বিসিআইসি সারের ডিলার
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৫ ১১:৪০ এএম
ছবি: ভোরের আকাশ
দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার ৬নং রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে বিসিআইসি সারের ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এতে টিএসপি (বাংলাদেশি ও আমদানিকৃত) ও এমওপি সার বিতরণে স্বচ্ছতার অভাব এবং কালোবাজারে অতিরিক্ত দামে বিক্রির অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
দিনাজপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামার বাড়ি) কাহারোল উপজেলার কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় ১০ দিন আগে একটি ‘তদন্ত টিম’ করার পরও ঈশানপুর ব্লকের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে।
কৃষকদের অভিযোগ অনুযায়ী, রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের মুটুনী হাটের ডিলার, এমএস ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর সোহরাফ আলীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রীর মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন ভাতিজি জামাতা মো. শামীম। একই সাথে কাহারোল বাজারের তোহিদ এন্টারপ্রাইজেরও অর্ধেক ডিলারশিপের সার বিতরণের দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়।
মো. শামীম হাটের দোকানে নিয়মিতভাবে উপস্থিত থাকেন না। জুলাই মাসের বরাদ্দকৃত ৩৬৬ বস্তা বাংলাদেশি টিএসপি এবং ২৮০ বস্তা আমদানিকৃত টিএসপি সার মুটুনী হাটে না রেখে তিনি দশ মাইলের নিজস্ব গোডাউনে রাখেন। পরবর্তীতে, সামান্য পরিমাণ সার (যেমন ১৩ জুলাই ৮০ বস্তা এবং ১৬ জুলাই ৬০-৭০ বস্তা) মুটুনী হাটের গোডাউনে আনা হয়।
কৃষকদের অভিযোগ, ডিলার শামীম নিয়মিত বাইরের দোকানদারদের কাছে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করেন। সরকারি নির্ধারিত মূল্য প্রতি বস্তা টিএসপি সার ১৩৫০ টাকা হলেও, কৃষকদের তা ২১০০-২২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এর ফলে, লাইনে দাঁড়িয়েও অনেক কৃষক খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।
তারা বলেন, রামচন্দ্রপুর ব্লকের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. তোফায়েল আহমেদ ডিলারের এই অনিয়মের সাথে জড়িত। তিনি সার মুটুনী হাটে জমা হয়েছে মর্মে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়েছিলেন।
কৃষকদের দাবি, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তোফায়েল আহমেদ তার পছন্দ মতো ব্যক্তিদের প্রদর্শনী ও প্রণোদনার উপকরণ দেন। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই সারের জন্য মুটুনী হাটে যাওয়া এক কৃষককে তিনি জানান, আমি কি দোকানদার যে যখন বলবেন তখন সার দেবে? তিনি রামচন্দ্রপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় না করেই নিজে সব উপকরণ বিতরণ করেন। যাদের নিজস্ব জমি নেই, তারা সার পাচ্ছেন, কিন্তু সাত বিঘা জমির মালিক হওয়া সত্ত্বেও নন-ইউরিয়া সার পাননি এমন কৃষকও আছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তোফায়েল আহমেদ ঈশানপুর ব্লক থেকে অন্য কোথাও বদলি করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন কৃষকরা ।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তোফায়েল আহমেদ বিষয়ে স্বীকার করেন, কিন্তু কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মল্লিকা রানি সেহানবীশ জানান, বিষয়টি তার জানা নেই।
ভোরের আকাশ/মো.আ.