‘কিছু সংস্কার’ সম্পন্ন হলে এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে কোনো দ্বিমত থাকবে না : সারজিস আলম
নির্বাচনকালীন কিছু সংস্কার প্রয়োজন রয়েছে মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রয়োজন। এগুলো সম্পন্ন হলে এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই।’
আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় এনসিপির পঞ্চগড় সদর উপজেলার সমন্বয়ক তানভিরুল বারি নয়নসহ দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তিনি হাসনাত আব্দুল্লাহসহ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা দেখে এসেছি যে, নির্বাচনকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়, কালো টাকা, পেশি শক্তির অপব্যবহার করা হয়। অদ্ভুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের এই নির্বাচনে আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখতে চাই। কেউ যেন কারো দ্বারা এখানে ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার না হয়। বিগত নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট চুরির ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘটনা আমরা আগামীর বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনে দেখতে চাই না। সেক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ততটুকু পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে এবং বিচার বিভাগের মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়াগুলো যদি একটি সুন্দর পর্যায়ে পৌঁছায়, তাহলে এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে আমাদের জায়গা থেকে দ্বিমত থাকবে না।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশে ফেরা নিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘যারা এতদিন ধরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তাদের যারা এমন দোসর ছিল, যারা তাদেরকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠায় সহযোগিতা করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্টেক হোল্ডার হিসেবে ছিল তাদের সামগ্রিক বিষয়ে আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কঠোর হস্তক্ষেপ গ্রহণ করুক। এবং এটা যেন আইনগত প্রক্রিয়ায় হয়। এই বিষয়গুলোতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সামগ্রিকভাবে কি পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা আমরা অবজার্ভ করছি।’
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র দুটি নথি এক নয় এবং ভুলভাবে গুলিয়ে ফেলা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি প্রচারণা হতে পারে, যা এনসিপির অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।বুধবার (৩০ জুলাই) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপের ২২তম দিনের মধ্যবর্তী চা-বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং ৫ আগস্টের বিজয়ের একটি ঐতিহাসিক স্বীকৃতি, যার একটি আইনি ভিত্তি থাকা দরকার। এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। অন্যদিকে, জুলাই সনদ হচ্ছে রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কমিশনে আলোচিত প্রস্তাবগুলোর একটি বাস্তবায়নযোগ্য রূপরেখা।আখতার বলেন, আমরা চাই না এমন একটি অকার্যকর, অপূর্ণ এবং মৌলিক সংস্কারবিহীন জুলাই সনদ তৈরি হোক, যেটা তিন দলের অতীত রূপরেখার মতো শুধু ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে। জুলাই সনদটি হবে কার্যকর, পূর্ণাঙ্গ সংস্কার ধারণকারী, আইনি ভিত্তিসম্পন্ন এবং তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য।কমিশনের প্রাথমিক খসড়ায় ২ বছরের বাস্তবায়নকাল উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে আখতার বলেন, এটি এনসিপি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এই ধরনের বিলম্বিত বাস্তবায়নের প্রস্তাব প্রতারণার সুযোগ তৈরি করে এবং জনগণের আকাক্সক্ষার সঙ্গে প্রতারণা করার শামিল।’জুলাই ঘোষণাপত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি না। সরকার যদি ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে ঘোষণাপত্র জারি না করে, তাহলে এনসিপি দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে নিজেরা তা জারি করবে।সরকার একটি খসড়া দিয়েছে জানিয়ে আখতার বলেন, ‘আমরা সরকারকে আমাদের পক্ষ থেকে একটি পরিণত খসড়া দিয়েছি এবং আলোচনার মধ্যেই রয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি চোখে পড়ছে না।তিনি আরও জানান, সরকার যদি আন্তরিক হয় এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমন্বয় করে, তবে ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যেই একটি পরিপূর্ণ, আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তিসম্পন্ন ঘোষণাপত্র জারি করা সম্ভব।’আখতার বলেন, আমাদের ভাইয়েরা জীবন দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানে। তাদের সেই আত্মত্যাগ যেন একটি বাস্তব ভিত্তির জুলাই ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়, আমরা সেটাই চাই।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের হৃদযন্ত্রে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ব্লক ধরা পড়েছে। এনজিওগ্রাম করার পর চিকিৎসকরা বাইপাস সার্জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর একটি হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট ডা. মমিনুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে শফিকুর রহমানের এনজিওগ্রাম করা হয়। এতে তার হৃদপিণ্ডে তিনটি মেজর ব্লক শনাক্ত হয়। চিকিৎসকরা এনজিওপ্লাস্টির পরিবর্তে বাইপাস সার্জারির পরামর্শ দিয়েছেন।