অনলাইন জুয়া: ১ হাজারের বেশি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বন্ধের উদ্যোগ
দেশে অনলাইন জুয়া কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ১ হাজারের বেশি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে সাইবার স্পেসে জুয়া বন্ধে এক বড় ধরনের অভিযান শুরু করা হয়েছে।
রোববার (২৫ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি জানান, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সদ্য জারি করা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর ২০ ধারা অনুযায়ী সাইবার জুয়া-সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অধ্যাদেশের ২০ ধারা অনুযায়ী, জুয়া খেলা, তার জন্য অ্যাপ/পোর্টাল/ডিভাইস তৈরি বা পরিচালনা, খেলার প্রচার বা সহায়তা প্রদান, এবং বিজ্ঞাপন প্রচারণায় অংশগ্রহণও আইন লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া অধ্যাদেশের ২১ ও ২২ ধারায় জুয়া-সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন, প্রতারণা ও জালিয়াতিও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও জানান, সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১ হাজার ১০০ জনের বেশি জুয়া এজেন্ট চিহ্নিত হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
এছাড়া, যারা জুয়া প্রচারে জড়িত, সেলিব্রিটি, পেশাজীবী, বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া কোম্পানি, এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সত্ত্বার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
অপারেটর, সফটওয়্যার ও টুলিং কোম্পানি, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এজেন্ট, ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন এবং হুন্ডি মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি পরামর্শ অনুযায়ী, জুয়া-সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা অভিযোগ notify@ncsa.gov.bd ঠিকানায় পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের জন্য ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। যেসব যাত্রী আগামী ৫ জুন ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) সকাল ৮টায় অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়।এবার শুধু ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর মোট আসন সংখ্যা থাকছে ৩৩ হাজার ৩১৫টি। ঈদ উপলক্ষ্যে রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে এ তথ্য জানা যায়।কর্মপরিকল্পনার তথ্যমতে, ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ৩১ মের আসন বিক্রি হয়েছে ২১ মে, ১ জুনের আসন বিক্রি হয়েছে ২২ মে, ২ জুনের আসন বিক্রি হয়েছে ২৩ মে, ৩ জুনের আসন বিক্রি হয়েছে ২৪ মে, ৪ জুনের আসন বিক্রি হয়েছে ২৫ মে এবং ৬ জুনের আসন বিক্রি হবে ২৭ মে।রেলওয়ে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঈদের আগে ৭ দিনের ট্রেনের আসনের টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করবে। এ সময় কেনা টিকিটগুলো যাত্রীরা রেলওয়েকে ফেরত দিতে পারবেন না। প্রতিজন টিকিটপ্রত্যাশী ৪টি আসনের টিকিট একবার একসঙ্গে সংগ্রহ করতে পারবেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সরকারি হাসপাতালের বিনামূল্যের চিকিৎসাসেবা হয়ে উঠছে ব্যয়বহুল! অনেক সময় পার্থক্য থাকছে না সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাব্যয়ের মধ্যে। এমন অভিযোগ তুলেছেন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের অভিভাবকেরা। তারা অভিযোগ করেন, কাগজে-কলমে সরকারি হাসপাতালে নামমাত্র চিকিৎসা ফি নেয়া হয়ে থাকে, যা সকলের জন্য সহনীয়। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীদের অবৈধ আবদার মেটাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় দরিদ্র রোগী ও তাদের স্বজনদের। চিকিৎসাসেবা গ্রহণের প্রতি পদে দেয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টাকার সমষ্টি হাসপাতাল থেকে বিদায়বেলার হিসেবে হয়ে উঠে পাহাড়সম। মধ্যস্বত্বভোগীদের অনিয়ম ও রোগীদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করার কারণেই সরকারি হাসপাতালের বিনামূল্যের চিকিৎসাসেবার সুনাম হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের। মধ্যস্বত্বভোগীদের তালিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী, আয়া, ট্রলিম্যান, ওয়ার্ড বয়সহ অনেকেই রয়েছে।