এনবিআরের ৩ সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসর
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনের সঙ্গে থাকা ৪ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। তারা হলেন- এনবিআরের সদস্য (শুল্ক নীতি) হোসেন আহমদ, সদস্য (আয়কর) মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য (ভ্যাট নীতি) মো. আব্দুর রউফ ও কর কমশিনার (আয়কর) মো. শব্বির আহমদ রয়েছেন।
বুধবার (২ জুলাই) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের অবসরে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে সরকার ‘জনস্বার্থে’ তাদের সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা প্রয়োজন মনে করায় অবসর দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তুলে ধরা হয়।
এর আগে, চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সময় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ বন্ধ রাখায় সেখানকার কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে মঙ্গলবার (১ জুলাই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে সরকারের ‘নির্দেশনা অমান্য করে’ কাস্টম হাউজ বন্ধ রাখায় তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়।
এদিন আরও পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও তথ্যানুসন্ধানে নামে দুদক।
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ বিমসটেক (বঙ্গোপসাগরীয় বহুখাতভিত্তিক প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উদ্যোগ)-এর মহাসচিব ইন্দ্র মনি পান্ডের সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করেছেন। বুধবার (৮ অক্টোবর) ঢাকায় বিমসটেকের কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন জার্মানির রাষ্ট্রদূত।বিমসটেক জানিয়েছে, বিমসটেক মহাসচিব তার কার্যালয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূততে স্বাগত জানান। মহাসচিব রাষ্ট্রদূতকে বিমসটেকের কার্যপ্রণালী, উদ্দেশ্য এবং সদস্য নয় এমন অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতাসহ আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার জন্য চলমান উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন।রাষ্ট্রদূত বিমসটেকের অর্জিত অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং আঞ্চলিক সংহতি বৃদ্ধিতে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
কান্না ভেজা চোখে শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমার ছেলের দোষ কী ছিল? সে শুধু আগ্রাসনবিরোধী লেখালেখি করেছিল।’ তিনি বলেন, আবরার বলেছিল— ‘আমার রুমের আশেপাশে সবাই ছাত্রলীগের ছেলে। কেউ এলে ওরা আমাকে মারতে দেবে না।’ মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে একযোগে প্রামাণ্যচিত্র ‘ইউ ফেইলড টু কিল আবরার ফাহাদ’ প্রদর্শন করা হয়।আবেগঘন বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বলেন, সে শুধু আগ্রাসনবিরোধী লেখালেখি করেছিল। শুরুতে আমরাও জানতাম না সে এমন লিখে। পরে জানতে পেরে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তখন সে বলেছিল— ‘আমি খারাপ কিছু লিখি না, কেউ আমাকে কিছু বলবে না।’ সে আরও বলেছিল— ‘আমার রুমের আশেপাশে সবাই ছাত্রলীগের ছেলে। কেউ এলে ওরা আমাকে মারতে দেবে না।’ কিন্তু আমার ছেলে যেদিন ছুটি শেষে হলে ফিরে গেল, তার পরের দিনই ছাত্রলীগের ছেলেপেলে তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলে।তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের দোষ ছিল— সে দেশের পক্ষে লেখালেখি করেছে। দেশের ক্ষতি হচ্ছিল যেগুলোতে, সে সেগুলো তুলে ধরত। তার ফেসবুকে লিখেছিল— ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর কলকাতা বন্দর ব্যবহার না পেয়ে বাংলাদেশ গোলাপপোর্ট চালু করে, এরপর থেকেই ইলিশ কমে যায়। সে আরও লিখেছিল, পানি চুক্তিতে ভারত আমাদের সময়মতো পানি দেয় না, অথচ আমরা বিনা শর্তে দিয়েছিলাম ১ লাখ ৩৫ হাজার কিউসেক পানি। এই ধরনের স্ট্যাটাসের কারণেই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর ছেলেরা ও তার রুমমেট মিজান মিলে ওকে ‘শিবিরের ছেলে’ তকমা দেয়। এই মিথ্যা অভিযোগেই ছুটি শেষে হলে ফিরে আসার পরের দিন রাত ৮টা থেকে সারারাত নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।আবরারের বাবা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমার ছেলে খুব ভীত ছিল। যদি ওদের কেউ বলত ‘লিখবে না’— তাহলে সে কখনো হলে ফিরে যেত না। কিন্তু ওরা তার কোনো কথা শোনেনি। তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল কে কে শিবির করে, অথচ সে কোনো দলের ছিল না। যারা আমার ছেলের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, আল্লাহ তাদের বিচার করেছেন।তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমার ছেলের মামলাটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন আছে। এ বিচার যেন দ্রুত শেষ হয়।আবরারের বাবা আরও বলেন, ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ শহীদ হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এ পালন করতে গিয়ে গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের কর্মীসহ সাধারণ মানুষ অনেকেই নির্যাতন, নিপীড়ন, এমনকি জেল খেটেছেন। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর এই প্রথম সারা দেশে সবাই একসঙ্গে এ মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে— এজন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন— বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হবে। কিন্তু সেই তালিকা এখনো প্রকাশ হয়নি। আমি চাই, তালিকাটি দ্রুত তৈরি ও প্রকাশ করা হোক।শেষে তিনি বলেন, আবরার ফাহাদসহ জুলাই-আগস্টে যারা শহীদ হয়েছেন, আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক শেখ রেজাউদ্দিন আহমেদ স্ট্যালিন, নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক দীপক কুমার গোস্বামীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।অনুষ্ঠানে শহীদ আবরার ফাহাদের স্মরণে প্রামাণ্যচিত্র ‘ইউ ফেইলড টু কিল আবরার ফাহাদ’ প্রদর্শিত হয়।ভোরের আকাশ/মো.আ.
