ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কারণে এমন পদক্ষেপ নিলো ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপে স্বাগত জানিয়েছেন।
ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এর আগে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আইসিসি। ওই সিদ্ধান্তের পর বিশ্বের কয়েকটি দেশ পরোয়ানাটি কার্যকর করার অঙ্গীকার জানালেও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই আদালতের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অনুমোদনে আইসিসির আরও দুই বিচারক এবং দুই আইনজীবীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত একটি জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার এই ঘোষণার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আইসিসি।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি নিষেধাজ্ঞা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানের ওপর সরাসরি আঘাত। এটি বিশ্বজুড়ে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকারদের প্রতি অবমাননা। আইসিসি কোনো হুমকি, চাপ বা নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে তার কাজ চালিয়ে যাবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বড় ধরনের বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েল প্রায় ১ হাজার ৯৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। এর মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং বাকি ১ হাজার ৭০০ জন যুদ্ধ শুরুর পর আটক হয়েছে। এর বিনিময়ে হামাস ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে।হামাস জানিয়েছে, চুক্তি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই বিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হবে। সৌদি টেলিভিশন আল-শার্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্দি ও জিম্মি বিনিময় আগামী সপ্তাহে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য চ্যানেল আল-হাদাথ জানায়, ৭২ ঘণ্টার সময় গণনা শুরু হবে তখনই, যখন ইসরায়েলি সেনারা গাজার নির্ধারিত সীমারেখায় সরে যাবে।এক ফিলিস্তিনি সূত্র আলজাজিরাকে জানায়, মধ্যস্থতাকারীরা ফিলিস্তিনিদের প্রস্তাবিত মানচিত্রে সম্মতি দিয়েছে, যাতে ইসরায়েলি সেনাদের ধীরে ধীরে গাজার শহরগুলো থেকে প্রত্যাহারের পরিকল্পনা রয়েছে। হামাসের মতে, চুক্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চয়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।চুক্তি কার্যকর হলে রাফাহ সীমান্ত দুদিকেই খুলে দেওয়া হবে, আহতদের মিশরে স্থানান্তরের অনুমতি মিলবে এবং প্রথম পাঁচ দিনে প্রতিদিন অন্তত ৪০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করবে। এ ছাড়া দক্ষিণ গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলে ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে।চুক্তি গাজার মানুষের জীবনে স্বস্তি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও এর পূর্ণ বাস্তবায়ন ও স্থায়িত্ব নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব সুক্কোট উপলক্ষে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরের হেবরনে অবস্থিত ঐতিহাসিক ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ইসরায়েলি সেনারা মসজিদে যাওয়ার সব প্রবেশপথ ও রাস্তা বন্ধ করে দেয়।ইব্রাহিমি মসজিদ মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই সমাধিস্থ আছেন হজরত ইব্রাহিম (আ.), ইসহাক (আ.), ইয়াকুব (আ.), ইউসুফ (আ.) ও তাদের স্ত্রীরা।ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, মসজিদটি বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। হেবরনের আল-আওকাফ বিভাগের পরিচালক আমজাদ কারাজেহ এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটি পবিত্র স্থান অবমাননা ও মুসল্লিদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।ইসরায়েলি সেনারা মসজিদে যাওয়ার সব চেকপয়েন্ট বন্ধ করে হেবরনের কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না, এমনকি শিক্ষার্থীরাও স্কুলে যেতে পারছে না।এর মধ্যেই ইসরায়েলের উগ্রপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গিভির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করেন এবং বলেন, এখন আল-আকসার মালিক ইসরায়েল। এ ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।সূত্র : দ্য নিউ আরবভোরের আকাশ/মো.আ.
