বিশ্ব রক্তদাতা দিবস আজ
ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৫ ০৮:৪৭ এএম
ফাইল ছবি
রক্তদান একটি মহৎসেবা। কিন্তু অনিরাপদ রক্তই আবার মানুষের অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসকরা বলছেন, অনিরাপদ রক্ত গ্রহণের কারণে একজনের জটিল রোগ আরেকজনের শরীরে সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। দেশের শতকরা ৮১ ভাগ রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র অনুমোদনহীন। রক্ত সংগ্রহের সময় বাধ্যতামূলক পাঁচটি পরিসঞ্চালন সংক্রমণ পরীক্ষা করা হয় না শতকরা ৫০ ভাগ কেন্দ্রে। প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন অসংখ্য অনিরাপদ ও ভুয়া ব্লাড ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে সরকার। জব্দ করা হয় কয়েক হাজার অনিরাপদ রক্ত বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। আর এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ শনিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২০২৪ সালে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৪ ইউনিট রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪০ ইউনিটে এইচআইভি পজিটিভ, ৩৬ হাজার ২৯১ ইউনিটে হেপাটাইটিস বি পজিটিভ, ৪ হাজার ৭০৬ ইউনিটে হেপাটাইটিস সি পজিটিভ, ৩ হাজার ৯৫০ ইউনিটে সিফিলিস ও ১ হাজার ৩৪৪ ইউনিট রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু ধরা পড়ে। তবে বেসরকারী হিসাবে দূষিত রক্তের পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, বর্তমান সরকার চিকিৎসার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। রক্ত দান একটি মহৎ সেবা। রক্তের প্রয়োজনে জীবাণুমুক্ত নিরাপদ রক্তই রোগীকে নতুন জীবন দিতে পারে। নিরাপদ রক্ত মুমূর্ষু রোগীকে দিবে নবজীবন। তবে রক্ত যেমন একদিকে জীবন রক্ষা করে, অন্যদিকে অনিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনে এইডস, হেপাটাইটিস-সি, হেপাটাইটিস-বি সিফিলিস, ম্যালেরিয়া ছড়ায়। এসব জটিল রোগ থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে পেশাদার রক্তদাতা থেকে রক্ত গ্রহণে বিরত থাকা এবং স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের থেকে রক্ত গ্রহণ করা। সারা বিশ্বে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন গড়ে তোলা দরকার।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, প্রতি চার মাস অন্তর একজন সুস্থ ব্যক্তি রক্ত দান করতে পারে। স্বেচ্ছায় রক্তদান সর্বোত্তম সেবা। স্বেচ্ছায় রক্তদান করলে বারডেমের পক্ষ থেকে একটি কোটপিন দেওয়া হয়। আর দেওয়া হয় ভল্যুন্টারি ডোনার কার্ড, যা রক্ত দানের ছয় মাস পর থেকে যে কোন রক্তের প্রয়োজনে সম্পূর্ণ নিবামূল্যে আপনার প্রেরণকৃত ডোনারের জন্য সেবা প্রদানে বাধ্য থাকে।
তিনি বলেন, রক্তদানের আগে ডোনারদের অ্যালকোহল পান বা ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। রক্তদানের আধ ঘণ্টা পূর্বে চা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। খাবার গ্রহণ করে আসতে হবে। সুস্থ ব্যক্তি আদর্শ রক্তদাতা। ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেশার, হাঁপানি, জ্বর, ইত্যাদি থাকলে রক্ত দান থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রক্তদানের পর ডোনারকে তরল জাতীয় খাবার (যেমন জুস) গ্রহণ করা দরকার। প্রচুর (প্রায় তিন লিটার) পানি-পানীয় পান করা উচিত। নিতে হবে বিশ্রাম। ভারী কাজ, গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে। আর দুধ জাতীয় খাদ্য রক্ত দানের এক ঘণ্টা পর খেতে পারেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