জামায়াত আমীরের ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশে বক্তৃতার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ডা. শফিকুর রহমান। এরপর থেকে তার বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছিল। এনজিওগ্রামের ফলাফলের ভিত্তিতে চিকিৎসকেরা বাইপাস সার্জারিকে জরুরি বলে মত দিয়েছেন।তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে তাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হলেও শফিকুর রহমান নিজেই তা নাকচ করেছেন। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর তার ‘পূর্ণ আস্থা’ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।বর্তমানে তার সার্জারির জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। জামায়াত নেতার পরিবার দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছে।এর আগে, গত ১৯ জুলাই জাতীয় সমাবেশ মঞ্চে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে জামায়াত আমিরকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতাল ত্যাগ করলেও ফলোআপে থাকেন। এনজিওগ্রাম ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার হার্টে গুরুতর ব্লক ধরা পড়ে।ভোরের আকাশ/জাআ
জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হবে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।মঈন খান বলেন, ৫ আগস্ট যদি সত্যিই নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়, তবে সেটা যে মাসেই নির্বাচনের সময় দিক-না কেন, তা নিয়ে এত ভাবনার কারণ নাই।দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হবে। পিআর পদ্ধতির সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, পিআর পদ্ধতির গভীরে গেলে দেখা যাবে জনগণ একটি দলকে ভোট দিচ্ছে একজন ব্যক্তিকে নয়। এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশের সামাজিক অবস্থার সঙ্গে তা সংগতিপূর্ণ হবে না।তিনি বলেন, অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের দেশের সামাজিক অবস্থা এক নয়, তাই পিআর পদ্ধতি এখানে কার্যকর করা যাবে কি না, তা নিয়ে ভাবতে হবে।ভোরের আকাশ/জাআ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, স্বৈরতন্ত্রের পতন তখনই সার্থক হবে, যখন গণতন্ত্রের উত্তরণ সম্পন্ন হবে। যদি গণতন্ত্রের উত্তরণ সম্ভব না হয়, তাহলে স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসার সম্ভাবনা থেকে যাবে। যারা আজকে বিভিন্ন অজুহাতে গণতন্ত্রের উত্তরণের যে নির্বাচন, সেই নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন বা বাধা দিচ্ছেন, তারা পক্ষান্তরে স্বৈরতন্ত্রের পক্ষেই অবস্থান নিচ্ছেন।বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।সংগঠনের সভাপতি মুক্তার আকন্দের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রফিক, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকন, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির প্রমুখ।সরকারের প্রতি বিএনপির সমর্থন আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি প্রায় ১৬টি বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে। যারা আজকে স্বৈরতন্ত্রের পতনে বিএনপির ভূমিকাকে খাটো করে দেখছেন, তাদের বলব বিএনপি যখন আন্দোলন শুরু করেছিল, যাদের বয়স এখন ২৬ থেকে ২৮ এর মধ্যে, তারা তখন শিশু ছিল। হিসাব করলে দেখা যাবে, তাদের ভাতও মায়েরা খাইয়ে দিতেন। কিন্তু তারা যখন ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে অস্বীকার করছেন, তখন বুঝতেই হবে, এরা অহঙ্কারী হয়ে পড়েছে।প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন করে ছাত্র প্রতিনিধি রেখেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটা ছেলে প্রতিনিধি হিসেবে পুলিশ নিয়ে গুলশানের একটি বাড়ি থেকে ৫০ লাখের ১০ লাখ টাকা নিয়ে এসেছে। যখন আরও ৪০ লাখ টাকা আনতে গেছিল, তখন সে ধরা পড়ে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যবহার করে, পুলিশকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজি হচ্ছে, এটা তো আপনি জানেন। এই যে আপনি ছাত্রদেরকে আপনার মুরুব্বি বানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ বানিয়েছেন, শিক্ষা ব্যবস্থা আপনি ধ্বংস করে ফেলেছেন, এর একটু দায় আপনারও নেওয়া উচিত।তিনি আরও বলেন, আমরা আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) সমালোচনা করি, আপনি যাতে একটি ভালো নির্বাচন দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের উত্তরণে সহায়তা করেন। না হলে অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে। সে জন্য যেকোনোভাবে, যেকোনো উপায়ে আপনাকে ডিসেম্বর টু ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনসম্পন্ন করতে হবে, আর তা যদি সম্ভব না হয়, বাংলাদেশে কোনো স্বৈরতন্ত্র কিন্তু ভালো নির্বাচন ছাড়া রেহাই পায়নি। এখনো পর্যন্ত আপনার পথ খোলা আছে। আপনি ভালো নির্বাচন দেবেন, এটা জাতি প্রত্যাশা করে, আমরাও প্রত্যাশা করি।চাঁদাবাজদের উদ্দেশ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, যারা চাঁদাবাজি করছেন, দল গঠন করছেন এবং বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলছেন, তাদের আমি বলব, এই সময় সময় না, আরও সময় আছে। আপনাদের পরিণতি কী হবে, সেটা যদি না ভাবেন, তাহলে ভুল হয়ে যাবে। এটা একবার মাথার মধ্যে নেন। এখন আপনাদেরকে ব্যবহার করে যারা উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য এবং ক্ষমতা ব্যবহার করছেন, তারা কিন্তু আপনাদেরকে সেই সময়ে সহায়তা করবে না, এটাই বাস্তব।ভোরের আকাশ/আআ