শ্রীপুরে স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়েছে স্বামী, বাড়ি পুড়িয়েছে জনতা
গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমীতে স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়েছে এক পাষণ্ড স্বামী। এঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।বুধবার (৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের বরমী গ্রামের মধ্য পাড়া এলাকার শাজাহান মৃধার বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর ছড়িয়ে পরলে উত্তেজিত জনতা বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট)সকলে শাজাহান মৃধার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। শ্রীপরের ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে পুরো বাড়ি পুড়ে ভস্মীভূত হয়।নিহত সুইটি আক্তার নিশি (২০) ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামের আফসারুল ইসলামের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামী নুরুল ইসলাম (৩৫) উপজেলার বরমী গ্রামের মো. শাজাহান মৃধার ছেলে। মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডের পরে মায়ের নিথর দেহের পাশেই কাঁদছিল ৪ মাসের দুধের শিশু। শিশুর কান্নায় সাড়া দেননি মা। পাষণ্ড বাবা পিটিয়ে মেরেছে তার মাকে।জানা গেছে, দেড় বছর আগে সুইটির সঙ্গে নুর ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ৪ মাসের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে। সেই সঙ্গে শাশুড়ি যোবেদাকে আটক করেছে।নিহতের স্বজনরা জানান, সুইটি এক অসহায় মেয়ে। ছোটকাল থেকে বাবা-মা তার খবর নিতেন না। খালা আকলিমার কাছেই তার বেড়ে ওঠা। দেড় বছর পূর্বে গোপনে খালু নাজমুল সুইটির বিয়ে দেন নুর ইসলামের সঙ্গে। নুর ইসলাম এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। বিয়ের পর থেকেই নুর ইসলাম সুইটিকে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করতো। বুধবার রাত ১০টার দিকে খালু নাজমুলের ফোনে সুইটির স্বামী পরিবারকে জানান, সে মারা গেছে। খবর পেয়ে স্বজনরা এসে সুইটির মরদেহ দেখতে পান।সুইটির মামা জসিম শেখ বলেন, ‘আমার ভাগ্নি বড় অসহায়। তার বাবা-মা থেকেও না থাকার মতো। কোন খোঁজখবর নিত না। আমার এক বোনের কাছে তার বেড়ে ওঠা। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় গোপনে খালু নাজমুল নুর ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে দেন। আমরা বিয়ে মেনে নিতে পারিনি। নুর ইসলাম এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। বিয়ের পর থেকে মাদকাসক্ত নুর ইসলাম সুইটির উপর শারীরিক নির্যাতন করত। এ নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। বুধবার রাত ১০টার দিকে ঘটক নাজমুল ফোন করে জানান, সুইটি মারা গেছে। খবর পেয়ে আমরা নুর ইসলামের বাড়িতে এসে ভাগ্নির মরদেহ দেখতে পাই। তাকে মেরে নুর ইসলামসহ বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। রাতেই পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে সুইটির মরদেহ উদ্ধার করেছে। সুইটির দুই পা হাঁটুর নিচে থেতলানো। পা থেকে মাথা পর্যন্ত প্রতি ইঞ্চি শরীরেও মারপিটের চিহ্ন। নুর ইসলাম পিটিয়ে আমার ভাগ্নিকে মেরে পালিয়েছে।’নিহতের খালা আকলিমা জানান, বিয়ের পর থেকেই সুইটির ওপর নির্যাতন করত নুর ইসলাম। বুধবার রাতে পিটিয়ে সুইটিকে মেরে তিনি পালিয়ে গেছে। ৪ মাসের দুধের শিশুর পাশেই মাকে পিটিয়ে মেরেছেন নুরু। শিশুটির শরীরেরও আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। শিশুটি এখন মায়ের জন্য হাহাকার করছে। এ শিশুটিকে আমরা কোথায় নিব। শিশুটিকে পালার মতে সামর্থ্য নেই আমাদের ।শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মো. জাহাঙ্গীর জানান, খবর পেয়ে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
০৭ আগস্ট ২০২৫ ১২:৩১ পিএম
শ্রীপুরে স্ত্রীকে হত্যার পর আগুনে পোড়ানোর অভিযোগ
গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে হত্যা ঘরে তালা লাগিয়ে আগুনে পুড়ানোর অভিযোগ পাষান্ড স্বামীর বিরুদ্ধে। স্ত্রীর মরদেহ বিছানায় রেখে ঘরের ভেতর আগুন দেয় মিজান। পড়ে ঘরে বাড়ির গেইট বাহির থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় মিজান। স্থানীয়রা তালা ভেঙ্গে আগুন নিভিয়ে বিছানায় মারুফার পুড়ে যাওয়া মরদেহ দেখতে পায়। নিষ্ঠুরতম এ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রবপুর গ্রামে। নিহত মারুফা (৩৫)পার্শবর্তী কাপাসিয়া উপজেলার কামারগাঁও গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের মেয়ে। নিহতের স্বামী পলাতক মিজান উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রবপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিনের ছেলে।স্থানীয়রা জানান, রাত তিনটার দিকে ওই বাড়িতে আগুন দেখতে পাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ঘর তালা লাগানো। আমরা তালা ভেঙ্গে আগুন নিভিয়ে দেখতে পাই খাটের উপর মারুফার লাশ পড়ে আছে। আমরা পুলিশে খবর দেই।নিহতের ছোট ভাই আবু তাহের জানান, আমি একটু দূরে থাকি। মিজান ও মারুফার মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিলো মারুফা একটি কারখানায় চাকুরি করতো। দুলাভাই স্থানীয় ইন্দ্রবপুর বাজারে ওষুধ ব্যবসা করেন। মারুফা পরকিয়ায় আসক্ত এমন সন্দেহ করতো মিজান। এ নিয়ে তাদের মধ্য প্রতিদিনই ঝগড়া হতো। বোনের দুই ছেলে মেয়ে চট্রগামে থাকে। বাড়িতে শুধু মিজান- মারুফা থাকতো।গত পনেরো দিন ধরে মিজান আমার বোনকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে শনিবার রাতে আমার বোনকে হত্যা করে মিজান। বিছানায় মরদেহ রেখে ঘরের ভেতর আগুন দেয় মিজান। যাতে লাশ পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পরে বাহির থেকে ঘর ও বাড়ির গেইট তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান তিনি। বোনের ঘরে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে বাইরে থেকে গেইট ও ঘর তালাবদ্ধ দেখি। স্থানীয়দের নিয়ে তালা ভেঙ্গে ভতরে প্রবেশ করি। আগুন নিভায়ে খাটের উপর বোনের আগুনে পোড়া মরদেহ দেখতে পাই।ছোট বোন কুলসুম অভিযোগ করে বলেন, দুলাভাই বোনকে পারিবারিক কলহের কারণে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে। আমার বোনকে অযথাই সন্দেহ করতো। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঘরে আগুন দিয়ে বাহির থেকে ঘর ও গেইট তালা বদ্ধ করে পালিয়ে যান।শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মহম্মদ আ. বারিক জানান, ঘটনা স্থল থেকে অগ্নিদগ্ধ নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘরে আগুন দিয়ে নিহতের স্বামী মিজান পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