নিখিল মানখিন
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫ ১০:২৫ এএম
ফাইল ছবি
দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এর মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা আরও আনুষ্ঠানিকতা লাভ করেছে। দূর হয়েছে সন্দেহ ও সংশয়। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় ভোটের মাস হিসেবে ‘ফেব্রুয়ারি’ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এবার নির্বাচনের দিনক্ষণ জানতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে দেশবাসী। মানুষের আড্ডা-আলোচনায় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে এমন প্রশ্ন- ‘কবে জানা যাবে ভোটের তারিখ’।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লন্ডন বৈঠকের পর থেকেই নির্বাচনের বিষয়ে একের পর এক উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছে সরকার। নির্বাচনী মাস ঘোষণার একদিন পরই নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইসিকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর আগে তার নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বাচনী প্রস্তুতি সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলার পরদিন থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, গত ৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। এর পর দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়, তা নিশ্চিত করাই এখন সরকারের প্রধান দায়িত্ব।’
এদিকে, চিঠি পাওয়ার আগেই গত বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছিলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকলেও আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে।’
কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘২০২৬ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে রমজান মাস শুরুর আগে’-গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস তা উল্লেখ করেছেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি রোজা শুরু হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধের মধ্যেই ভোট সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু ঠিক কত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেটি জানা যাবে কবে? নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোটের আয়োজন সম্পন্ন করার জন্য আগামী ছয় মাসে কী কী কাজ সম্পন্ন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে?
নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করতে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনকে। সাধারণত ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার অন্তত বছরখানেক আগে এই রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। কিন্তু গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এবার একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আয়োজন করতে হচ্ছে কমিশনকে। ফলে রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য খুব বেশি সময় তাদের হাতে নেই।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা এতদিন বলে আসছিল যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সরকার ভোটের ব্যাপারে চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করতে না পারায় তারা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারছেন না। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের মধ্য দিয়ে গত মঙ্গলবার সেই সংকট কেটে গেছে। তাহলে কবে ঘোষণা করা হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ?
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘নির্বাচনে অনুষ্ঠানের জন্য যেহেতু একটা সময়সীমা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেহেতু এবার আমরা আমাদের অ্যাকশনপ্ল্যান ঘোষণা করতে পারব। খুব শিগরিরই সেটি ঘোষণা করা হবে। ওই কর্মপরিকল্পনাতে কবে নাগাদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং তফসিলের আগে- পরে কী কী কাজ সম্পন্ন করা হবে, সেটি উল্লেখ করা হবে।’
নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, এক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পূর্বে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস, নতুন দল নিবন্ধন, নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুতসহ আরও কিছু বিষয় যুক্ত থাকবে বলে জানান কর্মকর্তারা। এসব বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণের পর ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল। তবে দিন-তারিখ ছাড়াও প্রার্থীরা কবে থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন, মনোনয়নের কাগজপত্র কতদিনের মধ্যে বাছাই করা হবে, কাগজ বাতিল হলে প্রার্থিতা প্রত্যাশী ব্যক্তিরা কতদিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবে- এরকম খুঁটিনাটি আরও অনেক বিষয়ে তথ্য দেওয়া থাকে তফসিলে।
এছাড়া যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন, তাদের তালিকা কবে নাগাদ ছাপানো হবে, নির্বাচনি প্রচারণা কবে থেকে শুরু করা যাবে আর কতদিন পর্যন্ত তা চালানো যাবে, নির্বাচনের দিন ক’টার সময় ভোট শুরু হয়ে কতক্ষণ চলবে, ভোট শেষে কোথায়-কীভাবে ভোট গণনা করা হবে, তফসিলে সেটিরও উল্লেখ থাকে।
নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দেড় থেকে দুই মাস আগে সেটার তফসিল ঘোষণা করা হয়ে থাকে।
অন্যান্য প্রস্তুতি কতদূর : আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস, নতুন দল নিবন্ধন, নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুত করাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।
‘এক্ষেত্রে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে,’ বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
এর আগে, চলতি বছরের শুরুতে দোসরা মার্চে ভোটারদের তালিকা প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেখানে ১২ কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি ভোটার দেখা গেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই তালিকাটি হালনাগাদ করা হয়েছে, যা প্রকাশ করা হবে আগামী ১০ আগস্ট। সেখানে কেউ কোনো অভিযান তুললে সেটি নিষ্পত্তি শেষে ৩১ আগস্টের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ।
নির্বাচন কমিশন জানায়, ভোটের আগে নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ইতোমধ্যেই তারা ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বাগেরহাট ও গাজীপুরসহ তিন ডজনেরও বেশি এলাকায় পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সীমানা নিয়ে আপত্তি থাকলে আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। এরপর শুনানি শেষে আগস্টের মধ্যেই সীমানা চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এছাড়া ইতোমধ্যে সীমানা আইন সংশোধন অধ্যাদেশ, ভোটার তালিকা সংশোধন অধ্যাদেশ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা, স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যম নীতিমালা, পর্যবেক্ষক সংস্থা নীতিমালা জারি ও আবেদন আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই করে সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে কমিশনকে। কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে প্রায় ১৪৫টি দলের নিবন্ধন আবেদন তাদের কাছে জমা পড়েছে।
এর মধ্যে তথ্য ঘাটতি চেয়ে চিঠি দেওয়ার পর ৮০টির মতো দল প্রয়োজনীয় নথি দিয়েছে। এছাড়া সময় বাড়াতে আবেদন করেছে ছয়টি দল। তফসিল ঘোষণার আগেই নতুন আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করে ভোটে অংশ নেওয়া দলের তালিকা প্রকাশ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
এর বাইরে, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ ও প্রস্তুত করা, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন, নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা, ব্যালট পেপার প্রস্তুতসহ অন্যান্য কাজও চলছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনাকাটা শেষ হবে। লোকাল পারচেজ প্রকিউরমেন্টে আটটি আইটেম ছিল। তার ভেতরে একটিতে পুনরায় দরপত্র দিতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সময়সীমা রয়েছে, তার মধ্যে পাওয়া যাবে।’
কমিশনের সামনে যত চ্যালেঞ্জ : আওয়ামী লীগের শাসনামলের গত দেড় দশকে বাংলাদেশে যে তিনটি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা হয়, সেগুলোর সবগুলোই ছিল বিতর্কিত। ওই সময় ভোট দিতে না পারার অভিযোগ তোলেন অনেক ভোটার। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।
ফলে আগামী নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা অর্জনকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন,‘ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিতি বাড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। যেন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও অনেকের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে। আমরা আয়নার মত স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’
নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও বানিয়ে দলগুলোকে নানান ধরনের প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে, যা নিয়ে অনেকের মধ্যে শঙ্কা দেখা যাচ্ছে। ভোটের আগে এ ধরনের প্রচারণা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে নির্বাচনি প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করার বিষয়টিও কমিশনের সামনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ : গত ১০ জুলাই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন রকমের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই বৈঠকের আলোচনা ও নির্দেশনার বিষয় তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
ভোরের আকাশ/এসএইচ