নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৫ ১০:০৯ এএম
স্থলপথে বাংলাদেশি পণ্যে ভারতীয় নিষেধাজ্ঞা, রপ্তানিতে ধাক্কা
ভারত স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়েছে, এখন থেকে শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করেই পোশাক আমদানি করা যাবে।
এছাড়া ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস) ও ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও প্লাস্টিক পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী শুল্কস্টেশনেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
তবে ভারতের বন্দর ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না।
বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের আশঙ্কা, এ সিদ্ধান্ত দেশের রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতকে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার বড় একটি অংশ তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য। এছাড়া প্লাস্টিক সামগ্রী ও আসবাব রপ্তানিও হয় ভারতীয় বাজারে।
তবে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল ও ভাঙা পাথর।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (মার্কেটিং) কামরুজ্জামান কামাল জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রায় সব স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারতের বাজারে কনফেকশনারি, পানীয় ও প্লাস্টিক সামগ্রী রপ্তানি করি। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে আমাদের রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের বাধা আসবে।’
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (CBIC) ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এর ফলে কলকাতা ও নবসেবা বন্দর এবং কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির সুযোগ আর থাকছে না।
বাংলাদেশও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গত ১৫ এপ্রিল ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা উভয় পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং ভারতের সঙ্গে আলোচনা করব।’
তিনি আরও জানান, রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি নিয়ে আলাদা বৈঠকও করতে পারেন।
ভোরের আকাশ//হ.র