অবশেষে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তিচুক্তি হয়েছে। উভয়পক্ষ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দিয়েছেন।ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, অবশেষে গাজায় শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। এই খবর সামনে আসতেই ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল উভয় পক্ষেই স্বস্তি ও উল্লাসের ঢেউ লেগেছে।বুধবার (৯ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন, "ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে স্বাক্ষর করেছে। এর অর্থ হলো খুব শিগগিরই সব জিম্মির মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারিত একটি লাইনে সরিয়ে আনবে।"এই চুক্তিকে 'ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন' বলে অভিহিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বৃহস্পতিবার এই চুক্তি অনুমোদনের জন্য তার সরকারের একটি বৈঠক আহ্বান করেছেন। অন্যদিকে, হামাসও গাজায় যুদ্ধ বন্ধে চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।শান্তি চুক্তি সই হওয়ার খবরে গাজাবাসীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফিলিস্তিনিরা উল্লাস করছেন। সাংবাদিক সাঈদ মোহাম্মদের পোস্ট করা একটি ফুটেজে দেখা যায়, দেইর আল বালাহ-এর আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে পুরুষ ও নারীরা সঙ্গীতের তালে নেচে, শিস বাজিয়ে, হাততালি দিয়ে এবং 'আল্লাহু আকবর' রব তুলে উদযাপন করছেন। আরেক সাংবাদিক মোহাম্মদ আল-হাদ্দাদের ভিডিওতেও গাজার আরেকটি স্থানে তরুণদের নাচতে দেখা গেছে।বিশ্বনেতারা এই চুক্তির প্রথম ধাপকে স্বাগত জানিয়েছেন। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তেনিও গুতেরেস সব পক্ষকে চুক্তির শর্ত মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, "এই দুর্ভোগের অবসান হওয়া উচিত।"যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার এটিকে "গভীর স্বস্তিকর মুহূর্ত" বলে উল্লেখ করেছেন।অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেছেন, চুক্তিটি "শান্তির দিকে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ"। তিনি ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং সমঝোতা আলোচনায় মিশর, কাতার এবং তুরস্কের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।ভোরের আকাশ/মো.আ.
আফ্রিকা মহাদেশের ছোট্ট একটি দেশ ইসোয়াতিনি (পূর্বতন সোয়াজিল্যান্ড)। এই ক্ষুদ্র দেশটির বর্তমান নৃপতি তৃতীয় এমসোয়াতি। দেশটি আড়ে-বহরে ছোট হলেও রাজার পরিবার একেবারেই ছোট নয়।আফ্রিকার এই ছোট দেশটির নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান খুবই সাদামাঠা। অর্থনৈতিক ভাবেও দেশটির বেহাল দশা। এত কিছু হলে কী হবে, দেশের রাজা কাটান বিলাসী জীবন। ঠাঁটবাটও নেহাত কম নয়।রাজার মোট ৩০ জন স্ত্রী, সব মিলিয়ে ৩০-৩৫ জন সন্তান। গৃহকর্ম সহায়কের সংখ্যা গুনে গুনে একশো। পুরো পরিবার ও পরিচারকদের নিয়ে আবু ধাবিতে এসেছিলেন আফ্রিকার অবশিষ্ট নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের সদস্য এমসোয়াতি। চলতি বছরের ১০ জুলাই ব্যক্তিগত বিমানে করে রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যেরা হাজির হন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আবু ধাবি বিমানবন্দরে। সেই পুরনো ভিডিয়ো নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয় সমাজমাধ্যমে।ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ব্যক্তিগত জেট থেকে নামছেন এক জন পুরুষ। পোশাকটি দিয়ে শুধুমাত্র রাজার শরীরের নিম্নাংশ ঢাকা। উর্ধ্বাঙ্গ প্রায় নিরাবরণ। তাঁর পিছনে সুসজ্জিত ও আধুনিক পোশাক পরা কয়েক জন রমণী। ভিডিয়োটি প্রথমে সকলের নজর কেড়েছিল বেশ কয়েকটি কারণে। নেটাগরিকদের মনে প্রশ্ন জেগেছিল কেন হঠাৎ করে অর্ধেক পোশাক পরা ব্যক্তিটিকে তাঁর আশপাশের লোকেরা মাথা ঝুঁকিয়ে কুর্নিশ জানিয়ে অভিবাদন করছেন ও সেলাম ঠুকছেন। স্বাভাবিক ভাবেই সকলের কৌতূহলী প্রশ্ন ছিল, কে এই ব্যক্তি? অর্ধেক পোশাক পরে কেন তিনি এত বিলাসবহুল ভ্রমণ করছেন? তাঁর সঙ্গে থাকা মহিলারাই বা কারা?জানা যায়, তিনি রাজা এমসোয়াতি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজপুত্র-কন্যারাও। রাজপরিবারের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ১০০ জন পরিচারকও ছিল। বৈষয়িক ও অর্থনৈতিক আলোচনার জন্য আবু ধাবিতে এলেও রাজার বিলাসী জীবন নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয় সমাজমাধ্যমে ও সংবাদমাধ্যমে। সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজা ও তাঁর বিরাট সংসার নিয়ে হঠাৎ করে চলে আসার ফলে আবু ধাবি বিমানবন্দরের কাজকর্ম সাময়িক ভাবে লাটে ওঠে।রাজার আগমন এতটাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল যে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দেখভালকারীরা তিনটি টার্মিনাল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অস্থায়ী লকডাউনও জারি করে দেওয়া হয় সেখানে। রাজা এমসোয়াতিকে চিতাবাঘের ছাপের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা অবস্থায় দেখা গিয়েছে সেই ভিডিয়োয়। রানিরা ধরা দিয়েছেন উজ্জ্বল, রঙিন পোশাকে। রাজার ১০০ জন পরিচারকের দল রাজকীয় জিনিসপত্র এবং রসদ ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত ছিল।দেশ গরিব হলে কী হবে, রাজা এমসোয়াতির জীবন বৈচিত্রে ভরপুর। বিদেশে গেলে ব্যক্তিগত বিমান ছাড়া চলেন না। গ্যারাজে রয়েছে রোলস রয়েস থেকে শুরু করে একাধিক বিদেশি বিলাসবহুল গাড়ি। কয়েকশো কোটি টাকা দিয়ে স্ত্রীদের রোলস রয়েস কিনে দিয়েছিলেন রাজা, এমনটাই দাবি তুলেছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।তৃতীয় এমসোয়াতি ১৯৮৬ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশটি শাসন করে আসছেন। একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদ ১ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। নির্মাণ, পর্যটন, কৃষি, টেলি যোগাযোগের মতো বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের মালিক রাজা নিজে। রাজার বিলাসবহুল জীবনযাত্রা এবং দেশের নাগরিকদের দৈনন্দিন সংগ্রামের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত বলেও অভিযোগ।রাজার সম্পত্তি ফুলেফেঁপে উঠলেও সে দেশের জনগণের অবস্থা শোচনীয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশটির স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা। সরকারি হাসপাতালে রয়েছে ওষুধের ঘাটতি। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা অনুদানের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ না করে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ইসোয়াতিনিতে ২০২১ সালে বেকারত্ব ২৩% থেকে বেড়ে ৩৩.৩% হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের জাতীয় সম্পদ রাজপরিবারের কুক্ষিগত বলে জনগণের ৬০ শতাংশই দারিদ্রসীমার নীচে বাস করেন বলে জানা গিয়েছে।