উত্তরায় অপহরণ চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার, এক কোটি ৪১ লাখ টাকা উদ্ধার
রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে অপহৃত এক স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। একইসঙ্গে পেশাদার অপহরণকারী চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. মাসুম পারভেজ (৩৮), মো. সোলাইমান হোসেন (৩৮), শফিকুল ইসলাম সৌরভ (২৭), মোছা. মায়া (২৫) ও মোছা. রুলি খানম (১৯)।
শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান।
এর আগে গত বুধবার বিকেলে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১১ নম্বর সেক্টরের ১০/বি রোডের বাসা নম্বর ৩৭-এর দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বিভিন্ন সময় মুক্তিপণ আদায় করা এক কোটি ৪১ লাখ টাকা, ৬০ পিস ইয়াবা, দুটি সিসি ক্যামেরা এবং তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
উত্তরা পশ্চিম থানার বরাদ দিয়ে মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত ২৬ মে বিকেল আনুমানিক ৫টা ৩০ মিনিটে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বাইরে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে ২৮ মে রাত ২টা ৩৬ মিনিটে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ভিকটিমের মায়ের মোবাইল ফোনে কল করে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে থানায় জানানো হলে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের আরও কয়েকজন সহযোগী দৌড়ে পালিয়ে যান।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তাররা একটি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীদের অপহরণ করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আটকে রাখতেন। এরপর ভিকটিমদের নগ্ন ভিডিও ও ছবি ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করতেন অপহরণকারীরা।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
ঈদুল আজহার ছুটি শেষ রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তাই রেল, সড়ক ও নৌ পথে ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ বেড়েছে।শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনের যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।রেলস্টেশনে সরেজমিনে দেখা গেছে, কেউ এসেছেন সপরিবারে, কেউ একা। সবার সঙ্গে ছিল ব্যাগ, স্যুটকেস ও শিশুরা।রংপুর থেকে আসা যাত্রী সালমা আক্তার বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামে গিয়েছিলাম, এখন ফিরতে হচ্ছে চাকরির কারণে। ভিড় একটু বেশি, তবে নিরাপদে এসেছি।নীলফামারী থেকে আসা আরেক যাত্রী হাসান জামিল বলেন, অফিস শুরু রোববার। কিন্তু ফিরতি টিকিট শুক্রবারেরটা পেয়েছিলাম। তাই আগেভাগেই আসতে হয়েছে।কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সাজেদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে ১০টা আন্তঃনগর ট্রেন কমলাপুরে ঢুকেছে। সব ট্রেন সঠিক সময়ে ও নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছেছে।এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। একই অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ও।তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশিরভাগ যাত্রীই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ট্রেনে বা স্টেশনে অনেককেই মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করতে দেখা গেছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঈদুল আজহার ষষ্ঠদিন আজ। ছুটি প্রায় শেষের পথে। তাই এ ছুটিতে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় ভিড় করেছেন সব বয়সী মানুষ। কেউ এসেছেন পরিবারের সঙ্গে। কেউ বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে। কেউ এসেছেন ছায়াঘেরা বিনোদনকেন্দ্রটিতে গরমে একটু প্রশান্তির খোঁজে। গাছের ছায়ায় ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখি দেখছেন তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যায়।সরেজমিন চিড়িয়াখানার বাইরে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছে অনেকে। ঢাকার বাইরে থেকেও এসেছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে আবার চিড়িয়াখানার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা হকারদের কাছ থেকে কিনছেন বাঁশি, ময়ূরের পালক ও ফুলসহ নানা রকম খেলনা।ঈদের ছুটিতে যানজটমুক্ত রাজধানীতে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরে স্বস্তি নগরবাসীর। শিশু-কিশোরদের আবদার মেটাতে জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসছেন অনেকে। নানা প্রজাতির প্রাণীর দেখা পাওয়ার পাশাপাশি স্বস্তি মিলছে গাছের ছায়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশে। সাভার নবীনগর থেকে ৯ বছরের ছেলে তামিমকে নিয়ে এসেছেন হামিদ-রোজিনা দম্পতি।হামিদ হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের বাসা আদাবরে। চিড়িয়াখানায় আসার পরিকল্পনা করেই আজ ঢাকায় এসেছি। আজকে চিড়িয়াখানায় এলাম। বাচ্চাকে পশু-পাখি দেখাতে। রাতে আবার ফিরে যাব।