সরেজমিন ঘুরে আরও দেখা গেছে, শুধু বেসরকারি নয়; সরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন রোগীরা। জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে হার্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের দরিদ্র আবুল কালাম (৪৯)। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনটি রিং বসানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লাখ খরচ হবে বলে তারা রোগীর লোকজনকে জানিয়ে দেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের পেছনে সাত দিনে তার চিকিৎসা খরচ ১৫ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। রিং বসানোর টাকা না থাকায় শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে হাসপাতাল ত্যাগ করেন আবুল কালাম।তিনি ভোরের আকাশকে বলেন, রিং বসানোর খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, হাসপাতালে ফ্রি রিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে পরিচালকের বিশেষ অনুমতি লাগে। সব রোগীর কপালে জোটে না। টাকা ও তদবির লাগে। তিনি আরও জানান, একেকজন রোগীর হার্টের রিং বসাতে কিংবা ওপেন হার্ট সার্জারিতে ব্যয় হয় ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। এর আগে এনজিওগ্রাম পরীক্ষায় খরচ হয় ৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ওষুধ ৩ হাজার এবং পরীক্ষা ফি ২ হাজার টাকা। পরীক্ষা ফি মওকুফের সুযোগ থাকলেও দেখানো হয় অনেক নিয়ম-কানুন। ফলে বিরক্ত হয়ে বেশিরভাগ রোগীই ফ্রি রিংয়ের জন্য আবেদন করেন না বলে জানান আবুল কালাম।ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত সাজেদা বেগম (৪৫) ভর্তি হন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন থাকার পর কেমো ও রেডিওথেরাপির প্যাকেজ নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি। এই দু’ধরনের থেরাপির পেছনে তার কাছ থেকে নেয়া হয় প্রায় এক লাখ টাকা। শেষ পর্যন্ত তিনি মারা যান। সড়ক দুর্ঘটনায় পা মারাত্মক আহত হয়ে একই হাসপাতালে ভর্তি হন ময়মনসিংহের ভালুকা থানার মল্লিকবাড়ী গ্রামের ইসমাইল হোসেন (৩৮)।বিশ দিন হাসপাতালে থাকার পর হাসপাতাল থেকে যখন ছাড়া পেলেন, তত দিনে তার পরিবারের খরচের পরিমাণ দাঁড়ায় দেড় লাখ টাকা। অথচ সরকারি হাসপাতাল হিসেবে এখানে ফ্রি চিকিৎসা পাওয়ার কথা তার। কিন্তু বাস্তব ঘটনা হলো, হাসপাতালের চিকিৎসার টাকা জোগান দিতে গিয়ে আক্ষরিক অর্থেই জমিজমা বিক্রি করতে হলো রোগীর পরিবারকে!রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিভাগে ভর্তি এক রোগীর জরায়ুর একটি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন ছিল। ওষুধ এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ মিলিয়ে খরচ হলো আট হাজার টাকা! একই হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এক তরুণকে ৫টি আইভি স্যালাইন দিতে হয়েছিল।তিনটি স্যালাইন দেওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হবে। শুধু স্যালাইন নয়, কিনতে হয়েছিল জরুরি কিছু ওষুধপত্রও। মো. বুলবুলের (৩৪) দুটি ভাল্বই নষ্ট। রাজধানীর শেরেবাংলানগর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অপারেশনের জন্য ভাল্ব ও অক্সিজেনেটর যন্ত্র ওই হাসপাতালে বরাদ্দ থাকলেও ২৫ হাজার টাকায় কিনতে হয় তাকে। এগুলো ছাড়াও ওষুধ কিনতে লাগে আরও ৩০ হাজার টাকা। পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ তো হিসাবের বাইরে রয়ে গেছে। সব মিলিয়ে তার প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। জীবন বাঁচাতে মাসে শতকরা ২০ টাকা সুদে টাকা নিয়ে এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন দরিদ্র মো. বুলবুল।সড়ক দুর্ঘটনায় কোমরের নিচে দুই পার্শ্বের হাড় ভেঙে যায় ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থানাধীন বণিক্যপাড়া গ্রামের সুজিত রিছিলের (১৭)। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে থাকতে হয়েছে প্রায় ১৫ দিন। তিনি ভোরের আকাশকে জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সার্জারি করে স্ক্রু লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। বাইরে থেকে কিনতে হবে স্ক্রুসহ প্রয়োজনীয় মেডিকেল উপকরণ। এক উপকরণ সরবরাহকারী ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। চুক্তি হয় ৪০ হাজার টাকা। সার্জারি ফি লাগেনি, কিন্তু বারবার চাইলেও ওই ৪০ হাজার টাকা রশিদ পাওয়া যায়নি।