ফতুল্লা স্টেডিয়ামের অবস্থা দেখে হতাশ বিসিবি প্রেসিডেন্ট বুলবুল
দীর্ঘ নয় বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিচ্ছিন্ন ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম। একসময় অস্ট্রেলিয়া, ভারতসহ শীর্ষ দলগুলো খেলেছিল এই মাঠে। ২০১৬ এশিয়া কাপের বাছাই পর্বও হয়েছিল এখানে। অথচ অবহেলা আর অযত্নে দেশের অন্যতম টেস্ট ভেন্যুটি বছরের পর বছর পড়ে আছে অচল অবস্থায়।রোববার মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম বুলবুল। মাঠের করুণ চিত্র দেখে তিনি বলেন, “ফতুল্লা মাঠটা দেখে এলাম। আমার খুব কান্না পাচ্ছিল। এই মাঠে শাহরিয়ার নাফীস অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিল, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল হয়েছিল, এশিয়া কাপের ম্যাচ হয়েছিল। অথচ এখন মাঠটার অবস্থা ভীষণ করুণ।”২০১৫ সালে সর্বশেষ টেস্ট আয়োজনের পর থেকে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি ফতুল্লায়। ওয়ানডে হয়েছিল তারও এক বছর আগে এবং সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি হয়েছিল ২০১৬ সালে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা এবং নিচু ভূমি হওয়ায় বছরের বেশিরভাগ সময়ই পানি জমে থাকে মাঠে। এ কারণে বিপিএল কিংবা প্রিমিয়ার লিগের মতো ঘরোয়া টুর্নামেন্টও আয়োজন সম্ভব হয়নি।তবে এবার মাঠ উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে থাকা তিনটি উইকেট বাড়িয়ে অন্তত ১৫-২০টি উইকেট তৈরির পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। বুলবুল বলেন, “যখন একজন জেলার কোচ ৩টি উইকেট নিয়ে গর্ব করে, আর সেখান থেকে জিসান আলম বা রনি তালুকদারের মতো ক্রিকেটার উঠে আসে, তখন সেটা অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। এখানে ৩টা কেন, ৩০টা উইকেট থাকা উচিত। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, অন্তত ১৫-২০টি উইকেট তৈরি করা হবে।”নারায়ণগঞ্জের খেলোয়াড়দের জন্য ফতুল্লা হতে পারত আদর্শ অনুশীলন ভেন্যু। কিন্তু সুবিধার অভাবে স্থানীয় ক্রিকেটারদের সংগ্রামের কথা তুলে ধরে বুলবুল বলেন, “গতকাল জিসান আলম অস্ট্রেলিয়ায় ফিফটি করেছে। অথচ আজ দেখলাম সে কোথায় অনুশীলন করছে! এটা মেলানো কঠিন।”সামনে বিসিবি নির্বাচন থাকায় হয়তো আর বেশিদিন প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন না বুলবুল। তবে তার আগে ফতুল্লা স্টেডিয়ামের চিত্র বদলে দেওয়ার উদ্যোগ নিতেই চান তিনি।ভোরের আকাশ//হ.র
২৬ আগস্ট ২০২৫ ০১:৪৫ এএম
অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ করতে যাচ্ছেন বিসিবি সভাপতি
আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হয়েছেন বেশি দিন হয়নি। ঠিক এই সময়ে দুয়ারে এসে দাঁড়িয়েছে ঈদুল আজহা। এই ঈদ পালন করতে নব নির্বাচিত বোর্ড সভাপতি আমিনুল যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তার অস্ট্রেলিয়া ছুটে যাওয়ার কারণ, সেখানে তার পরিবার বসবাস করছে। এক যুগের বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন বুলবুল। তার দুই ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করছেন। তার স্ত্রীও ক্যারিয়ার গড়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়।