ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫ ০৪:০১ পিএম
শ্রীপুরে ডাকাতের হামলায় নিহত পরিবারের পাশে বিএনপি
গাজীপুরের শ্রীপুরে ডাকাতের হামলায় নিহত সিএনজি অটোরিকশা চালকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামে বিএনপি’র পক্ষ থেকে ৮ সদস্যের পরিবারের পাশে দাঁড়ান দলটি।
এসময় তাদের খোঁজ খবর নেন। আইনগত সহায়তা প্রদানের আশ্বাসের পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক, জেলা ভিত্তিক নিপীড়িত নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেলের গাজীপুর জেলার প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডাঃ এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু।
ভিটেমাটি না থাকায় ৫ শতাংশ জমি দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
পরিবারের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন মেয়ে, দুই ছেলে, মা, বোন ও এক নাতনীকে সুখের সংসার ছিল ডাকাতের হামলায় নিহত সিএনজি অটোরিকশা চালক আবুল কালামের। আটজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম আবুল কালামকে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাতে শ্রীপুরের মাওনা-সাতখামাইর-বরমী আঞ্চলিক সড়কের সাতখামাইর বাজারের চেরাগআলী মাজার এলাকায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির সময় ডাকাতদল সিএনজি চালক আবুল কালামকে কুপিয়ে হত্যা করে।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে ৮ সদস্য নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় স্ত্রী পারুল আক্তারকে। স্বামীর মৃত্যুর পর অসহায় হয়ে পড়া পরিবারটির এমন অসহাত্বের খবর শুনে ছুটে যান অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এছাড়াও হত্যাকান্ডের ঘটনায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্দেশনায় গঠিত নিপীড়িত নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেল থেকে দেওয়া হবে।
নিহতের স্ত্রী পারুল আক্তার জানান, অন্যের জমিতে ৪০ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন তারা। সিএনজি চালিয়ে পরিবারের হাল ধরেছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম আবুল কালাম। দিনে ছেলে ও রাতে বাবা সিএনজি চালানোর পাশাপাশি কৃষি কাজ করতো সে। গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে তিনি সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বের হন। মধ্যরাতে ডাকাতের হামলায় আহত হওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবা আবুল কালামকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকায় নেয়া পরামর্শ দেন।
তিনি আরও বলেন, এসময় তাকে ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আবুল কালামের উপার্জনে তিনিসহ তিন মেয়ে, দুই ছেলে, মা ও বোনের সংসার অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন তারা।
পরিবারটির এমন খবর শুনে তাদের বাড়িতে যান বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। তিনি বলেন, যাত্রীসহ সিএনজি আটকে ডাকাতি করতে বাধা দেয়ায় চালককে নৃসংশভাবে হত্যা করে ডাকাত দল। এত বড় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সিএনজি। আমরা পরিবারটির পাশে থাকতে এখানে এসেছি। পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এছাড়াও হত্যাকান্ডের বিচার যাতে হয় তার জন্যও আইনগত সহায়তাও বিএনপি’র পক্ষ থেকে দেয়া হবে। পরিবারটির ভিটেমাটি বলতে কিছুই নেই, অন্যের জমিতে বসবাস করে। স্থানীয় সমাজ সেবক আব্দুল হেকিম ও তার দুই ভাই পরিবারটিকে পাঁচ শতাংশ জমি দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. মোসলেহ উদ্দিন মৃধা, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও ইউসিসিএ’র (বিআরডিবি)’র সভাপতি সাংবাদিক এসএম মাহফুল হাসান হান্নান, আহবায়ক সদস্য আবদুল হান্নান সজল, বিএনপি নেতা বশির আহমেদ কাজল, বিএনপি’র নেতা রমজান আলী, ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রিপন ফকির, যুবদল নেতা সালেহ আহমেদ প্রমুখ।
ভোরের আকাশ/জাআ