শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:৩৫ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চান্দেরচর হাট সংলগ্ন সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা ও মামলা–মোকদ্দমার কারণে সেতুর কাজ থেমে থাকায় তিন ইউনিয়নের মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। প্রায় দুই বছর ধরে অসমাপ্ত সেতুর কারণে অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে ১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক ৮ মিটার প্রস্থের সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স হা-মীম ইন্টারন্যাশনাল’ প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করলেও ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতায় বাকি কাজ থমকে আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা শিবচর, ভূমি, জটিলতা, জনদুর্ভোগ চরমেগেছে, সেতুর বাজার সংলগ্ন অংশের কিছু জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় জমির মালিক ওয়াহেদ আলী মৃধা মামলা করেন। ফলে প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সেতুটি নির্মিত হলে চান্দেরচর হাট, কাদিরপুর, দ্বিতীয়খন্ড ও কুতুবপুরসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ উপকৃত হবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর এক পাশের কাজ শেষ হলেও অন্য পাশ খোলা পড়ে আছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ কষ্ট করে বাঁশের সাঁকো ও অস্থায়ী পথ দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। বাজারের ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ বলছেন—সেতুটি এখন তাদের ‘কষ্টের সেতু’।
স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান মিয়া বলেন, “দুই বছর ধরে বাইপাস সড়ক দিয়ে ধান, পাট, সবজি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। এতে সময় ও খরচ দুটোই বেশি লাগছে। সরকারের কাছে অনুরোধ—দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করা হোক।”
চান্দেরচর হাটের ব্যবসায়ী ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন, “সেতুটি এলাকার প্রাণ। জমি সংক্রান্ত মামলার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা চাই, জমির মালিককে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করা হোক।”
অন্যদিকে জমির মালিক ওয়াহেদ মৃধার ছেলে আলমগীর মৃধা বলেন, “আমাদের জমি অধিগ্রহণ করা হলেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। আমরা আদালতের আশ্রয় নেই। এখন ভূমি অধিগ্রহণের কাগজ পেয়েছি। চাই, দ্রুত টাকা দিয়ে কাজটি শেষ করা হোক।”
শিবচর উপজেলা প্রকৌশলী কে. এম. রেজাউল করিম বলেন, “সেতুটির ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই বাকি কাজ দ্রুত শুরু হবে। আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।”
সেতুটি সম্পন্ন হলে এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা ও স্থানীয় অর্থনীতি বদলে যাবে—এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
ভোরের আকাশ/জাআ