অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৫ ০৫:৪১ এএম
যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সম্পদ জব্দ করেছে এনসিএ
বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও আলোচিত রাজনীতিক সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যস্থিত একাধিক সম্পত্তি জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী ইউনিট।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে এনসিএ এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বাংলাদেশে মানি লন্ডারিং (অর্থপাচার) মামলায় তদন্তাধীন রয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
এক বিবৃতিতে এনসিএ জানিয়েছে, একটি চলমান বেসামরিক তদন্তের অংশ হিসেবে চৌধুরীর বেশ কয়েকটি সম্পত্তি ফ্রিজ (অর্থাৎ বিক্রি বা হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা) করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তিনি সেসব সম্পদ আর বিক্রি করতে পারবেন না।
এই পদক্ষেপের সময় বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস লন্ডনে অবস্থান করছিলেন।
আল জাজিরার তথ্যমতে, যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন সম্পত্তির সংখ্যা ৩৫০টিরও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে লন্ডনের অভিজাত সেন্ট জনস উড এলাকায় একটি বিলাসবহুল বাসভবন, যার মূল্য প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড (প্রায় ১৪.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের সম্পদের বিবরণ তুলে ধরেন এবং দামি ব্র্যান্ডের পোশাক ও জুতার প্রতি আগ্রহের কথা জানান।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি শেখ হাসিনার ছেলের মতো। তিনি জানেন আমি এখানে ব্যবসা করি।”
চট্টগ্রামের একটি প্রভাবশালী পরিবার থেকে উঠে আসা চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে তিনি বাংলাদেশি আইনে বৈদেশিক লেনদেন সীমা বার্ষিক ১২ হাজার ডলারের মধ্যে থেকে ৫০ কোটি ডলারের বেশি সম্পদ বিদেশে গড়ে তুলেছেন। তার লন্ডন, দুবাই ও নিউ ইয়র্কে থাকা এসব সম্পদের কোনো ঘোষণা তিনি কর ফাইলেও দেননি।
২০২৪ সালের অক্টোবরে আল জাজিরার প্রচারিত ‘The Minister’s Millions’ নামক এক ডকুমেন্টারিতে এসব তথ্য উঠে আসে।
এর আগে ২০২৪ সালের আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নে ছাত্র আন্দোলনে শত শত মানুষের মৃত্যু ও পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর, নতুন প্রশাসন তার সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে।
এমন সময়েই আল জাজিরার ক্যামেরায় ধরা পড়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিলাসবহুল জীবনযাপন, যেখানে তাকে লন্ডনের অভিজাত এলাকায় অবসর সময়ে হাঁটতে দেখা যায় – সেই এলাকাতেই রয়েছে বিখ্যাত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড।
অন্যদিকে, চৌধুরী দাবি করেছেন, তার সব সম্পত্তি বৈধ ব্যবসা থেকেই অর্জিত এবং তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার।
ভোরের আকাশ।।হ.র