নতুন সংবিধানের দাবিতে রাজপথে এনসিপি : নাহিদ ইসলাম
নতুন সংবিধান, বিচার ও সংস্কারের দাবিতে রাজপথে নেমেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শুক্রবার বিকেলে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে সিলেটের শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশে এমন দাবি জানান দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “নতুন সংবিধানের জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি। এমন একটি সংবিধান চাই, যেখানে আপনার-আমার অধিকার থাকবে, সিলেটের মানুষের মর্যাদার সুরক্ষা থাকবে।”
তিনি আরও জানান, আগামী ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে আবারও সমবেত হবেন তারা। উদ্দেশ্য, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ‘জুলাই সনদ’ আদায়ের আন্দোলনকে আরও জোরালো করা। তাঁর কথায়, “ইনশাআল্লাহ, শহীদ মিনার থেকেই আমরা এই দাবিগুলো আদায় করবো।”
সিলেটের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই অঞ্চল থেকে ইসলামের সম্প্রীতি ও ইনসাফের বাণী সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বহুজাতি ও বহু সংস্কৃতির এই অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে আমাদের এগোতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম— প্রতিটি পর্বেই সিলেটের মানুষ বুক চিতিয়ে লড়েছে। এমনকি সাম্প্রতিক জুলাই অভ্যুত্থানেও সিলেট ভূমিকা রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রবাসী সিলেটিদের অবদান নিয়েও কথা বলেন এনসিপি আহ্বায়ক। তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশের বড় একটি অংশ সিলেটিরা। তারা লন্ডনকে জয় করেছে, বাংলাদেশকে জয় করেছে। আজ লন্ডনের মসজিদ, স্কুল, রেস্টুরেন্ট ও রাস্তায় তাদের ঘামের বিনিময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল। সেইসব প্রবাসী ভাইদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে আমরা সোচ্চার।”
এনসিপির এই কর্মসূচিকে ঘিরে সিলেটের শহীদ মিনার চত্বরে জমায়েত হয় দলটির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। বক্তারা সবাই বিচার, মানবাধিকার ও নতুন সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শহিদ আফনান ফাইয়াজের পল্লবীর বাসায় গিয়েছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে তিনি আফনান ফাইয়াজের বাসায় যান। শহিদ আফনান ফাইয়াজের পিতা আব্দুস সামাদ রিজভীকে কাছে পেয়ে আবেগআপ্লুত পড়েন।রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাইলস্টোনের ঘটনার পর থেকেই সার্বক্ষণিক আপনাদের সবার খোঁজ রাখছেন। আপনাদের কষ্টের সঙ্গে কোনোকিছুরই তুলনা হয় না। আমরা শুধুমাত্র আপনাদের কাছে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে এসেছি। আফনান ফাইয়াজ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।সাক্ষাৎকালে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, ছাত্রদল নেতা ডা. সাব্বির প্রমুখ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে কোথাও সুশাসন ও নিয়ন্ত্রণ নেই। আগে যে ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে হতো, এখন তাকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে। পুলিশেও কোনো পরিবর্তন হয়নি।শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান রচিত ‘অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা: যাপিত জীবনের আলেখ্য’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, কোথাও কোনো সুশাসন নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই। পুলিশে কোনো পরিবর্তন হয়নি। তবে রাতারাতি সংস্কার করে ফেলা সম্ভব নয়। এ জন্য সময় লাগবে। এ জন্য গণতান্ত্রিক চর্চা বাদ দিয়ে বসে থাকা যাবে না। তিনি বলেন, কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। এ জন্য কোনো রকম বিলম্ব না করে অতি দ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে জনগণের প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠিয়ে সংস্কার করতে হবে। সেই সংসদের জবাবহিদিতা থাকবে।তিনি আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা খুব ভালো করে উপলব্ধি করি বর্তমান রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত পরিবর্তন দরকার। অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন করতে হবে। তবে, এটা রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়।