সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৫ ০৭:১০ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
গাইবান্ধা সাঘাটা থানার সামনে থেকে কলেজ ছাত্র সিজুর লাশ উদ্ধারের ঘটনা হত্যার অভিযোগ এনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম ও ১২ পুলিশসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এতে অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনেকে আসামী করে আদালতে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে নিহত সিজুর মা রিক্তা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আল আসাদ।
বৃহস্পতিবার (২১ আগষ্ট) দুপুরে মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন গাইবান্ধার সাঘাটা আমলী আদালতের বিচারক পাপড়ী বড়ুয়া।
মামলার আসামীরা হলেন- সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম, থানার এসআই মশিউর রহমান, এসআই মহসিন আলী, এসআই উজ্জ্বল, ডিউটি অফিসার এএসআই লিটন মিয়া, এএসআই রাকিবুল ইসলাম, এএসআই আহসান হাবিব, পুলিশ সদস্য হামিদুল ইসলাম, আজাদুল ইসলাম, নয়ন চন্দ্র, জয় চন্দ্র ও পুলিশ সদস্য ধর্ম চন্দ্র বর্মন এবং স্থানীয় যুবক সাব্বির হোসেন, ইউসুফ ও মমিনুলসহ অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২৪ জুলাই বিকালে গাইবান্ধা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস চত্বর থেকে সিজুকে সাঘাটা থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। থানায় নির্যাতনের পর মৃতপ্রায় সিজুকে থানা সংলগ্ন পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। পরে পুকুরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে ওই পুকুর থেকে সিজুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাদীপক্ষের অপর আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহিদ হাসান জানান, বাদী পক্ষের আইরজীবীদের শুনানী গ্রহণ করে আদালতের বিচারক পাপড়ী বড়ুয়া মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এসময় মামলাটি তদন্ত করার জন্য সিআিইডকে নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার বাদী নিহত সিজুর মা রিক্তা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আদালতে মামলা করেছি। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
নিহত সিজু মিয়া (২৫) গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে এবং গিদারি ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের সভাপতি ও ডিগ্রী ২য় বর্ষের কলেজ ছাত্র ছিলেন।
উল্লেখ্য, পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২৪ জুলাই রাত দশটার দিকে গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে পুকুরে ঝাঁপ দেয় সিজু মিয়া। পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাঘাটা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের পুকুরের কচুরিপানার মধ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অজ্ঞাতনামা হিসেবে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। পরের দিন শনিবার পুকুরে সিজুকে পুলিশ কর্তৃক পেটানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় তোলপার সৃষ্টি হয়। পরে সেই দিনই গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কর্যালয় ঘেরাও করে এলাকাবাসি।
ঘটনাটি তদন্তে চলতি মাসের প্রথম দিকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনকে সভাপতি করে কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম ম্যানেজম্যান্ট ডিাইজি রংপুর রেঞ্জ রুনা লায়না ও গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলামকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তদন্তের কোন অগ্রগতি না থাকায় ও সিজু হত্যার জড়িতদের পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার নিহতের মা ঘটনার প্রায় মাস পরে আজ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ভোরের আকাশ/জাআ