ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:০৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ফ্যাসিবাদ ও মৌলবাদের হাত থেকে যদি দেশকে রক্ষা করতে চান, তাহলে জনগণের জন্য রাজনীতি করুন, এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য পাগল হবেন না। যদি নিঃস্বার্থভাবে গণতন্ত্র উপহার দিতে চান, দেশকে একটি জায়গায় আনতে চান, তাহলে আগে নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করুন। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারবেন।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের হিউম্যান রাসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশন (হিউরাফ) আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব এবং আগামীর গণতন্ত্র ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মৌলবাদীরা বেহেস্তের টিকেট বিক্রি করছে। অর্থাৎ, তাদের সঙ্গে থাকলে আপনি বেহেস্তে যাবেন, না থাকলে দোজখে যাবেন। তারা নিজেরা বেহেস্তে যাবে কিনা- সে কথা তারা জানে না। আমরা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে এখন সাম্প্রদায়িক উগ্র-উন্মাদনার সৃষ্টি শুরু হয়েছে। যেটার মাধ্যমে মব তৈরি হয়। আমরা যদি গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে না রাখতে পারি, তাহলে সাম্প্রদায়িকতা হলো ফ্যাসিবাদের চেয়ে দ্বিগুণ কঠিন ও জনবিরোধী। এই আধুনিক বিশ্বে মুক্তচিন্তা, প্রতিভার বিকাশ তারা করতে দেবে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ ও মৌলবাদের হাত থেকে যদি দেশকে রক্ষা করতে চান, তাহলে জনগণের জন্য রাজনীতি করেন, এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য পাগল হবেন না। যদি নিঃস্বার্থভাবে গণতন্ত্র উপহার দিতে চান, দেশকে একটি জায়গায় আনতে চান, তাহলে আগে নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করেন। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, আমাদের অবস্থা হচ্ছে এমন, মুসল্লির চেয়ে ইমাম বেশি। আমরা বোধ হয় সেই অবস্থায় আসছি এখন। জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা একেক জনের একেক রকম। আমার মনে হয়, জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ৫ আগস্টের পর ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। একসঙ্গে থাকলাম, একসঙ্গে জেল খাটলাম, এখন যার যার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার জন্য আমরা আগের মতো এক সুরে কথা বলতে পারি।
ইতোমধ্যে বিএনপিকে ভারতের দালাল বলা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন, তারা নতুন করে আবার বৈষম্যের সৃষ্টি করছেন। তাহলে আমরা কি স্বপ্ন দেখলাম, আর আমরা কোনো পথে এগুচ্ছি ?
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কতদিন লেখা নেই। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ লেখা আছে ৯০ দিন। কিন্তু এই সরকারের মেয়াদ হলো অনন্তকাল। যতদিন থাকবে, ততদিন এটা বৈধ। যদি তাই না হয়, একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকারের আকাঙ্ক্ষা পূরণে তাদের কেনো সময় হয় না। যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারে তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) দুই বছর লাগে কেনো?
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনো সাংঘর্ষিক ব্যাপার নেই, অপব্যাখ্যা আছে। এই অপব্যাখ্যার কারণে মানুষ ন্যায়ের কথা বলতে পারে না। অনেকগুলো দল আছে যারা ট্র্যাভেল এজেন্সির মতো বেহেস্তের টিকেট বিক্রি করছে।
হিউরাফের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও বিএনপি স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফাত আলী সফু প্রমুখ।
ভোরের আকাশ/এসএইচ