গাজীপুর থেকে আসা দর্শনার্থী সিরাজুল মিয়া বলেন, মেয়েকে চিড়িয়াখানা দেখাতে কাপাসিয়া থেকে এসেছি। অনেক পশুপাখি আছে, মেয়েকে সেগুলোর নামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাবে।প্রচণ্ড রোদে খানিকটা অসুবিধার কথা জানালেন এক দর্শনার্থী। দুই বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে আসা ওই দর্শনার্থী বলেন, ছেলের আবদার মেটাতে তাকে বানর-হাতি-বাঘ দেখতে চিড়িয়াখানায় এসেছি। কিন্তু প্রচণ্ড রোদে খুব একটা ঘুরতে পারিনি। কয়েকটি খাঁচা ঘুরে বের হয়ে এসেছি।দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধার বিষেয়ে নানা পদক্ষেপের কথা জানান জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার।তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের যাতে সুন্দর ও নিরাপদে চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি পুলিশ রয়েছে। দর্শনার্থীরা ১৮টি ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে পারছেন। পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
এডিস মশা ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ‘একগুচ্ছ পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা বলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।বুধবার (১১ জুন) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে একটি জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।এ সময় এডিস মশার বিস্তার রোধকে বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ অ্যাজেন্ডা নির্ধারণ করে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফলাফল লাভে ১৪ জুন থেকে ডিএসসিসি এলাকায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।মশক কর্মীদের সকাল ও বিকালের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাইকরণ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশককর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে (মোবাইল নম্বর ০১৮৪১ ২১১ ০৯৮) ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার হবে। প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ হবে ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে।সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান, করপোরেশন সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিশাত পারভীন উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঈদের আনন্দ ও পরিবারের মায়া পিছনে ফেলে রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবীরা। গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন এবং সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে ফিরতি যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। ক্লান্ত চোখ আর ভারী লাগেজ নিয়ে জীবিকার তাগিদে শহরে ফিরছেন লাখো মানুষ।বুধবার (১১ জুন) গাবতলী বাস টার্মিনালে গেলে দেখা যায়, ঈদ উদযাপন করতে আজও কেউ কেউ বাড়ি ফিরছেন। তবে সে সংখ্যাটা খুব বেশি নয়। উল্টো জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরে আসছেন অনেকেই। পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা থেকে যে পরিমাণ মানুষ যাচ্ছে, ফিরছে তার বেশি।গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার হাফিজুর রহমান বলেন, এখন যাত্রী অনেক কম। ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী নিয়েই বাস ছাড়তে হচ্ছে। তবে সে তুলনায় ঢাকা ফেরত প্রতিটি বাসই যাত্রীতে ভরপুর থাকে।একই কথা জানিয়েছেন হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, বাড়ি ফেরা যাত্রীর পরিমাণ এখন কম। যারা যাওয়ার তারা ইতোমধ্যেই চলে গেছেন। আমাদেরও অল্প যাত্রী দিয়েই বাস ছাড়তে হচ্ছে। তবে ঢাকায় যে বাসগুলো ফিরছে, সেগুলো কোনোটাই খালি ফিরছে না।রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রেনযোগে ঢাকায় ফিরছেন অনেকে। কমলাপুর রেলস্টেশন ছিল যাত্রীদের পদচারণায় মুখর। স্টেশনের একাধিক প্ল্যাটফর্মে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মানুষ, যারা পরিবার ছেড়ে ফিরে এসেছেন কর্মজীবনে।বেসরকারি চাকরিজীবী রাহাত জানান, ঈদের ছুটি কাটিয়ে ফিরছি কাজে। মা-বাবা, ভাইবোনকে ফেলে আসাটা সবসময়ই কষ্টের। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা তো মেনে নিতেই হয়।একই চিত্র সদরঘাটেও। দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে লঞ্চযোগে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ। বাস টার্মিনালগুলোতেও রয়েছে একই চিত্র—ফিরে আসা যাত্রীরা এসেছেন কুড়িগ্রাম, ময়মনসিংহ, গোপালগঞ্জসহ দেশের নানা অঞ্চল থেকে।রেলওয়ে, বিআইডব্লিউটিএ এবং বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদ ও পরবর্তী সময়ের যাত্রীচাপ সামলাতে অতিরিক্ত ট্রেন, লঞ্চ ও বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মোতায়েন রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।কমলাপুর স্টেশন মাস্টার মাজহারুল ইসলাম জানান, ফিরতি যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে ট্রেন চলাচল নিয়মিত রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অন্তত ২৫টি ট্রেন রাজধানীতে প্রবেশ করেছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