গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫ ০৩:৩৭ পিএম
ছবি : ভোরের আকাশ
উত্তরের দুই জেলা গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম। পাশাপাশি এই দুই জেলা হলেও সেতু না থাকায় অতি দ্রুত যাওয়া যেত না জেলা দুটিতে। কিন্তু আর বিভাগীয় শহর বা পানি পথ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হবে না এই দুই জেলায়। তাই দীর্ঘদিনের বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের তিস্তা সেতু বাস্তবরূপ নিয়েছে। এখন শুধু বাকি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা। সেই উদ্বোধন হচ্ছে আগামী ০২ আগস্ট। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের পাঁচপীর বাজার থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী সদর দপ্তরের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। এর আগে কয়েক বার উদ্বোধন পিছিয়ে গিয়েছে কাজ সমাপ্ত না হওয়ায়। সেতু উদ্বোধনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ নিচ্ছে আগামী ২ আগস্ট সকাল ১১টায়।
এক পত্রে জানা গেছে, সেতুটির উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শামীম বেপারী কর্তৃক ১৩ জুলাই ৪৬.০০.০০০০.০৬৮.১০.০৪২.১৩-৬১০ স্বারক নম্বরে স্বাক্ষরিত চিঠি বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন পাঁচপীর বাজার হতে চিলমারী উপজেলা সদর দপ্তরের সাথে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটি উদ্বোধনসহ সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সেতু উদ্বোধনের খবর ছড়িয়ে পরলে স্থানীয় জনগণের মনে আনন্দভাব বিরাজ করছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সৌদি ফান্ড ফর ডিভলপমেন্ট এর অর্থায়নে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সেতুটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হলেও নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০২১ সালে শুরু হয় নির্মাণ কাজ। কাজটি হাতে নেয় চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এলজিইডির মাধ্যমে বাস্তবায়িত দেশের প্রথম দীর্ঘতম সেতু হতে যাচ্ছে তিস্তা সেতু।
স্থানীয়রা জানান, এ সেতু চালু হলে যেমন তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন, তেমনি নদী ভাঙন থেকেও রক্ষা করবে তিস্তা পারের মানুষদের। সেতুটি চালু হলে কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভুরাঙ্গামারী, চিলমারী থেকে সড়কপথে ঢাকার দূরত্ব কমে আসবে প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার। দূরত্ব কমবে বিভাগীয় শহর রংপুরেরও। পাল্টে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের ধারা, ঘটবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
উল্লেখ্য, মূল সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৩৬৭ কোটি টাকা। সংযোগ সড়ক, নদীশাসন, কালভার্ট ও জমি অধিগ্রহণে খরচ হয়েছে আরও ৩৬৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে দুই পাশে ৩.১৫ কিলোমিটার করে নদীশাসন, সুন্দরগঞ্জে ৫০ কিলোমিটার এবং চিলমারীতে ৭.৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ হয় সেতু নির্মাণের আওতায়।
সেতুতে রয়েছে ২৯০টি পাইল, ৩০টি পিলার, ২৮টি স্প্যান, ১৫৫টি গার্ডার। সেতুর উভয় পাশে পানি নিষ্কাশনে ১২ ব্রিজ ও ৫৮টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। মূল সেতুর কাজ শেষ হলেও রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। বর্তমানে সেতু উদ্বোধনের জন্য জোরেশোরে বাকি কাজগুলো করা হচ্ছে। চলাচলের জন্য সেতু উদ্বোধনের পর যেসব ছোট ছোট কাজ বাকি থাকবে তাও দ্রুত শেষ করা হবে বলে জানা গেছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