ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৪:১৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের সাবেক চিফ হুইফ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পিআর নামে দেশের জনবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন জামায়াত ইসলামী। আমি বলতে চাই, সব ষড়যন্ত্র পরিহার করে বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচনে আসুন।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষক পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ৪৭ সালে আপনারা পাকিস্তান বিরোধী ছিলেন। ৭১ সালে আপনারা বাংলাদেশ বিরোধী ছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানের পর আপনাদের নেতা ডা. শফিকুর রহমান এক বক্তব্যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আপনারা সর্বদা স্ববিরোধী কাজে লিপ্ত থাকেন ভাল। অতীতের ইতিহাসের জন্য দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়াপারসনের এই উপদেষ্টা।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, দয়া করে আস্তে আস্তে রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেন। জনগণের কাছে ক্ষমা চান। অতীতের ইতিহাসে দোষত্রুটি থাকলে ক্ষমা চেয়ে আসেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনাদের রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। একদল গণভোট না হলে নির্বাচনে যাবে না, আরেকদল পিআর না হলে নির্বাচনে যাবে না, অথচ তারা ৩০০ আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। মসজিদে মসজিদে প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে, ঘরে ঘরে প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে যে, বেহেশতে নিয়ে যাব যদি দাঁড়িপাল্লায় ভোট দাও।
তিনি বলেন, শুধু শেখ হাসিনা নয়, শেখ মুজিবের অধীনেও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। দিল্লির প্ররোচনায় বাংলাদেশের কিছু লোক যদি আবারও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে এই ইউনূস সরকারের নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করে, তাহলে জনগণ প্রতিহত করবে।
নির্বাচনকে ঘিরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য আবার নানা পদ্ধতি, নানা কায়দা, নানা মব সৃষ্টি করছে একটা পক্ষ। জাতীয়তাবাদী দলের সব পর্যায়ের নেতাকে আহ্বান জানাব, ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি, (চক্রান্তকারী) এখনো দিল্লিতে বসে আছে (ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে)।
ফারুক বলেন, যেই দিল্লি স্বাধীনতার সহায়তার নামে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ বাংলাদেশ থেকে লুট করে নিয়েছে, সেই দিল্লির প্ররোচনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে যদি কেউ প্রফেসর ইউনূসের অধীনে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করে, জনগণ তা প্রতিহত করবে।
নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে ফারুক বলেন, এমন একটি নির্বাচন দিন যেখানে জনগণ তার নিজের ভোট নিজে দিতে পারবে এবং দিনের ভোট দিনে দিতে পারবে।
ফারুক বলেন, বাংলাদেশের জনগণ জানে যে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং শহীদ জিয়াউর রহমানের দল যখনই ক্ষমতায় ছিল, জনগণের সঙ্গে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করেনি।
তারেক রহমানের আত্মত্যাগ এবং জনগণের প্রতি তার সহানুভূতি প্রমাণ হবে যদি অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারে। বাংলাদেশের জনগণের দল হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার জন্য ১৬ বছর ধরে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। মানুষের হৃদয় থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছতে পারেনি। পাথর মেরে ছবি ভেঙে ফেলা যায়, কিন্তু হৃদয় থেকে নাম মুছে ফেলা যায় না।
বিএনপি চেয়াপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, এ দেশের জনগণ জানে, শহীদ জিয়ার দল যতবারই ক্ষমতায় গিয়েছে, জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। তারেক রহমানের যে আত্মত্যাগ, ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট যদি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারে, তাহলে তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।
সভায় তাঁতী দল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষক পরিষদের সভাপতি শেখ শামীম হাসান অনিক, সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/মো.আ.