সুজিত রিছিল আরও জানান, ওই ১৫ দিনে প্রতিদিনই একাধিকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনে হাসপাতালের ভেতরে এক জায়গায় থেকে আরেক জায়গায় যেতে হয়েছে। এসব মুহূর্তে ট্রলিম্যান, লাইনম্যান ও আয়াদের দেওয়া টাকার পরিমাণই সাত হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। একবার ট্রলিতে উঠলেই ন্যূনতম ২০০ টাকা দিতে হয়েছে বলে জানান সুজিত রিছিল।এভাবে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিনামূল্যের চিকিৎসায় ফি দিতে হয় সরকারি হাসপাতালে। জরুরি বিভাগ থেকে রোগীশয্যা পর্যন্ত পৌঁছার চিকিৎসা ব্যয় (ট্রলিম্যান ও শয্যা যোগানদাতা) লিখিত থাকে না। শয্যায় ওঠার পর চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার খেলা। প্রকৃতপক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রেও ফ্রি নেয়। ইউজার ফি আদায়ের নামে এখানে রোগীদের ফি প্রদানে বাধ্য করা হয়েছে। অনেক পরীক্ষা বাইরে গিয়ে করাতে হয়। রোগীকে এক জায়গা থেকে আরেকটি জায়গায় নেয়ার প্রতিবারই ট্রলিম্যানকে টাকা দিতে হয়। ওয়ার্ডবয় ও আয়াদের খুশি না করলে রোগী শয্যা ধরে রাখাটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।উচ্চমূল্যের ওষুধ এবং চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে লেখা কোম্পানির ওষুধ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পাওয়া না গেলেই রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়। শুধু চিকিৎসককে এবং রোগীর খাবারের ক্ষেত্রে কোন টাকা দিতে হয় না। তবে চুক্তিবদ্ধ বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষার জন্য রোগী পাঠিয়ে সরকারী হাসপাতালে ফ্রি রোগী দেখার টাকা উঠিয়ে নেন অনেক চিকিৎসক। আর বাইরে পরীক্ষা করানো মানেই বড় অংকের টাকা।অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই ফ্রি বেড বলে কিছু নেই। টাকা ও তদবির না হলে ফ্রি বেড পাওয়া যায় না। সার্জারি ও আইসিইউ রোগী হলে তো খরচের শেষ নেই। আর সার্জারি রোগীকে ওষুধ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের মেডিকেল উপকরণ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক বা চিকিৎসক টিম তাদের পরিচিত উপকরণ সরবরাহকারী ব্যবসায়ীকে রোগীর লোকদের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করে দেন।চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওই ব্যবসায়ী রোগীর লোকদের সঙ্গে উপকরণ সরবরাহের চুক্তি করেন। সব টাকা যায় রোগীর পকেট থেকে। এভাবে পদে পদে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ খরচ মেটাতে গিয়ে সরকারি ফ্রি চিকিৎসা যেন সাধারণ মানুষের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে! সরকারি স্বাস্থ্যসেবার একটি বড় অংশই জনগণকে বহন করতে হচ্ছে। আর দালালদের মাধ্যমে অর্থ লুট ও সীমাহীন হয়রানি সরকারি হাসপাতালের স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সরকারি হাসপাতালে নামমাত্র খরচে চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায় দাবি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, অপারেশন, সিসিইউ, আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস সেবার ক্ষেত্রে কোন টাকা নেয়া যাবে না। তবে বেশকিছু পরীক্ষা করাতে স্বল্প ফি নেয়া হয়। এক্ষেত্রেও সরকারি ফি বেসরকারি হাসপাতালের ফির তুলনায় অনেকগুণ কম। সরকারি হাসপাতালে করোনারি এনজিওগ্রামে ২ হাজার টাকা, সিটিস্ক্যানে ২ হাজার টাকা, এমআরআই ৩ হাজার টাকা, ইসিজি ৮০ টাকা, ইকোকার্ডিওগ্রাম ২০০ টাকা, এক্স-রে ২০০ টাকা, আল্ট্রাসনোগ্রাম ৩০০ টাকা, কার্ডিয়াক ক্যাথ ২ হাজার টাকা, ইউরিন ৩০ টাকা এবং রক্তের হিমোগ্লোবিন, টোটাল কাউন্ট করাতে লাগে মাত্র ১০০ টাকা।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, সরকারি হাসপাতালে রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ ও তিনবেলা খাবার প্রদান করা হয়ে থাকে। মেডিকেল পরীক্ষার ক্ষেত্রে নামমাত্র ফি ধার্য করা রয়েছে। চিকিৎসা ফি জমাদানে রয়েছে রশিদ ব্যবস্থা। তাই বাড়তি টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর বাইরে অলিখিতভাবে রোগীর কাছ থেকে কোনো চক্রের টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে বলে জানান মহাপরিচালক।