ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫ ০৮:২৪ পিএম
গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম আইন অনুযায়ী-কোনো ব্যক্তিকে গুম করা একটি মানবাধিকারবিরোধী অপরাধ। মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। গতকাল সোমবার গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি একথা বলেছেন।
তারেক রহমান বলেন, প্রতি বছরের মতো এবছরও মে মাসের শেষ সপ্তাহে গুম সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে এই আন্তর্জাতিক সপ্তাহ। ২০০৯ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রায় ৬৬৬ জন ব্যক্তি গুম হয়েছেন। আমাদের হিসেবে উল্লিখিত গুমের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি হবে। এদের মধ্যে অধিকাংশ এখনও নিখোঁজ, অনেকেরই মৃতদেহ পাওয়া গেছে আবার অনেকদিন পর কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এটি বিগত আওয়ামী শাসনামলের একটি বর্বর দুঃশাসনের নমুনা।
তিনি আরও বলেন, উল্লিখিত সংখ্যা গুম হয়ে যাওয়া পরিবার কর্তৃক প্রদত্ত রিপোর্ট এর ভিত্তিতে, আর অনেক আতঙ্কিত পরিবারই রিপোর্ট করার সাহস পায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া ব্যক্তিদের ১০-১৫ বছরেও কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের গুমের ঘটনাগুলোর সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছেন বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। এছাড়াও গুমের শিকার হয়েছেন দেশের ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী এবং সাধারণ মানুষও।
তিনি বলেন, গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহে আমি এই গুম হওয়া মানুষদের অসহায় পরিবারের সঙ্গে আমি সংহতি প্রকাশ করছি। আর কোনো ব্যক্তি যাতে গুমের শিকার না হয় সে জন্য রাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। আর যেন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের মতো অমানবিক ঘটনা না ঘটে সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে। রাজনৈতিক দর্শন বা রাষ্ট্রীয় সীমানাকে অতিক্রম করে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী গুমের শিকার সব ব্যক্তি ও পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি।
এদিকে, আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহে দেওয়া বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে গুমের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রবল প্রতিবাদী হলেও বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার দেড় দশক ধরে কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা না করে বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের পাইকারি হারে গুম করেছে।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে একদিকে সমাজ ও রাজনীতিতে মাফিয়াদের উত্থান অন্যদিকে গণতন্ত্রকামী মানুষ জোরপূর্বক গুমের আতঙ্কে দিন-রাত উদ্বিগ্ন থেকেছে। সবার চোখের সামনে থেকে ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গুম করা হলেও পতিত আওয়ামী লীগ সরকার বরাবরই গুমের বিষয়টি সকল আন্তর্জাতিক ফোরামে নিলর্জ্জের মতো অস্বীকার করেছে। একমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষেই সম্ভব সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কারণ, নির্বাচিত সরকারকে জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