাপনার দেখা মেলে না। নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত না হওয়ায় পৌরবাসীরা দিন দিন চরম অসন্তোষে ভুগছেন। তারা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন পৌর প্রশাসনের কাছ থেকে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