বিসিবি সভাপতি হওয়ার আগে আইসিসির গেম ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে আমিনুল কাজ করেছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা যাওয়া করেই। বিসিবির ডাকে তিনি বাংলাদেশে ফিরলেও তার পরিবার ওই অস্ট্রেলিয়াতেই রয়ে গেছে। যার ফলে ঈদকে সামনে রেখে দূর দেশে তার পরিবার কাছে ছুটে যাচ্ছেন আমিনুল।বাংলাদেশে আগামী ৭ জুন ঈদুল আজহা পালিত হবে। তবে অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ হবে আগামী ৬ জুন। সে কারণে আগেভাগেই যাত্রা শুরু করতে হচ্ছে আমিনুলকে। গতকাল মঙ্গলবারই অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে তিনি ঢাকা ছাড়বেন। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে বুলবুল নিজেই নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে অস্ট্রেলিয়া যাবো ইনশাআল্লাহ। আশা করছি, ঈদের সপ্তাহখানেক পরই দেশে ফিরবো। তবে ১৪ জুন থেকে আইসিসির একটি মিটিং আছে। সেখানে অ্যাটেন্ড করার সম্ভাবনা বেশি। তাহলে দেশে ফিরে আসতে কয়েকদিন দেরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে হয়তো ১৮ জুন আবার দেশে ফিরে আসবো।গত ৩০ মে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন বুলবুল। এরপরই তিনি নেমে পড়েছেন ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডে। তিনি ইতোমধ্যেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন সভাপতি হিসেবে কী করতে চান তিনি। আইসিসির গেম ডেভেলপমেন্টের কাজ করে আমিনুলের অভিজ্ঞতা হয়েছে কী করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে হয় সে ব্যাপারে। দেশের ক্রিকেটেও তিনি তাই করবেন।তিনি ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে চান দেশের প্রতিটি কোণে। তিনি দেশে অঞ্চলভেদে আঞ্চলিক পরিদপ্তরের মতো ক্রিকেট পরিচালনা করতে আগ্রহী। সে কাঠামোয় খেলাটা বিভাগীয় শহরকেন্দ্রিক হয়ে পড়বে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের উঠতি ক্রিকেটাররাও ধাপে ধাপে উঠে এসে যেন জাতীয় দলে সুযোগ পেতে পারেন, সে রাস্তাটা তৈরি করে দিতে চান। সেজন্য অবশ্য সময় খুবই কম আমিনুলের হাতে। আগামী অক্টোবরে বিসিবি নির্বাচন। তার আগ পর্যন্ত প্রায় ৪ মাসের একটু বেশি সময় হাতে পাবেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
০৪ জুন ২০২৫ ০৯:৫৩ এএম
বুলবুলকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছে দেশের ক্রিকেট
বাংলাদেশ ক্রিকেটে সূচিত হলো এক নতুন অধ্যায়। মাঠের যোদ্ধা থেকে প্রশাসনের নেতৃত্বে উঠে এলেন সেই মানুষটি, যিনি দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ককে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বোর্ড পরিচালকদের এক বিশেষ সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিসিবির শীর্ষপদে। সভা শেষে বোর্ড পরিচালক ইফতেখার রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের জানান, আমিনুল ইসলামকে বিসিবির ১৬তম সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত পরিচালনা পর্ষদের সর্বসম্মত। এছাড়া নাজমূল আবেদীন ফাহিম ও ফাহিম সিনহাকে সহ-সভাপতি হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে একই সভায়।নাটকীয় মোড় : বাতিল মনোনয়ন, হঠাৎ আমিনুল বিসিবির নতুন সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া যেন এক নাটকীয় পালাবদলের গল্প। গত বৃহস্পতিবার রাতেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করে। এরপর মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আমিনুল ইসলামকে বিসিবির পরিচালক হিসেবে মনোনীত করা হয়। পরবর্তী ধাপে, গহকাল শুক্রবার সন্ধ্যার সভায় তাকে বোর্ডের সভাপতি পদে নির্বাচিত করেন অন্য পরিচালকরা। এই হঠাৎ পরিবর্তন বিসিবির নেতৃত্বে এক নতুন ভোরের সূচনা বলে মনে করছেন অনেকেই।