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ ব্যয় সরকার বহন করে থাকে। সরকারি হাসপাতালে ৭০ শতাংশ বেড বিনামূল্যের এবং ৩০ শতাংশ বেডের জন্য সামান্য ভাড়া নির্ধারিত আছে। এছাড়া রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রোগীকে স্বল্প পরিমাণ ইউজার ফি বহন করতে হয়। ভাড়ায় বেডে থেকে এবং ইউজার ফি প্রদানের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা নিলেও কোন রোগীর মোট খরচের ১৫ শতাংশের বেশি ব্যয় হওয়ার কথা নয়। সরকারি হাসপাতালে একজন রোগীর আউটডোরে চিকিৎসা নিতে খরচ হয় ১০ টাকা আর ভর্তি হতে ১৫ টাকা। ভর্তির পর থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসার সব ব্যয় সরকারই বহন করে থকে।সব হাসপাতালে ওষুধ ও অন্য সামগ্রী বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। জীবনরক্ষাকারী সব ওষুধ সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রসমূহের ওষুধের চাহিদা এবং সে অনুযায়ী ওষুধের সরবরাহ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাবর ওষুধের তালিকা ও বাজেট পেশ করেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহের কর্মকর্তারা। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ওষুধসমূহ ক্রয় করে থাকেন। জীবনরক্ষাকারী কোনো ওষুধ যাতে বাদ না পড়ে সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি এবার প্রশাসনেও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই চলছে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাগাতার বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। কর্মবিরতি। এতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে প্রশাসনের স্বাভাবিক কাজ কর্ম। গতকাল সচিবালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। এনবিআর ছিল সারা দিনকার্যত আচল। যদিও শেষ সময়ে তারা আন্দোলন স্থগিত করেছে। নগর ভবনে ঝুলেছে তালা। সব মিলে অস্থিরতার চিত্র ছিল সবখানে। প্রাথমিক শিক্ষকরাও মাঠে ছিল তাদের দাবি নিয়ে। শহীদ মিনারে চলছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীদের লাগাতার অবস্থান। সব মিলে চরম এক অস্থির সময় পার করছে দেশের প্রশাসনিক ইউনিটগুলো। গতকাল ভিন্ন ভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে বিক্ষোভ ও আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়েছে।এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সামনে গতকাল রোববারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ইশরাকের সমর্থকরা। তাদের সঙ্গে যোগদেন করপোরেশনের বড় একটি অংশের কর্মচারীরা। এই কর্মসূচির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এসব জায়গায় স্বাভাবিক কাজকর্ম বাধাগ্রস্ত হয়েছে।সচিবালয়ে বিক্ষোভসরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ বাতিলের দাবিতে প্রশাসন এখন উত্তাল। গতকাল সকাল থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মিছিল-স্লোগানে উত্তাল ছিল প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়। ভিন্ন ভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে গতকাল প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে বিক্ষোভ ও আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়েছে।জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দেওয়ার মাধ্যমে গৃহীত কর সংস্কার অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে দেশের সব অঞ্চলে কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তারা। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজস্ব কার্যক্রম। একই সময়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সামনে গতকাল রোববারও চলে অবস্থান কর্মসূচি।বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে বেলা ১১টা থেকে সেখানে অবস্থান নেন তার সমর্থক ও করপোরেশনের বড় একটি অংশের কর্মচারীরা। এই কর্মসূচির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এসব জায়গায় স্বাভাবিক কাজকর্ম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।সচিবালয়ে বড় বিক্ষোভ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদনের প্রতিবাদে সচিবালয়ের ভেতরে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। তাঁরা এই অনুমোদিত খসড়াটিকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলন হচ্ছে।গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, সাড়ে চার দশক আগের বিশেষ বিধানের কিছু ‘নিবর্তনমূলক ধারা’ সংযোজন করে অধ্যাদেশের খসড়াটি করা হয়েছে। অধ্যাদেশের খসড়ায় শৃঙ্খলা বিঘ্ন, কর্তব্য সম্পাদনে বাধা, ছুটি ছাড়া কর্মে অনুপস্থিত, কর্তব্য পালন না করার জন্য আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যাপ্ত সুযোগ না দিয়ে চাকরিচ্যুতির বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সহজেই শাস্তি, এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। অধ্যাদেশের খসড়াটিকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আখ্যায়িত করে তা পুনর্বিবেচনারও দাবি করছেন কর্মচারীরা।গতকাল সকালে সচিবালয়ে দেখা যায়, শত শত কর্মচারী দপ্তর ছেড়ে মিছিলে যোগ দেন। মিছিল থেকে ‘অবৈধ কালো আইন মানব না’, ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’ ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি সচিবালয়ের ভেতরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রদক্ষিণ করে। একপর্যায়ে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে সমাবেশ করেন কর্মচারীরা। সেখানে দাবি পূরণ না হলে আজ সোমবার সচিবালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।এ সময় কয়েকজন নেতা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর সেখান থেকে মিছিল নিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের দপ্তরে যান। অবশ্য তখন তিনি দপ্তরে ছিলেন না। এরপর সেখান থেকে বের হয়ে তাঁরা সচিবালয়ে মূল ফটকের কাছে যান। এ সময় কিছুক্ষণের জন্য ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়।সেখানে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর অনুমোদিত অধ্যাদেশের খসড়াকে কালাকানুন আখ্যায়িত করে বলেন, এটি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। দুপুরে তিনি এই ঘোষণা দেন। এরপর সচিবালয় চত্বরে বাদামতলায় অবস্থান নেন কর্মচারীরা। পরে অবশ্য উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কর্মচারী নেতারা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান তাঁদের বলেছেন দাবির বিষয়টি তিনি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরবেন। এ রকম পরিস্থিতিতে একজন কর্মচারী নেতা বলেন আজ সোমবার সচিবালয়ের ফটকগুলোর কাছে অবস্থান নেবেন কর্মচারীরা। এ সময় কাউকে ঢুকতে এবং বের হতে দেওয়া হবে না।সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ের ভেতরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে আন্দোলন-বিক্ষোভে নেমেছেন, সে বিষয়ে আলোচনা করে কোনো একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।তিনি বলেছেন, সরকার ‘প্রয়োজন মনে করেছে’ বলেই ফের এই আইনটি সংশোধন করা হয়েছে।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকে ম্যানুপুলেট করার জন্য ২০১৮ সালে সরকারি কর্মচারী আইনকে সংশোধন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এখন সরকার প্রয়োজন মনে করছে বলে পুনরায় এই আইনের সংশোধন করছে। তবে, কর্মচারীদের এই বিষয়ে কিছু বলার থাকলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।অচল এনবিআর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে কর্মবিরতি কর্মসূচি চলছে। বেশির ভাগ শুল্ক-কর কর্মকর্তা-কর্মচারী এনবিআরের নিচতলায় প্রধান ফটকের পাশেই অবস্থান নেন। এতে বন্ধ রয়েছে প্রবেশের প্রধান দুই ফটক।গতকাল সকাল ৯টা থেকে এ পরিস্থিতি চলছে। এ কারণে এনবিআরের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ আছে। কয়েক দিন ধরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ আন্দোলন চলছে। এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর পর থেকে এর প্রতিবাদ করে আসছেন রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল নয়টার পর থেকেই কর্মকর্তারা প্রধান ফটক ও দোতলার মিলনায়তনে অবস্থান নিয়েছেন। প্রধান ফটকে কারও কারও হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যান নিজের কার্যালয়ে আসেননি। তবে শনিবারের মতো গতকালও ভবনের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য।এদিকে প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় গাড়ি নিয়ে ঢোকা কিংবা বের হওয়া যাচ্ছে না। তাই হেঁটে কর্মকর্তারা ভবনে ঢোকেন। শনিবার বিকেলে আগামী দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। ঘোষিত কর্মসূচি হলো গতকাল রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কাস্টম হাউস এবং শুল্ক স্টেশন ব্যতীত আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলে। আজ সোমবার আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে।