গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৫ ১০:১১ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির সদস্য নবায়ন, নতুন সদস্য সংগ্রহ ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এরই প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল করেছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে সুন্দরগঞ্জ ডি ডব্লিউ সরকারি ডিগ্রী কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নেতাকর্মী। মিছিলটি পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডি ডব্লিউ সরকারি ডিগ্রী কলেজে এসে শেষ হয়।
এতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকশত নেতাকর্মী অংশ নেন। এসময় নেতাকর্মীরা ফেস্টুন ও ব্যানার হাতে নিয়ে শ্লোগান দেয়।
তারা বলেন, 'সাদিকের দালালরা, হুশিয়ার সাবধান', 'সাদিকের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে', 'বাবুলের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে', মাহমুদুলের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে'সহ নানা শ্লোগান দিতে থাকেন। এছাড়াও জেলা বিএনপির সভাপতি মইনুল হাসান সাদিকের ছবি সম্বলিত কুশপুত্তলিকায় জুতা দিয়ে পেটানোর দাহ করা হয়।
পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা ওয়ার্ড কমিটি গঠনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ড কমিটি গঠনে ২ ঘন্টা করে সময় দিয়ে নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত দেয় জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু সদস্য সংগ্রহ ও কমিটি গঠনে করা হয় নানা অনিয়ম। মূলত ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা বিএনপি নেতা এবং উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব যোগসাজশ করে কমিটি গঠন করেন।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, ইতোমধ্যে সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলার কাপাসিয়া, ছাপড়হাটী, সোনারায়, বামনডাঙ্গা, রামজীবন, বেলকা ও সর্বানন্দ ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে ১'শ জন সদস্য নবায়ন ও নতুন করে ১'শ জন সদস্য সংগ্রহে মানা হয়নি কোন নিয়ম। নিজেদের মনোনীত ব্যক্তিদের আইডি কার্ড সংগ্রহ করে তাদেরকে ওয়ার্ড সদস্য করে সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। অথচ যাদেরকে মনোনীত করা হয়েছে তারা বিগত সময়ে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না, এমনকি তাদের অনেকেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী ও জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
এসময় বক্তারা দ্রুত উক্ত কমিটিগুলো বাতিল করে স্বচ্ছ ও দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠনের দাবি জানান। একইসঙ্গে যোগসাজশ ও অনিয়ম করে কমিটি গঠনে জড়িত জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিক, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাবুল আহমেদ, সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম প্রামাণিক এবং সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা বিএনপি আহ্বায়ক ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া নিপন ও সদস্য সচিব মিজানুর রহমান লিপুকে অপসারণসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম, উপদেষ্টা এমএ মালেক, সদস্য ও কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার আলম সরকার, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজমুল হুদা, বিএনপি নেতা আরেফিন আজিজ সরদার সিন্টু, পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক নাহমুদুল হক রাসেল,
এদিকে, বিভিন্ন ইউনিয়নের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রেখে সদস্য সংগ্রহ ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কর্মসূচী আয়োজন করায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে। এনিয়ে বিভিন্ন মহলের মাঝে নানা আলোচনা সমালোচনাও চলছে।
এরেইমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সমাবেশ না করার জন্য জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিক তার ফেসবুকে একটি পোষ্ট দিয়েছেন। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই পোষ্টে তিনি লেখন, 'সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সদস্য সংগ্রহ নবায়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনে স্কুলের পাঠ্যদান কার্যক্রম ব্যাহত না করে স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে মাঠ বা পার্শ্ববর্তী এলাকা ব্যবহার করতে হবে। শুধু মাত্র বোঝার ও সকলের সমবেত হবার জন্য স্কুলের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে।'
ভোরের আকাশ/জাআ