ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৩১ পিএম
ছবি- ভোরের আকাশ
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের ইয়াকুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভবন সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে এবং পাশের একটি এতিমখানার ভবনের কক্ষে চলছে পাঠদান। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।
তাদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ে পাঠদানের পরিবেশ নেই। দ্রুত একটি স্থায়ী বহুতল ভবন নির্মাণের পাশাপাশি মানসম্মত টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইয়াকুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালে দোতলা ভবন নির্মাণ করা হলেও ১০ বছরের মধ্যে তা ভেঙে পড়তে শুরু করে। ২০২০ সালে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এবং ২০২৫ সালের জুন মাসে নিলামের মাধ্যমে ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মিত জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ দুই কক্ষবিশিষ্ট ভবনে দুটি শ্রেণি কার্যক্রম এবং পাশের ইছহাকীয়া এতিমখানার মাদ্রাসা ভবনের কক্ষে পাঠদান চলছে। বর্তমানে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৫১ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে।
বিদ্যালয় সূত্র আরও জানায়, মূল ভবন ভেঙে ফেলার পর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৪৮৫ টাকায় তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি টিনশেড ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তবে কাজ শেষ হলেও দরজা, জানালা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, ফ্যান, লাইট কিছুই লাগানো হয়নি। ফলে ভবনটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এছাড়া বিদ্যালয়ে টয়লেট ও পানিরও কোনো সুব্যবস্থা নেই।
শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুল করিম বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে টয়লেট আছে তা ব্যবহার উপযোগী নয়। পানি নেই, বাইরে থেকে আনতে হয়। জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পড়াশোনা করছে ছেলেমেয়েরা। এতে আগামীতে ভর্তি কমে যাবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকলিমা আক্তার বলেন, নতুন টিনশেড ভবনে দরজা-জানালা, বৈদ্যুতিক ইনস্টলেশন, ফোরসিলিংসহ আসবাবপত্র দ্রুত সরবরাহ করা গেলে শ্রেণি কার্যক্রম চালানো যাবে। আমরা নতুন ভবনের জন্য আবেদন করেছি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য শাহীনা আক্তার জানান, বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাহীনতার মাঝে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলী আজগর বলেন, যেহেতু এলজিইডির মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে শ্রেণিকক্ষ নির্মিত হয়েছে, তাই এগুলো ব্যবহারোপযোগী করার কথা। কিন্তু এখনো তা হয়নি। আমি উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডিকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করব।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, নতুন ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। টিনশেড ভবনে দরজা-জানালা ও অন্যান্য উপকরণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরাদ্দ অনুমোদন হয়েছে।
ভোরের আকাশ/জাআ