বিএনপি মহাসচিব বলেন, ট্রাম্পের ট্যারিফ (শুল্ক) সামনে বড় বিপদে ফেলতে পারে। মনে রাখবেন, রাজনৈতিক দল দেশের উন্নয়নে জনস্বার্থে সব সময় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে দলের মতো দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে দাবি করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তার ভাষায়, ‘দলকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তেমনিভাবে দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।’গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।এসময় জামায়াত আমির আরও দাবি করেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতার বেগমপাড়া কিংবা পিসি পাড়া নেই। আমাদের কেউ পালায়নি, পালাবেও না।’শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই জামায়াত নেতারা সংকটের সময় পালিয়ে না গিয়ে বরং দেশে ফিরে এসে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেশত্যাগ করে বিদেশে দ্বিতীয় ঠিকানা বানানোর মতো কোনো নেতা জামায়াতে নেই।’তিনি বলেন, ‘যারা দেশকে ভালোবাসে না, তারাই ব্যক্তিস্বার্থে বেগমপাড়া বানিয়ে সরে পড়েছে। অন্যদিকে জামায়াতের নেতাকর্মীরা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। তাদের বিচারিক হত্যাও ঘটেছে।’বিগত ৫৪ বছরে জামায়াত কোনো নাগরিকের প্রতি অবিচার করেনি দাবি করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়। থাকবেও না। আমরা দল পরিচালনায় যেমন শৃঙ্খলাবদ্ধ, তেমনিভাবে রাষ্ট্র পরিচালনাও করতে পারব। যারা নিজেদের দলই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা দেশেরও নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হবে।’ইসলামকে পৃথিবীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক ধর্ম উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, ধর্ষক, খুনি ও লুটেরাদের ভয় থাকবে। এজন্যই তারা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র মানে নারীদের চলাচলের ওপর কোনো বিধিনিষেধ নয়।’তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যেখানে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত পরিবারের মা-বোনেরা বাজারে যেতে পারেন, হাসপাতালে যেতে পারেন, মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে পারেন, সেখানে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে কেন নারীদের স্বাধীনতায় বাধা আসবে?’তার ভাষায়, ‘রাষ্ট্র কোনো ধর্ম বা লিঙ্গভেদ করতে পারে না। ইসলামিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় নারী-পুরুষ, মুসলিম-অমুসলিম সব নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী হবে। জামায়াত একটি ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনের পথে চলতে চায়, যেখানে থাকবে না বৈষম্য বা জুলুম।‘অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী আগামী দিনে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের মানুষের কল্যাণে আমরা ইতোমধ্যে ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’তিনি জানান, ‘জামায়াতের চলমান রাজনৈতিক অগ্রযাত্রা কোনো ষড়যন্ত্রে থেমে যায়নি, যাবে না। একইসঙ্গে তিনি একটি আধুনিক, মানবিক ও কল্যাণভিত্তিক রাষ্ট্র নির্মাণে দলটির নেতৃত্বে জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।সম্মেলন পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সমন্বয়হীনতার পাশাপাশি অভিজ্ঞতার অভাব থাকায় অন্তর্বর্তী সরকার বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। নির্বাচিত সরকার না হওয়ায় দেশের নানা সংকটে তারা দায় এড়াতে পারছে। নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে সরকার নানা ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়বে।গতকাল শুক্রবার মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান আনিকার পরিবারকে সহমর্মিতা জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।গয়েশ্বর বলেন, সরকার (সরকারের কার্যক্রম) দৃশ্যমান না। নির্বাচিত সরকার না হওয়ায় দেশের নানা সংকটে তারা দায় এড়াতে পারছে। নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে সরকার নানা ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়বে এবং সংকট সৃষ্টি হবে। এ সময় বিমান দুর্ঘটনার চার দিন পার হলেও বিমানবাহিনী এখন পর্যন্ত কোনো দায়দায়িত্ব না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।তিনি আরও বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।ভোরের আকাশ/এসএইচ