বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরল বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।এ ছাড়া তিন মাসের মধ্যে পৃথক সচিবালয় গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।এদিন সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায় ঘোষণা শুরু হয়।গত ১৩ আগস্ট বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।গত ২৩ এপ্রিল বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়।বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। গত ২০ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।এর আগে মামলাটি বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। তবে গত ২৪ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় সেই বেঞ্চটি ভেঙে যায়। এরপর সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য নতুন বেঞ্চ নির্ধারণের আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।তিনি গত বছরের ২৫ আগস্ট ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে মূল সংবিধানের ১৯৭২ সালের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। পরে হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান– বিদ্যমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না।বর্তমানে প্রযোজ্য (সংশোধিত) সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে।’ কিন্তু ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, ‘বিচারকর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্বে নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত থাকবে।’বিদ্যমান সংবিধানের অনুযায়ী বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি ও শৃঙ্খলাবিধির ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব রয়েছে, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৫৪ পিএম
খায়রুল হকের জামিন নিয়ে হট্টগোল অপ্রত্যাশিত
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট জুড়ে হওয়া হত্যাযজ্ঞে পলাতক শেখ হাসিনার বিচার নিয়ে কোনো আপস (কম্প্রোমাইজ) করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।সম্প্রতি একটি হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানির সময় আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের কয়েকজন আইনজীবীর মধ্যে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা অপ্রত্যাশিত।শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি। রাষ্ট্রের এই সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা বলেন, খায়রুল হকের জামিন শুনানি ঘিরে যা ঘটেছে তা অপ্রত্যাশিত।এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই হত্যাযজ্ঞে শেখ হাসিনার বিচার চলছে জোরেশোরেই। এরই মধ্যে এই মামলায় হাসিনার বিরুদ্ধে ৫ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।জুলাই-আগস্টে হত্যাযজ্ঞের বিচার কতটুকু স্বচ্ছ হচ্ছে? এ নিয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এ বিচার নিয়ে আগ্রহ আছে। এখানে ন্যায় বিচার হবে কি না, সেই বিষয়ে মিথ তৈরি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার বিচার নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ হবে না। ন্যায় বিচার পরিপন্থি কোনো কিছু এখানে রাখা হবে না। যে কেউ এখানে বিচার পর্যবেক্ষণে আসতে পারেন।খায়রুল হকের জামিন শুনানি ঘিরে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তা প্রত্যাশিত নয় বলে মন্তব্য করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
১৬ আগস্ট ২০২৫ ০৩:৪৫ পিএম
সোহাগ হত্যা: বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন চেয়ে রিট
রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ (৩৯) নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা তদন্তে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিচারিক কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে।রোববার (১৩ জুলাই) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।তিনি জানান, রিটে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামীকাল সোমবার (১৪ জুলাই) এ রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।জানা যায়, গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর একদল লোক সোহাগ নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আর পুলিশ অস্ত্র আইনে আলাদা আরেকটি মামলা করে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১৩ জুলাই ২০২৫ ০১:৩৪ পিএম
চট্টগ্রামে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের দাবি আইনজীবীদের
চট্টগ্রাম আদালতে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় আইনজীবীরা। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়।সভায় সিনিয়র আইনজীবী বদরুল আনোয়ার বলেন, চট্টগ্রামে প্রায় তিন কোটি মানুষের বসবাস। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েক হাজার শিল্পকারখানা ও দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু এখানকার শত শত বিচারপ্রার্থীকে প্রতিদিন উচ্চ আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য ঢাকায় যেতে হয়। এতে বিচারপ্রার্থীদের অতিরিক্ত অর্থব্যয়, হয়রানি ও সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। পাশাপাশি হাইকোর্টে মামলার জটও বাড়ছে।তিনি আরও বলেন, দেশের সংবিধানের ১০০ ধারার আলোকে দেশে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপন সম্ভব। এ দাবির পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, রাজনীতিবিদ ও আইনজীবীরা ইতোমধ্যে মত দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিচারপ্রার্থীদের এই ন্যায্য দাবি সত্ত্বেও একটি মহল নিজস্ব স্বার্থে ঢাকায় সবকিছু কুক্ষিগত করে রেখেছে।সভায় বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন করা হলে জনগণ দ্রুত, কম খরচে এবং সহজে ন্যায়বিচার পেতে পারবে।ভোরের আকাশ/সু
২৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:২৯ এএম
বরগুনা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা
বরগুনা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে। নির্বাচন বাতিলের দাবি তুলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসক বরাবরে। এ সময় বহিরাগতরা প্রার্থীদের ব্যানার খুলে নিয়ে যায়।সোমবার দুপুর ১টায় জাতীয়তাবাদী ফোরামের সদস্যরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে আদালত চত্বর প্রদক্ষিণ করে আইনজীবী সমিতির সামনে এসে সমাবেশে যোগ দেন তারা।সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মাধ্যমে খুনি ও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে। তারা বরগুনা আইনজীবীদের একত্রিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বক্তারা অভিযোগ করেন, ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন একটি প্রহসন হতে যাচ্ছে এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বেশিরভাগ সদস্য হাসিনা সরকারের সমর্থক।এর আগে শনিবার রাতে সমিতির বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে আদালত চত্বর, উকিলপট্টি ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আশপাশে লাগানো পোস্টার ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয়তাবাদী ফোরাম থেকে সভাপতি পদে মো. জিয়া উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক পদে মো. জাফর ইকবাল, অন্যদিকে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে সভাপতি পদে মাহবুবুল বারি আসলাম ও আক্তারুজ্জামান বাহাদুর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মো. হাবিবুর রহমান আকন ও হুমায়ুন কবির পল্টু প্রার্থী হয়েছেন।জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রার্থী মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, আমি ও আমার প্যানেল দিনরাত পরিশ্রম করছি। কোনো বিতর্কিত পোস্টারিং করা আমাদের কাজ নয়। বরং এটা আওয়ামী পরিষদের নিজস্ব চক্রান্ত হতে পারে, যাতে আমাদের দোষারোপ করে সহানুভূতি কুড়ানো যায়।অন্যদিকে মাহবুবুল বারি আসলাম বলেন, আমি তিনবার সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, এখন সভাপতি। আমি আওয়ামী লীগের সদস্য নই, তবে তাদের রাজনৈতিক মামলা পরিচালনা করি। এজন্য আমাকে টার্গেট করা হয়েছে। এসব নিয়ে আমি বিচলিত নই। ভোট হলে বোঝা যাবে ভোটাররা কী চায়।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম জানিয়েছেন, স্মারকলিপি গ্রহণ করা হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।নির্বাচন কমিশনার সোহরাব হোসেন মামুন বলেছেন, সেখানে কী হচ্ছে সেটা কমিশনের দেখার বিষয় নয়। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত।