শেষ হলো হজ ফ্লাইট, সৌদি পৌঁছেছেন ৮৫হাজার ১৬৪ হজযাত্রী
হজ পালনের উদ্দেশে বাংলাদেশ থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৮৫ হাজার ১৬৪ হজযাত্রী। সরকারি-বেসরকারি মোট ২১৯টি ফ্লাইটে সৌদিতে পৌঁছান তারা। রোববার (১ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা ও সৌদি আরবের সূত্রে হজ বুলেটিনের আইটি হেল্প ডেস্ক জানিয়েছে, ২১৯টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১০৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ৮০টি, ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ৩১ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে সৌদি পৌঁছান ৪১ হাজার ৯০২ হজযাত্রী, সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ৩০ হাজার ৭৮৯ জন ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ১২ হাজার ৪৭৩ জন হজযাত্রী সৌদি পৌঁছান।
এদিকে চলতি বছর পবিত্র হজপালনে সৌদি আরবে গিয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৫ বাংলাদেশি। সর্বশেষ ২৯ মে মৃত্যুবরণ করেছেন মাদারিপুরের মোজলেম হাওলাদার। মৃতদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ ও একজন নারী। এর মধ্যে মক্কায় নয়জন ও মদিনায় ছয়জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে আইটি হেল্প ডেস্ক।
গত ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এ দিন ৩৯৮ জন হজযাত্রী নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট সৌদির উদ্দেশে যাত্রা করে। ৩১ মে শেষ হয়েছে এ ফ্লাইট পরিচালনা। ১০ জুন থেকে পুনরায় হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। শেষ হবে ১০ জুলাই।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে যাবেন পাঁচ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮১ হাজার ৯০০ জন। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ৭০টি।
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
গাজায় ইসরায়েলের টানা দুই বছরের আগ্রাসনে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, নিশানা হয়েছেন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরাও। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ সময় ২৫০ জন ইমাম, খতিব ও ধর্মীয় নেতা নিহত হয়েছেন। ধ্বংস করা হয়েছে ৮৩৫টি মসজিদ, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১৮০টি মসজিদ। হামলার বাইরে থাকেনি খ্রিস্টান উপাসনালয়ও।গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আস-সাওয়াবিতা জানান, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনি সমাজের আত্মিক ও নৈতিক কাঠামো ধ্বংসের চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য তারা ধর্মীয় নেতাদের টার্গেট করছে, মসজিদ ও গির্জা ধ্বংস করছে এবং সাধারণ নাগরিক স্থাপনাগুলোতে নির্বিচারে বোমা ফেলছে।তিনি বলেন, “ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা জাতির নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতীক। ইসরায়েল তাদের হত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় চেতনা ধ্বংস করতে চাইছে।”তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ফিলিস্তিনের সাবেক ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ও আল-আকসা মসজিদের খতিব ইউসুফ সালামা। এছাড়া গাজার বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা ওয়ায়েল আজ-জারদ এবং কোরআন শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক ওয়ালিদ আওয়াইদাও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।গাজার বিভিন্ন গির্জাতেও একাধিকবার বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত এসব গির্জায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ২০ জন খ্রিস্টান নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গির্জাগুলোর মধ্যে রয়েছে—ঐতিহাসিক সেন্ট পারফিরিয়াস (রোমান অর্থডক্স), হোলি ফ্যামিলি চার্চ (ক্যাথলিক) ও ব্যাপটিস্ট ইভানজেলিকাল চার্চ।ইসমাইল আস-সাওয়াবিতা বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও নেতাদের ওপর এই হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন। এটি স্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধ ও ধর্মীয় নিপীড়নের শামিল।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ এখন এক নির্মম গণহত্যায় পরিণত হয়েছে। গাজার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজার ১৩৯ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন—যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। খাদ্য ও ওষুধ সংকটে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৪৬০ জন, এদের মধ্যে ১৫৪ জন শিশু।ধ্বংসস্তূপের মাঝেও গাজার মানুষ থেমে নেই। বেঁচে থাকা ইমামরা এখনো ভাঙা মিনারে দাঁড়িয়ে আজান দিচ্ছেন, উচ্চারণ করছেন—“আল্লাহু আকবার”।সূত্র : আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সিভোরের আকাশ//হর
মানুষের জীবনে আল্লাহর রহমত লাভ করা এক মহাসৌভাগ্যের বিষয়। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে—যারা নামাজ কায়েম করে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করে, তাদের ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়।আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, “আর তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসুলের আনুগত্য কর, যাতে তোমাদের ওপর রহমত করা হয়।”(সুরা নূর, আয়াত: ৫৬)নামাজ কায়েমের গুরুত্ব:নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর একটি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “কেয়ামতের দিনে বান্দার যে আমলের হিসাব সবার আগে নেওয়া হবে, তা হলো নামাজ। যদি নামাজ সঠিক হয়, তাহলে সে সফল হবে; আর যদি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে সে ব্যর্থ হবে।”(আবু দাউদ, হাদিস: ৮৬৪)অন্য এক হাদিসে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন জামাতে নামাজ আদায় করবে এবং প্রথম তাকবির পাবে, তার জন্য দুইটি মুক্তিপত্র লেখা হবে—একটি জাহান্নাম থেকে মুক্তির, অন্যটি নেফাক (কপটতা) থেকে মুক্তির।”(তিরমিজি, হাদিস: ২৪১)যাকাত প্রদানের ফজিলত:যাকাত শুধু আর্থিক লেনদেন নয়, বরং এটি সমাজে সাম্য ও সহানুভূতির প্রতীক। যাকাত আদায় না করলে এর কঠিন পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.), “যে ব্যক্তি সোনা-রুপার জাকাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন তার সম্পদ জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত হয়ে তাকে দগ্ধ করবে। যতক্ষণ না জান্নাত বা জাহান্নামের ফয়সালা হয়, ততক্ষণ এই শাস্তি চলতে থাকবে।(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৮৭)রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য:আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন, “তোমরা আল্লাহ ও তাঁর উম্মী নবী রাসুলের প্রতি ঈমান আনো, যিনি আল্লাহ ও তাঁর বাণীতে বিশ্বাস রাখেন। আর তোমরা তাঁর অনুসরণ কর, যাতে তোমরা সঠিক পথপ্রাপ্ত হও।”(সুরা আল-আরাফ, আয়াত: ১৫৮)এই তিনটি আমল পালন করলে আল্লাহর রহমত ও সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব—এ কথা কোরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত।ভোরের আকাশ//হ.র
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চরের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০২৬ সালে রমজান মাস শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে। সেই হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অথবা ২০ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) থেকে শুরু হতে পারে রোজা।আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা সংস্থা এমিরেত অ্যাস্ট্রেনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান গালফ নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ২০২৬ সালের রমজান মাসের চাঁদের জন্ম হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১ মিনিটে এবং সেটি আকাশে চোখে পড়বে ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায়। তবে সূর্যাস্তের পর মাত্র এক মিনিট আকাশে দেখা যাবে সেই চাঁদ।আল জারওয়ান আরও বলেছেন, এবারের রমজানের প্রথম দিকে আমিরাতের বাসিন্দাদের জন্য সেহেরি থেকে ইফতার শুরু পর্যন্ত সময়ের ব্যপ্তি হবে ১২ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট এবং মাসের শেষের দিকে এই সময়সীমা পৌঁছাবে ১৩ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে। তিনি আরও বলেছেন, রমজানের শুরুর দিকে আমিরাতের তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করবে, আর শেষের দিকে তাপমাত্রা থাকবে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।প্রসঙ্গত, রোজা বা সিয়াম ইসলাম ধর্মের তৃতীয় স্থম্ভ। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রমজান মাসে প্রতিদিন সূর্যোদয়ের আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানি ও খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা; রাতে এশার নামাজের পড়ে পড়েন তারাবিহ নামাজ।এক মাস পর শাওয়াল মাসের এক তারিখ ঈদুল ফিতর উদযাপনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে প্রবেশ করেন মুসল্লিরা।ভোরের আকাশ/তা.কা
পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম আজ। ‘ইয়াজদাহম’ ফারসি শব্দ। এর বাংলা অর্থ এগারো। ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ বলতে রবিউস সানি মাসের ১১তম দিনকে বোঝায়। এটি আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর স্মরণে পালিত হয়।শনিবার (৪ অক্টোবর) ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম পালিত হচ্ছে।হিজরি ৫৬১ সালের এই দিন বিখ্যাত ইসলাম প্রচারক ও সাধক হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) মৃত্যুবরণ করেন। মূলত, তার মৃত্যুর দিনটিকেই ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ হিসেবে পালন করা হয়। ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম হলো- আবদুল কাদির জিলানীর (রহ.) ওফাত দিবস। হিজরি ৫৬১ সনের ১১ রবিউস সানি তিনি ইন্তেকাল করেন।তার বাবার নাম সৈয়দ আবু সালেহ এবং মায়ের নাম বিবি ফাতেমা। তিনি ৪৭০ হিজরিতে ইরানের জিলান নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাগদাদের মহান পীর হজরত আবু সাঈদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন মাখরুমির (রহ.) কাছে মারেফাতের জ্ঞানে পূর্ণতা লাভ করেন এবং খেলাফত প্রাপ্ত হন।একথা অনস্বীকার্য হজরত আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) এর অবদান মুসলিম বিশ্বে অনন্য। তিনি মুসলিমদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এ দিনে তার শান্তির জন্য দোয়া-মোনাজাত ও তার জীবনী আলোচনা করা যেতে পারে।ভোরের আকাশ/তা.কা