ক্রিকেটার বুলবুল : মাঠের লড়াকু অধিনায়কআমিনুল ইসলাম বুলবুল শুধু বোর্ড রুমের কর্তা নন, ছিলেন মাঠের প্রেরণাদায়ী সেনানায়কও। দেশের হয়ে খেলেছেন ১৩টি টেস্ট ও ৩৯টি ওয়ানডে যার মধ্যে সর্বাধিক রান ভারতের বিপক্ষে। বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে (ভারতের বিপক্ষে, ২০০০) ১৪৫ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস খেলে তুলে নেন দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান এরপর তিনি সক্রিয় হন কোচিং, ক্রিকেট প্রশাসন ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে। এই অভিজ্ঞতা তাকে গড়ে তুলেছে ক্রিকেটের গভীর বোঝাপড়াসম্পন্ন একজন পেশাদার হিসেবে।আন্তর্জাতিক পরিসরে আমিনুল : আইসিসিতে এক দশকের পথচলায় অবসরের পরেও ক্রিকেটের সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন হয়নি তার। গত এক যুগেরও বেশি সময় তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বিভিন্ন পদে। বিশেষ করে আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ছিলেন হাইপারফরম্যান্স ইউনিট ও ট্রেনিং এডুকেশনের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কাঠামো গঠনে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তার সঙ্গে আইসিসির চুক্তির শেষ সময় চলছে, ফলে বিসিবির দায়িত্ব গ্রহণে আর কোনো প্রশাসনিক জটিলতা নেই।মাঠ থেকে বোর্ডরুম : বদলে যেতে পারে বিসিবির মুখচ্ছবিবাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নেতৃত্বে সাধারণত রাজনীতিক, পৃষ্ঠপোষক বা প্রশাসনিক ব্যক্তিদের আধিপত্য ছিল বরাবর। তবে এবার প্রথমবারের মতো মাঠ থেকে উঠে আসা একজন প্রকৃত ক্রিকেটার বোর্ডের শীর্ষপদে আসীন হলেন।বিশ্লেষকদের মতে, একজন খেলোয়াড়-নির্ভর সভাপতির নেতৃত্বে বিসিবিতে আসতে পারে কাঠামোগত ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। আমিনুল ইসলামের মাঠের অভিজ্ঞতা, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও ক্রিকেট উন্নয়ন বিষয়ে প্রগাঢ় ধারণা বোর্ডকে আরও পেশাদার ও আধুনিক পথে পরিচালিত করতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।সম্ভাবনা বনাম চ্যালেঞ্জ : কী অপেক্ষা করছে সামনেআমিনুল ইসলামের সামনে চ্যালেঞ্জ কম নয়; বিতর্কিত প্রশাসন, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, ঘরোয়া লিগের বিশৃঙ্খলা, খেলোয়াড় উন্নয়নে পরিকল্পনার অভাব। তবুও আশার আলো দেখছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কারণ, এবার নেতৃত্বে এসেছেন এমন একজন, যিনি মাঠের ভাষা বোঝেন, যিনি স্বপ্ন দেখেছেন দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার।ভোরের আকাশ/এসএইচবুলবুলকে ঘিরে নতুন ভোরের স্বপ্ন : বাংলাদেশ ক্রিকেটে পরিবর্তনের হাওয়া লাগাতে পারে বুলবুলের আগমন। ক্রিকেটার, প্রশিক্ষক, উন্নয়নকর্মী ও প্রশাসক এই চারটি রূপে গড়া একজন পেশাদার যদি সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদর্শিতায় এগিয়ে যান, তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সামনে উন্মুক্ত হতে পারে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। বুলবুলকে ঘিরেই এখন স্বপ্ন দেখছে দেশের ক্রিকেট।ভোরের আকাশ/এসএইচ