নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৫ ০১:০৬ এএম
বন্যা মোকাবিলায় ঘাটতি ৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার: ডব্লিউএফপি
টানা বৃষ্টিপাতে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া বন্যা পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষিতে জরুরি সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৫ সালে জলবায়ুজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৫ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ ঘাটতি রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ঢাকায় ডব্লিউএফপির কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারের অনুরোধে ২৯ মে কক্সবাজারের টেকনাফে বন্যার পূর্বাভাস জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংস্থাটি আগাম সহায়তা কার্যক্রম শুরু করে। এর আওতায় সাড়ে ছয় হাজার পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
সহায়তা পাওয়া টেকনাফের বাসিন্দা নুরুল বেগম বলেন,“আগের বন্যাগুলোতে কোনো আর্থিক সহায়তা পাইনি। এবার এই টাকা দিয়ে সন্তানদের খাবার কিনতে, ঘর মেরামত করতে পারছি। ভবিষ্যতের জন্যও কিছু জমানো যাবে। ডব্লিউএফপিকে ধন্যবাদ জানাই।”
ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেলি বলেন,“জলবায়ুজনিত দুর্যোগ দারিদ্র্যপীড়িত ও খাদ্য নিরাপত্তাহীন জনগোষ্ঠীর ওপরই সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। আগাম পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এসব পরিবার ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে কিছুটা হলেও প্রস্তুতি নিতে পেরেছে।”
ডব্লিউএফপি ২০২৫ সালের জন্য চার ধাপের জরুরি প্রস্তুতি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এগুলো হলো:আগাম প্রস্তুতি, দুর্যোগ-পরবর্তী খাদ্য সহায়তা,সরাসরি আর্থিক সহায়তা,নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজের সুযোগ।
এই পরিকল্পনার আওতায় ৬০ লাখ দুর্যোগপ্রবণ মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই বিশাল কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় তহবিল এখনো অনুদানদাতাদের প্রতিশ্রুতির অপেক্ষায় রয়েছে।
ডম স্ক্যালপেলি বলেন,“সময় ও সম্পদ—দুটিই সীমিত। তাই দ্রুত এবং বৃহৎ পরিসরে সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা আমাদের অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা এগিয়ে আসে।”
ডব্লিউএফপির উদ্যোগটি বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের আগাম প্রস্তুতির বৃহত্তর কাঠামোর অংশ। জাতিসংঘ ও এনজিওসমূহ ২০২৪ সালে ১৫টি আগাম প্রস্তুতি কাঠামো চালু করে, যা ২০২৫ সালে ৪৬-এ উন্নীত হওয়ার কথা রয়েছে। এসব উদ্যোগ ভূমিধস, খরা ও তাপপ্রবাহের মতো জলবায়ু দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।
এই কার্যক্রমে অর্থায়ন করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়ামসহ একাধিক আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা।
এদিকে, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতেও বন্যা ও ভূমিধসের ক্ষয়ক্ষতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, অন্তত ৩৩টি শিবির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তাদের জন্য সংস্থাটি পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট ও গরম খাবার সরবরাহ করছে। স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় ব্যবহৃত ভিটামিনযুক্ত পুষ্টি বিস্কুটের ঘাটতি মেটাতে অতিরিক্ত ২০ লাখ ডলারের জরুরি তহবিল প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
ভোরের আকাশ/হ.র