গাজা অভিমুখী ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী, লেখক ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম।বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় এ কথা জানান শহিদুল আলম নিজেই।পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমি শহীদুল আলম, বাংলাদেশের একজন আলোকচিত্রী এবং লেখক। আপনি যদি এই ভিডিওটি দেখে থাকেন, তাহলে এতক্ষণে আমাদের সমুদ্রে আটক করা হয়েছে। আমাকে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী অপহরণ করেছে। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির সক্রিয় সহযোগিতা এবং সহায়তায় গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। আমি আমার সকল কমরেড এবং বন্ধুদের কাছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।এর আগে মঙ্গলবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, বুধবার ভোর নাগাদ ‘রেড জোন’ তথা বিপজ্জনক অঞ্চলে পৌঁছে যেতে পারেন।পোস্টে রেড জোন বলতে শহিদুল আলম বুঝিয়েছেন, যেখানে ইসরায়েলি সেনারা সম্প্রতি সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে আটকে অধিকারকর্মীদের আটক করেছেন।শহিদুল আলম সেই পোস্টে লেখেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছি। কারণ ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস’ নৌবহরে থাকা ছোট ও ধীরগতির নৌযানগুলো যেন পেছনে পড়ে না যায়, তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এসব জাহাজও এফএফসির (ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন) অংশ। তবে আমরা সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের চেয়ে অনেক দ্রুত এগিয়েছি। ওই নৌবহর প্রচণ্ড বাতাস ও ঝড়ের কারণে সাময়িকভাবে থেমে গিয়েছিল।’শহিদুল আলম লিখেন, ‘ধীরগতির নৌযানগুলো (থাউজেন্ড ম্যাডলিনস) এখন আমাদের সমকাতারে এসেছে। আমরা এখন ‘রেড জোন’ থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে আছি। এটি সেই অঞ্চল যেখানে আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী অবৈধভাবে ফ্লোটিলার নৌযানগুলোকে আটক করেছিল।’ভোরের আকাশ/মো.আ.
আমাদের ভবিষ্যতের মা ও নাগরিক হিসেবে কন্যাশিশুদের নিরাপত্তা, মানসম্মত শিক্ষা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ শিশু, যাদের প্রায় অর্ধেকই কন্যাশিশু। তাই, এই কন্যাশিশুরাই আগামীর স্বপ্ন, যারা দেশ মাতৃকার কল্যাণে অকুতোভয়ে কাজ করবে, বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। বুধবার (৮ অক্টোবর) ‘জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি কন্যাশিশু-স্বপ্ন গড়ি, সাহসে লড়ি, দেশের কল্যাণে কাজ করি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী ‘জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৫’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী প্রতিপাদ্য বলে আমি মনে করি। এই দিনে আমি বাংলাদেশের সব কন্যাশিশু ও তাদের অভিভাবকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।এ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষায় জুলাই-আগস্টে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখ সারিতে ছিল আমাদের কিশোরী ও নারীরা। তারা আমাদেরকে এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সমাজে কন্যাশিশু ও ছেলে শিশুর সমতার লক্ষ্যে সরকার নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশসহ বেশ কিছু সাংবিধানিক ও কাঠামোগত সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।সবশেষে বাণীতে ড. ইউনূস ‘জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।ভোরের আকাশ/মো.আ.