আজ সোমবার থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে কর্মসূচি শেষে গতকাল রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ঐক্য পরিষদের নেতারা। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপকমিশনার আব্দুল কাইয়ুম ও মিজ রইসুন নেসা।নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা বলেন, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে। অর্থাৎ সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী পণ্য এই কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে। এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে ১৩ দিন ধরে চলছে এ আন্দোলন।যে চার দাবিতে আন্দোলন- নতুন অধ্যাদেশ বাতিল, চেয়ারম্যানকে অপসারণ এবং রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া এনবিআরের প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনা করে প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার করার দাবি জানানো হয়েছে। অবশ্য শেষ সময়ে এসেছে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর এর কর্মকর্তা কর্মচারিরা। এতে কিছুটা স্বস্থি ফিরলেও অন্যসব খানে অস্থিরতা রয়েই গেছে।নগর ভবনেও অচলাবস্থা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সামনে গতকাল রোববারও চলছে অবস্থান কর্মসূচি। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে বেলা ১১টা থেকে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন তার সমর্থক ও করপোরেশনের বড় একটি অংশের কর্মচারীরা। ১৪ মে থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন মাঝে ৪৮ ঘণ্টার বিরতি দিয়ে এখনো চলছে। এতে নাগরিক সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, নগর ভবনের ফটকগুলোতে এখনো তালা ঝুলছে। ‘ঢাকাবাসী’র ব্যানারে ইশরাকের সমর্থকেরা কিছুক্ষণ পরপর নগর ভবন প্রাঙ্গণে মিছিল করছেন। মিছিল শেষ হলে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছেন।বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন বলছেন, জনতার মেয়র ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবেই। তা না হলে তাঁরা ঘরে ফিরবেন না। নগর ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলছে। ফটকে তালা থাকায় নগর ভবনের ভেতরে ঢুকতে পারছেন না সেবাপ্রত্যাশীরা। বন্ধ রয়েছে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধসহ সব নাগরিকসেবা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশে অনলাইন জুয়া কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ১ হাজারের বেশি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে সাইবার স্পেসে জুয়া বন্ধে এক বড় ধরনের অভিযান শুরু করা হয়েছে।রোববার (২৫ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।তিনি জানান, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সদ্য জারি করা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর ২০ ধারা অনুযায়ী সাইবার জুয়া-সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।অধ্যাদেশের ২০ ধারা অনুযায়ী, জুয়া খেলা, তার জন্য অ্যাপ/পোর্টাল/ডিভাইস তৈরি বা পরিচালনা, খেলার প্রচার বা সহায়তা প্রদান, এবং বিজ্ঞাপন প্রচারণায় অংশগ্রহণও আইন লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া অধ্যাদেশের ২১ ও ২২ ধারায় জুয়া-সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন, প্রতারণা ও জালিয়াতিও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও জানান, সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১ হাজার ১০০ জনের বেশি জুয়া এজেন্ট চিহ্নিত হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।এছাড়া, যারা জুয়া প্রচারে জড়িত, সেলিব্রিটি, পেশাজীবী, বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া কোম্পানি, এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সত্ত্বার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি সতর্ক করেন।অপারেটর, সফটওয়্যার ও টুলিং কোম্পানি, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এজেন্ট, ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন এবং হুন্ডি মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সরকারি পরামর্শ অনুযায়ী, জুয়া-সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা অভিযোগ notify@ncsa.gov.bd ঠিকানায় পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।ভোরের আকাশ//হ.র