সিলেটের সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুটের ঘটনায় মোট ১৩৭ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে ১০টি সুপারিশও।বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেলে বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদ্মাসন সিংহ। জেলা প্রশাসক জানান, প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদাপাথর এলাকা থেকে প্রায় ৮০ শতাংশ পাথর লুট হয়ে গেছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ১২ আগস্ট জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদ্মাসন সিংহ। সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার (সম্প্রতি বদলি হয়েছেন) এবং পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক মো. আফজারুল ইসলাম।তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন, স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। প্রতিবেদনে কারা কারা জড়িত, কীভাবে এ লুটপাট সংঘটিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।ভোরের আকাশ//হ.র
২০ আগস্ট ২০২৫ ১১:৪৯ পিএম
পাথরঘাটায় কোটি টাকার প্রকল্পে লুটপাটের অভিযোগ
বরগুনার পাথরঘাটায় কাবিখা, কাবিটা ও টিআর প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও মাঠপর্যায়ে এর বেশিরভাগ কাজের কোনো অস্তিত্ব নেই। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় ১৫০টি প্রকল্পে মোট বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি ২১ লাখ ৭৯ হাজার ৩১৫ টাকা। কিন্তু সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দৃশ্যমান কাজ হয়েছে আনুমানিক ১০ লাখ টাকার মতো।সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি প্রকল্প শুরুর আগে সাইনবোর্ড স্থাপন বাধ্যতামূলক হলেও কোথাও তা পাওয়া যায়নি। অনেক রাস্তা ও অবকাঠামোর জন্য বড় অঙ্কের বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাস্তবে কাজ হয়নি। বরং কিছু জায়গায় অল্প কিছু উপকরণ ফেলে প্রকল্প সম্পন্ন দেখিয়ে বিল উত্তোলন করা হয়েছে।সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তায় মাটি ভরাট, সংস্কার ও চাল-গম সরবরাহের জন্য একাধিক প্রকল্পে লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেগুলোর অধিকাংশই বাস্তবে অকার্যকর রয়ে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে একই রাস্তায় একাধিকবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য বরাদ্দ পাওয়া কিছু প্রকল্পেও অল্প কাজ করে পুরো বরাদ্দের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের একজন প্যানেল চেয়ারম্যানের নামে নিয়মবহির্ভূতভাবে একসঙ্গে ৯টি প্রকল্পের সভাপতির দায়িত্ব দেখানো হয়েছে এবং এসব প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রশাসনিক তদারকির অভাবে এসব অনিয়ম দীর্ঘদিন ধরে চললেও এখন তা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় এ বিষয়ে স্পষ্ট জবাব দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কাজ না হলে বরাদ্দের টাকা ফেরত আনা হবে।স্থানীয়দের দাবি, উন্নয়নের নামে সরকারি অর্থ লুটপাট বন্ধ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় এ ধরনের দুর্নীতি অব্যাহত থাকবে এবং প্রকল্পের অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে না।এদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মো. ফারুক এই ঘটনাকে নজিরবিহীন দুর্নীতি দাবি করে সঠিক তদারকি ও আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।ভোরের আকাশ/মো.আ.
১৩ আগস্ট ২০২৫ ০১:৫৯ পিএম
রংপুরে ফেসবুকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে হিন্দুপল্লীতে ভাঙচুর ও লুটপাট
ফেসবুকে মহানবীকে নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় রংপুরে হিন্দুপল্লীতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ১২টি পরিবারের ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।রোববার (২৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাতপুর ছয়আনি হিন্দু পল্লীতে এ ঘটনা ঘটে।ভয়ে-আতংঙ্কে সেখানকার প্রায় ৫০ পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন গঙ্গাচড়া থানার ওসি আল এমরান। স্থানীয়রা জানায়, চারআনি গ্রামের সুজন চন্দ্রের ছেলে রঞ্জন রায় ফেসবুকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র তৈরী এবং অশালীন মন্তব্য লিখে ফেসবুকে একাধিকবার পোস্ট করে। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজ বাসা থেকে রঞ্জনকে গ্রেফতার করে।রোববার বিকেল ৩টার দিকে নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের সিঙ্গের গাড়ি এলাকার বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সিঙ্গেরগাড়ি বাজারে এসে জমায়েত হয়। এরপর তারা রঞ্জন রায়ের ফাঁসি দাবীতে মিছিল নিয়ে খিলালগঞ্জ বাজার হয়ে ছয়আনি হিন্দু পল্লীতে আসে এবং ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।ছয়আনি গ্রামের বাসিন্দা অন্তরা রায় বলেন, পাঁচ থেকে ছয়শ মানুষ লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গ্রামে হামলাসহ লুটপাট করে। ভয়ে গ্রামের লোকজন পালিয়ে গেছে। আমাদের জীবনেরও নিরাপত্তা পাচ্ছি না। আমরা হামলা ও লুটপাটকারীদের গ্রেফতারসহ শাস্তি দাবী করছি। গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান বলেন, বিক্ষোভ মিছিল থেকে হুট করে আন্দোলনকারীরা গ্রামে ঢুকে হামলা চালায়। এতে আমাদের একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