সিপন আহমেদ, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫ ১০:৫৪ পিএম
সন্ধ্যার পর যানজটে অচল মানিকগঞ্জ শহর
ঈদুল আজহা সামনে রেখে জমে উঠেছে মানিকগঞ্জ শহরের বাজার। বিকেল গড়াতে না গড়াতেই শহরের দুধবাজার, খালপাড়, স্বর্ণকারপট্টি ও শহীদ রফিক সড়কে শুরু হয় যানবাহনের চাপ। সন্ধ্যার পরপরই তা রূপ নেয় তীব্র যানজটে। মঙ্গলবার (৩ জুন) রাত আটটার দিকে শহরের প্রধান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে নেই কোনো ট্রাফিক সদস্য। রিকশা, হ্যালোবাইক, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার চলছে এলোমেলোভাবে। নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ।
শহীদ রফিক সড়কটি শহরের ব্যস্ততম সড়কগুলোর একটি। তবে রাস্তাটির দুই পাশে পার্ক করা হয়েছে শতাধিক মোটরসাইকেল। মাঝখানে দাঁড়িয়ে ভ্যান বসিয়েছেন হকাররা। ফুটপাত নেই, হাঁটার জায়গাও নেই। ফলে বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনের সঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বললেন, "এই জট প্রতিদিন সন্ধ্যার পর হয়। ক্রেতারা এসে ফিরে যায়। আমাদেরও ক্ষতি হয়।"
পথচারী রবিউল ইসলাম বললেন, "এই শহরে রিকশা আর হ্যালোবাইক নিয়ন্ত্রণের কেউ নেই। ট্রাফিক পুলিশ চোখে পড়ে না।"
একই অভিযোগ করলেন আরও কয়েকজন পথচারী ও দোকান মালিক। কেউ কেউ বললেন, রাস্তায় চলতে ভয় লাগে। রিকশা ও মোটরসাইকেল চলে দেদারসে। নেই সিগনাল, নেই নির্দেশনা।
মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু বললেন, "গত ঈদে ট্রাফিক পুলিশকে সন্ধ্যায় মাঠে দেখা গিয়েছিল। এবার তাদের দেখা যাচ্ছে না। অথচ এই সময়ই বেশি প্রয়োজন। ঈদের অন্তত ১০ দিন তাদের রাতে দায়িত্বে থাকা জরুরি।"
তবে ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আব্দুল হামিদ বলেন, "আমাদের অধিকাংশ সদস্য এখন হাইওয়ে ডিউটিতে। তবে কোথাও সমস্যা হলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিই। খালপাড় এলাকায় লোক পাঠানো হচ্ছে।"
নাগরিকেরা বলছেন, সন্ধ্যার পর যখন শহরে বাড়ে ভিড়, ঠিক তখনই সরে যান ট্রাফিক পুলিশ। অথচ ঈদের সময় শহরে আসে আশপাশের উপজেলার হাজারো মানুষ। ফলে অল্প সময়েই চাপ পড়ে সড়কে।
বিজ্ঞজনেরা বলছেন, যানজট রোধে প্রয়োজন আগেভাগেই পরিকল্পনা। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ট্রাফিক মোতায়েন, ফুটপাত উচ্ছেদ, পার্কিং নিয়ন্ত্রণ ও রিকশা চলাচলে শৃঙ্খলা আনাই এখন জরুরি।
নাগরিকদের দাবি, ঈদ সামনে রেখে অন্তত আগামী এক সপ্তাহ সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে। না হলে এই জট আরও বাড়বে, দুর্ভোগও তেমনি দীর্ঘ হবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