শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৫ ০১:০৯ পিএম
শ্রীবরদীতে নিখোঁজ দুই শিশুর মরদেহ ভাসছিল খামারের পুকুরে
নিখোঁজ থাকার ২০ ঘন্টা পর শেরপুরের শ্রীবরদীর বটতলার একটি ম খামারের পুকুরে ভেসে থাকা অবস্থায় দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৮ জুন) সকালে শ্রীবরদী উপজেলার তাতিহাটি ইউনিয়নের বটতলা মৃদাবাড়ি এলাকা থেকে উলঙ্গ অবস্থায় ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত শিশুরা হলো স্থানীয় রাজমিস্ত্রী মো. সেলিম মিয়ার মেয়ে সকাল আক্তার (৭) এবং অটোরিকশা চালক স্বপন মিয়ার মেয়ে স্বপ্না খাতুন (৬)। তারা দুইজনই স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার পর থেকে শিশুদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। পরে স্থানীয়ভাবে অনেক খুঁজেও তাদের সন্ধান না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ছবি দিয়ে পোস্ট করে সন্ধান চাওয়া হয়। এছাড়াও এলাকায় সারারাত মাইকিং করা হয়। এদিকে ১৮ জুন সকাল ৭টায় বটতলা মৃদাবাড়ি এলাকার একটি মৎস খামারে তাদের মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। পরে শ্রীবরদী থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ শিশুদুটির মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় শাখাওয়াত হোসেনের জমিতে তৈরিকৃত পুকুরটি লিজ নিয়ে মৎস চাষ করছেন মোস্তফা মিয়া নামের এক ব্যক্তি। স্থানীয়রা এটাকে রহস্যজনক বলে দাবি করছেন, কারন শিশু দুটির বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে। এই পুকুরে মাসখানেক আগেও রহস্যজনকভাবে একজন মারা যায়। পরে প্রজেক্টের মালিক সেটা ধামাচাপা দেয়। এছাড়াও যে পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে শিশুর গোসল করার মতো পরিবেশ নাই এবং সেই পুকুরটি কয়েকটি পুকুরের ভিতরে। এছাড়াও তাদের গায়ের পোশাক এখানো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে শিশু দুটির পরিবার এখনও কোন অভিযোগ করেনি।
নিহত শিশু সকাল আক্তারের মামা মো. সাগর মিয়া বলেন, সকালের আম্মা ওই এলাকায় ব্র্যাক সেন্টারে হস্তশিল্পের কাজ করে। সেই কারনে সে তার মায়ের কাছে যেতে পারে। সেই সময় গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে যেতে পারে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি খবর পাবার সাথে সাথে থানায় খবর দেই এবং নিজেও ঘটনাস্থলে আসি। আমার কাছে বিষয়টা পানিতে ডুবে মরার মতই মনে হচ্ছে। শিশু স্বপ্নার বাবা স্বপন মিয়া বলেন, আমি গতকাল ঢাকায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় থেকে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে ঢাকা যাইনি। এরপর থেকে খোঁজাখুঁজি করতেছি। মাইকিং করতেছি। কোন খোঁজ খবর পাইতেছি না। আজকে সকালবেলা মেয়ের লাশ পেলাম। কিভাবে কি হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না।
শিশু দুটির পরনের জামাকাপড় না পাওয়ায় বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাচ্চা দুটির গায়ের পোশাক পাওয়া যাচ্ছেনা। লাশ ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা ঘটনাটিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।
ভোরের আকাশ/আজাসা