ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৪:৩২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আলোচনার টেবিলে সমস্যার নিষ্পত্তি হবে বলেই মনে করছে বিএনপি। তবে পিআর সিস্টেমে কেউ নির্বাচন চাইলে সে বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন বিষয়ে তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তার তৃতীয় সংলাপে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেনে, জাতির কাছ থেকে জোর জবরদস্তি করে কিছু আদায় করার চেষ্টা দূরভীসন্ধিমূলক। জামায়াতে ইসলামীসহ কিছু ইসলামি দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যই মাঠে নেমেছে। এদের আচরণ, কথাবার্তা সন্দেহজনক।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবে নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের কোনো এজেন্ডা ছিল না। সেখানে উল্লেখ ছিল নিম্নকক্ষে পূর্বের ন্যায় আসনভিত্তিক নির্বাচন হবে। আর উচ্চকক্ষ পিআর পদ্ধতিতে গঠন হবে।
তিনি বলেন, এই প্রস্তাব মেনেই কমিশনের সঙ্গে জামায়াত আলোচনায় বসেছে। তাহলে এখন কেন টোটাল নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি করছে তারা। আসলে তারা চায় ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসিত হোক। যেটা জাতির জন্য দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, এখনো আলোচনা চলছে। তাহলে কেন রাজপথে বিশৃঙ্খলা। আমরা চাই আলোচনার টেবিলেই সব সমস্যার সমাধান হোক।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জামায়াত প্রশ্ন করছে বর্তমান সরকার সাংবিধানিক কি না। এটা ভীষণ অবাক করার মতো। কারণ তারাও জানে সুপ্রিম কোর্টের অবজারভেশনের ভিত্তিতেই রাষ্ট্রপতি এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের অনুমতি দিয়েছিল। এখন জামায়াতের এই প্রশ্ন নিঃসন্দেহে স্ববিরোধিতা। জনগণ জানতে চাচ্ছে, আসলে জামায়াতের উদ্দেশ্য কী?
তিনি বলেন, যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গত ১৬ বছর বিএনপি আন্দোলন করেছে রক্ত ঝরিয়েছে, গণঅভ্যুত্থান হয়েছে সে স্বপ্ন কোনোভাবেই বৃথা হতে দেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গণতান্ত্রিক চর্চায় পৃথিবীতে একইসাথে কেউ সরকারি দল ও বিরোধী দলে থাকতে পারে না। যেদিন ছাত্র প্রতিনিধিরা সরকারে গেলো, সেদিন আমি বুঝে গেলাম এরা রাষ্ট্র বিনির্মাণে আর ভূমিকা তেমন বেশি রাখতে পারবে না।
ছাত্র প্রতিনিধিদের সরকারের দায়িত্বে আসাকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তার মতে, দায়িত্বে না এলে তারা প্রেশার গ্রুপ হিসেবে থাকতে পারতো।
তিনি বলেন, ছাত্রদের সরকার থেকে সরে আসার আহ্বান জানানোই যথেষ্ট নয়, বরং ছাত্রদের মধ্যেও সেই তাগিদটা থাকতে হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিয়ে কীভাবে সংবিধানে বাস্তবায়ন হবে এটা নিয়ে বিচারবিভাগের মতামত নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি তাদের সরকার থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালে তো হবে না, তাগিদটা তাদের অনুভব করতে হবে।
নতুন কোনো সংকট তৈরি না করে ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কোনো কোনো দল কোনো কোনো দাবি করতেই পারে, কিন্তু সেটা জাতির ওপর জবরদস্তি করা ঠিক নয়। আমরা যেন পরস্পর জবরদস্তি না করি। যে পরিবর্তন আমরা করতে চাই, সেটা রাতারাতি হবে না। আসুন আমরা নতুন কোনো সংকট তৈরি না করি, ঐক্য ধরে রাখি।
জামায়াত নেতাদের উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, আপনাদের এক নেতা বললেন, কে সরকারি দল হবে, কে বিরোধী দল। তাহলে এটা আপনারা নিজেরা ঠিক করে নিয়েছেন, নাকি জনগণ ঠিক করবে? এতো আত্মবিশ্বাস থাকলে নির্বাচনে আসেন না কেন? আজকে এই বাহানা, কালকে ওই বাহানায় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন কেন? উদ্দেশ্য কি সেটা তো আমরা জানি। কাদেরকে নিয়ে আপনারা যুগপৎ আন্দোলন করছেন সেটা জনগণ দেখছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