ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৫ ০৫:৫৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, স্বকীয়তাহীন বর্ণও মূল শব্দের উপরে উঠে কথা বলতে চায়। কিছু রাজনৈতিক দলের বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বাংলা ভাষায় কিছু বর্ণ আছে খণ্ডত, অনেশ্বর, বিসর্গ ও চন্দ্রবিন্দু। এই বর্ণগলোর কোনো স্বকীয়তা নেই। একটি বর্ণেও সঙ্গে যুক্ত হলে পড়ে আরেকটি শব্দ তৈরি হয়। যেমন- দুঃখ দু লেখতে দেওয়ার পর অনেশ্বর দিয়ে খ লিখলে দুঃখ শব্দ হয়। তারপর আপনি সম্মানের সঙ্গে বলবেন তারা-এখানেও ত-এর উপরে চন্দ্র বিন্দু দিতে হয়। তারা দিয়ে তখন সম্মানিত ব্যক্তিকে বোঝায়। খণ্ডত, অনেশ্বর, বিসর্গ ও চন্দ্রবিন্দু এই ধরনের কিছু জিনিস তৈরি হয়েছে বর্তমান রাজনীতিতে। এই বর্ণ কারো যুক্ত না হলে তাদের স্বকীয়তা নেই। এখন মূল শব্দের চেয়েও উপরে উঠে কথা বলতে চায়। ঝামেলাটা হয়েছে সেইখানে। আপনি বড়কে বড় বলবেন, না বলে তো উপায় নাই।
রোববার (১৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জনতার অধিকার পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান প্রমুখ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন বলেন, বক্তব্য যখন আমরা দেই। বক্তব্যে ভাষাগত কতগুলো দিক আছে। আগে যদি বাংলায় লেখেন ভালোবাসা তাহলে প্রেম ও আবেগ বোঝায়, আর যদি লেখেন ভালোবাসা তাহলে ভালো আবাসস্থল বোঝায়। আপনারা যদি সংশোধন না হন। কিন্তু আমি বলি, আমরা যদি সংশোধন না হই। কারণ, আপনারা আর আমরা মিলে হচ্ছে আমরা। যতক্ষণ পর্যন্ত এই আমরা- এর বোধ জাগবে না, দলগত বিভাজন থেকে কোনো কল্যাণকর কিছু আসবে না।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে। এই নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে, কি হবে, সেটার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার যে সময় সেই সময়টা না দিয়ে আগে নির্বাচনের মাধ্যমে একটা কাঠামো তৈরি করা উচিত। যেখানে লেখা থাকবে, যারাই দায়িত্বে আসুক তারা পরবর্তীতে এই পদ্ধতিগুলো নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্রহণ করতে পারেন। এরকমটা হলে পরে কিন্তু কুয়াশাটা অনেকাংশে কেটে যায়। গো ধরে বসে থাকলে আমাদের কোনো হবে না, লাভ হবে দাদাদের আর দিদিদের।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম এখন স্বস্তির জায়গা- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখন আর কোনো সংবাদমাধ্যমে কেউ হস্তক্ষেপ করে না, কেউ বলে না- এই খবরটা প্রচার করতে পারবে না’ কিংবা ওই খবরটা বারবার প্রচার করতে হবে। কোনো সাংবাদিক আর প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়ে বলে না, প্রশ্ন করতে আসিনি, প্রশংসা করতে এসেছি।
কোনো সংবাদকর্মী আর উপদেষ্টাদের পেছনে তেলের বোতল নিয়ে হাঁটে না। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের শক্তির জায়গা। মুক্ত গণমাধ্যম বা মুক্ত সংবাদ মাধ্যমের কারণেই দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা হঠাৎ করে হয়নি। আসলে তা না। বহু আগে থেকেই এ রকম ঘটনা ঘটছিল, কিন্তু প্রচারের নিষেধাজ্ঞার কারণে আগে ঘটনাগুলো মানুষ তা জানতে পারেনি। এখন মানুষ জানতে পারছে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হচ্ছে মতভেদ ও বিতর্ক। মতভেদ না থাকলে সমাজ মৃত সমাজে পরিণত হয়। তবে বিতর্ক যেন জাতীয় স্বার্থে আঘাত না হানে। আজকে জাতীয় স্বার্থের জায়গায় আমাদের দৃঢ় থাকতে হবে, যাতে কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন না ঘটে। এই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলেরই অভিন্ন অবস্থান রয়েছে। তাই জাতীয় ঐক্যের মঞ্চ ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