ইসোয়াতিনির জনতা যতই কষ্টে দিনপাত করুক না কেন, রাজা আছেন মহাসুখে! প্রতি বছর একটি করে বিয়ে সারেন এমসোয়াতি। প্রতি বছর তিনি ঐতিহ্যবাহী ‘রিড ড্যান্স’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এক জন করে নতুন কনে নির্বাচন করেন। সেইমতো বর্তমান রাজার ৩০ জন স্ত্রী রয়েছেন। যদিও সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে বর্তমানে তাঁর সঙ্গে ১৫ জন স্ত্রী রয়েছেন। ৩৫টিরও বেশি সন্তান রয়েছে রাজার।এই দেশের রাজাদের ঐতিহ্যবাহী একটি নামে ডাকা হয়, তা হল ‘দ্য লায়ন’। তাঁদের পোশাকও রাজার পরিচয় বহন করে। বিয়ে করার জন্য স্ত্রী বাছাই করার পদ্ধতিটিও স্বতন্ত্র। প্রতি বছর অগস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে সোয়াজি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার কুমারী নারী এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রাজা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন এবং তাঁদের প্রতি সম্মান জানান। এই সমস্ত তরুণীর মধ্যে থেকে এক জনকে নিজের স্ত্রী হিসাবে বেছে নেন রাজা।শোনা যায়, বর্তমান রাজার বাবা প্রাক্তন রাজা দ্বিতীয় সোভুজার ১২৫ জন স্ত্রী ছিলেন। কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ২১০ জনেরও বেশি সন্তান এবং প্রায় ১ হাজার নাতি-নাতনি ছিলেন তাঁর। আবার কেউ কেউ বলেন, প্রাক্তন রাজার ৭০ জন ঘরনি ছিলেন।রাজার আবু ধাবি সফরের ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরে সমালোচনার বন্যা বয়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। দেশের নাগরিকদের দুর্দশার মধ্যেও রাজার অমিতব্যয়ী ও জাঁকজমকপূর্ণ জীবন নিয়ে কটাক্ষ ধেয়ে এসেছে রাজা ও তাঁর পরিবারের দিকে। কেউ কেউ বলছেন, রাজার পরিবারকে পুরো একটা গ্রামের মতো মনে হচ্ছে। কেউ কেউ আরও তীব্র ভাষায় রাজার নিন্দা করেছেন। এক জন লিখেছেন, “এই ব্যক্তি যখন ব্যক্তিগত বিমানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তখন তাঁর দেশের লোকেরা অনাহারে মারা যাচ্ছেন।’’নেটমাধ্যমে অনেকের দাবি, দেশটিতে সমস্ত জায়গায় এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছোতে পারেনি। সেখানে রাজা এতগুলি বিয়ে করে দামি দামি উপহারে দেশের জনগণের টাকা উড়িয়ে দিতে কসুর করছেন না।দেশটির নামের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের নামের মিল থাকায় অনেকেই ভুল বুঝতেন। তাই ২০১৮ সালে দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে পূর্তি উপলক্ষে রাজা এমসোয়াতি দেশের নাম পাল্টে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সোয়াজিল্যান্ডের নতুন নামকরণ করা হয় ইসোয়াতিনি। ৬,৭০৪ বর্গমাইলের এই দেশটির পুরো নাম ‘দ্য কিংডম অফ ইসোয়াতিনি’। এর অর্থ সোয়াজিদের ভূমি।শতাংশের হিসাবে বিশ্বে এইচআইভি রোগীর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি এই ইসোয়াতিনিতে। দেশের জনসংখ্যার ২৭ শতাংশই রোগাক্রান্ত। ১০ কোটি ৩০ লক্ষ জনসংখ্যার দেশটিতে এইচআইভি রোগীর সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ১০ হাজার জন। লিঙ্গবৈষম্য, বিভিন্ন অধিকার থেকে দেশবাসীকে বঞ্চিত করা খুব সাধারণ ব্যাপার দেশটিতে এমনটাই দাবি তুলেছে সে দেশের জনসংখ্যার অধিকাংশ। দেশের অভ্যন্তরীণ অরাজকতা বিশ্বের দরবারে যাতে প্রকাশিত না হয় সে জন্য সংবাদমাধ্যমগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে।সূত্র: আনন্দবাজারভোরের আকাশ/মো.আ.