ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২৯ পিএম
বেলুচিস্তানে ভয়াবয় বিস্ফোরণ! নিহত ৩
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে মঙ্গলবার সকালে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যা তীব্র ক্ষত সৃষ্টি করেছে। কোয়েটা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে মাস্তাং শহরের একটি ব্যস্ত এলাকায় পুলিশ বাহিনীর একটি গাড়ির সামনে ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরিত হয়। এতে তিন পুলিশকর্মী নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১৬ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বেলুচিস্তান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানান, এই হামলা ছিল একটি সুপরিকল্পিত আইইডি হামলা, যা পুলিশের গাড়ির সামনে বিস্ফোরিত হয়েছে। বিস্ফোরণের ফলে পুলিশের গাড়িটিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র তৈরি হয়েছে। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা খুবই গুরুতর বলে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, হামলার পর পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে জানা যায়, মোট ১৮ জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। তবে কিছু প্রতিবেদন অনুসারে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, কাছাকাছি ভবন ও অন্যান্য স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং গুরুতর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এখনো পর্যন্ত কোনও সন্ত্রাসী সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপের কারণে এমন হামলার সম্ভাবনা আগেই ছিল। গত কিছু মাসে বেলুচিস্তানে এই ধরনের হামলার সংখ্যা বেড়েছে এবং এতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। তবে এটি আরও স্পষ্ট যে, এই বিস্ফোরণের মাধ্যমে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণের মাত্রা বাড়াতে চাইছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা বেলুচিস্তানের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে, বিশেষ করে যখন বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এবং রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরিস্থিতি চলমান। এর ফলে পাকিস্তানি সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হতে পারে, তবে এটি স্থানীয় জনগণের মাঝে আরও ভয় এবং অবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পারে।
গত মাসে বালোচিস্তানের বোলানে মাশকাফ সুড়ঙ্গে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ করেছিলেন বালোচ বিদ্রোহীরা। প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে পাকিস্তানি সেনার অভিযানে উদ্ধার হন যাত্রীরা। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দাবি, সব বিদ্রোহীর মৃত্যু হয় এই অভিযানে। বিদ্রোহীদের পাল্টা দাবি, সংঘর্ষে পাক সেনার ৩০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর পরই বালোচ বিদ্রোহীদের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, পাক সেনা যদি তাঁদের উপর হামলার চেষ্টা করে, তা হলে তাঁদের পরবর্তী নিশানা হবে ইসলামাবাদ। তার পর থেকে বেলুচিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় পাক সেনা এবং পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
গত মাসেই বালোচিস্তানের তুরবত শহরে সেনার কনভয়ে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। কনভয়ে থাকা বেশ কয়েক জন পাকিস্তানি জওয়ান ওই হামলায় জখম হন। মার্চের শেষের দিকে বালোচিস্তানের বন্দর শহর গ্বদর থেকে করাচিগামী একটি বাসকে কালমত এলাকায় থামিয়ে সন্দেহভাজন বেলুচিস্তান লিবাবরেশন আর্মি (বিএলএ)-র বিদ্রোহীরা পাঁচ যাত্রীকে খুন করেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